২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শুক্রবার (৬ জুন) সন্ধ্যা ৭টায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এ ঘোষণা দেন।
ড. ইউনূস জানান, অবাধ, সুষ্ঠু, প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে সকল পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে এবং বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনসংক্রান্ত চলমান প্রক্রিয়া পর্যালোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশন শিগগিরই নির্বাচনের বিস্তারিত রোডম্যাপ প্রকাশ করবে বলেও তিনি জানান।
তিনি বলেন, “আমরা এমন নির্বাচন চাই যা দেখে অভ্যুত্থানের শহীদদের আত্মা শান্তি পাবে। এই নির্বাচন যেন হয় সবচেয়ে বেশি ভোটার ও প্রার্থীর অংশগ্রহণে, এবং ইতিহাসে স্মরণীয় হয় সবচেয়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের উদাহরণ হিসেবে।”
ড. ইউনূস আরও বলেন, প্রায় দেড়যুগ পর দেশে সত্যিকারের একটি জনপ্রতিনিধিত্বশীল সংসদ গঠিত হতে যাচ্ছে। বিপুল তরুণ ভোটার এই নির্বাচনে প্রথমবারের মতো ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবে। এই লক্ষ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, “আপনারা যেন প্রার্থীদের কাছ থেকে স্পষ্ট অঙ্গীকার আদায় করেন—সংসদের প্রথম অধিবেশনেই যেন পূর্বনির্ধারিত সংস্কার এজেন্ডা কোনো কাটাছেঁড়া ছাড়াই পাস হয়। তারা যেন কখনোই দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, জাতীয় মর্যাদা ও গণতান্ত্রিক অধিকার ক্ষুণ্ন না করে।”
তিনি আরও বলেন, “আপনারা তাদের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি নেবেন যে তারা দেশ চালাবে সততা ও স্বচ্ছতার সঙ্গে এবং দুর্নীতি, দলীয়করণ, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসসহ সব গণবিরোধী কাজ থেকে নিজেদের দূরে রাখবে।”
ভাষণের একপর্যায়ে ড. ইউনূস বলেন, এবারের নির্বাচন শুধু একটি শান্তিপূর্ণ ভোট নয়—এটি ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষিত ‘নতুন বাংলাদেশ’ গড়ার প্রথম ধাপ। পরিচিত দল ও প্রতীক থাকবে, কিন্তু ভোটারকে বিচার করতে হবে কোন প্রার্থী সত্যিকারের পরিবর্তনের জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।