অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছেন, এ বছর প্রথমবারের মতো সরকারি অর্থে কাউকেই হজে পাঠানো হয়নি, যা হজ ব্যবস্থাপনায় একটি নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
শুক্রবার (৬ জুন) সন্ধ্যা ৭টায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ড. ইউনূস বলেন,
“এ বছর যারা পবিত্র হজব্রত পালন করেছেন, তাদের প্রত্যেককে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা। মহান রাব্বুল আলামিনের অশেষ মেহেরবাণিতে, আপনাদের দোয়া এবং সংশ্লিষ্টদের পেশাদারিত্বের ফলে হজ ব্যবস্থাপনায় আমরা সাফল্য অর্জন করেছি।”
‘লাববায়েক’ অ্যাপের মাধ্যমে ডিজিটাল সেবা
ড. ইউনূস জানান, সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রথমবারের মতো ‘লাববায়েক’ নামের একটি মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে হজের সার্বিক সেবা ও ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা হয়েছে। এই উদ্যোগের ফলে হাজিদের দুর্ভোগ কমেছে এবং স্বচ্ছতা বেড়েছে।
তিনি বলেন,
“এখন পর্যন্ত হজ ব্যবস্থাপনায় কোনো অনিয়মের খবর আসেনি। টাকা দিয়েও হজে যেতে না পারার যন্ত্রণায় কাউকে কাঁদতে হয়নি। হজ ক্যাম্প বা বিমানবন্দরে কোনো হাজিকে প্রতিবাদ বা বিক্ষোভ করতে হয়নি।”
অনিয়ম ও দুর্নীতিমুক্ত হজ ব্যবস্থাপনার প্রতিশ্রুতি
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন,
“হজ ব্যবস্থাপনায় গত বছরের বিশৃঙ্খলার পুনরাবৃত্তি ঘটেনি। আমরা দেখিয়েছি, চাইলে সঠিক পরিকল্পনা ও সদিচ্ছার মাধ্যমে একটি ধর্মীয় কর্মসূচিও নিরবচ্ছিন্ন ও সম্মানজনকভাবে পরিচালনা করা সম্ভব।”
ব্যয়বহুল অনুদান সংস্কৃতির অবসান
ড. ইউনূস জানান,
“প্রথমবারের মতো সরকারি অর্থে কাউকেই হজে পাঠানো হয়নি। এটি নৈতিকতা, রাষ্ট্রীয় দায়বদ্ধতা এবং করদাতাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।”
সার্বিক মূল্যায়ন
এই পদক্ষেপকে বিশেষজ্ঞরা দেখছেন স্বচ্ছতা ও ন্যায়নীতিনির্ভর শাসনের দৃষ্টান্ত হিসেবে। বহু বছর ধরে সরকারি অনুদানে হজে যাওয়া নিয়ে নানা বিতর্ক ও অনিয়মের অভিযোগ থাকলেও এ বছর সেই ধারার অবসান হয়েছে বলে সরকারের ভাষ্য।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস তাঁর ভাষণের শেষাংশে বলেন,
“আমরা একটি দায়িত্বশীল সরকার হিসেবে জনগণের ধর্মীয় আবেগকে সম্মান করি, তবে সেই সম্মান যেন রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপচয়ে না গড়ায়—সেদিকেও নজর রাখি।”