ঢাকা ০৯:১৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫, ১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যুক্তরাজ্যে পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে আইনজীবী নিয়োগ, ব্রিটিশ সরকারের সহায়তায় সন্তুষ্ট ইউনূস

যুক্তরাজ্যে পাচার হওয়া বাংলাদেশি অর্থ উদ্ধার করতে একজন ব্রিটিশ আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

সম্প্রতি ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস বলেন, “ব্রিটিশ সরকার এই প্রচেষ্টায় অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা রাখছে। তারা যেভাবে দ্রুততা দেখিয়েছে, আমি সত্যিই প্রশংসা করি।”

বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়, আন্তর্জাতিক দুর্নীতি প্রতিরোধ সমন্বয় কেন্দ্র (আইএসিসিসি) বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার এবং যুক্তরাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা সংস্থাগুলোর সঙ্গে একযোগে কাজ করার সুযোগ খুঁজছে। বিশেষভাবে, গত সরকারের আমলে (হাসিনা প্রশাসন) সংঘটিত দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করাই এই প্রচেষ্টার মূল লক্ষ্য।

বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের হিসাব মতে, শেখ হাসিনার সরকারের সময় ২৩৪ বিলিয়ন ডলার (প্রায় ১৭৪ বিলিয়ন ব্রিটিশ পাউন্ড) বিদেশে পাচার হয়েছে, যার অধিকাংশই যুক্তরাজ্যে বিনিয়োগ বা ব্যয়ে ব্যবহৃত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এ প্রসঙ্গে যুক্তরাজ্যের জাতীয় অপরাধ সংস্থা (এনসিএ) জানিয়েছে, তারা তদন্ত কিংবা আন্তর্জাতিক সহযোগিতার বিষয়ে সাধারণত প্রকাশ্যে মন্তব্য করে না। তবে আইএসিসিসিকে তারা লন্ডনে আনুষ্ঠানিকভাবে আমন্ত্রণ জানিয়েছে।

সম্প্রতি বাকিংহাম প্যালেসে রাজা চার্লসের সঙ্গে দেখা করেন অধ্যাপক ইউনূস। একইসঙ্গে, ব্রিটিশ পার্লামেন্টে বাণিজ্য সচিব জনাথন রেনল্ডসের সঙ্গেও তার বৈঠক হয়। বৈঠকের পর এক্সে (সাবেক টুইটার) রেনল্ডস জানান, তিনি ও ইউনূস “অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, কর্মসংস্থান ও পারস্পরিক সমৃদ্ধি” নিয়ে আলোচনা করেছেন।

তবে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে ইউনূসের দেখা হয়নি। তিনি বলেন, “আমি জানি না আমার হতাশ হওয়া উচিত, নাকি দুঃখিত হওয়া উচিত। এটি একটি হারানো সুযোগ।”

অধ্যাপক ইউনূস আরও জানান, তারা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ না হওয়ার কোনো কারণ এখনো জানতে পারেননি। তিনি বলেন, “সম্ভবত তিনি অন্য কোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যস্ত ছিলেন।”

এদিকে, এই অভিযান ও তদন্ত ঘিরে যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশি রাজনৈতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেউ একে ‘দুর্নীতিবিরোধী কার্যকর পদক্ষেপ’ হিসেবে দেখছেন, আবার কেউ কেউ এটিকে ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অংশ’ বলেও উল্লেখ করছেন।

তবে ইউনূস জানিয়েছেন, “এই অভিযান কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নয়, বরং এটি জনগণের সম্পদ রক্ষার জাতীয় প্রয়াস।”

জনপ্রিয় সংবাদ

যুক্তরাজ্যে পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে আইনজীবী নিয়োগ, ব্রিটিশ সরকারের সহায়তায় সন্তুষ্ট ইউনূস

আপডেট সময় ০৭:২০:০৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫

যুক্তরাজ্যে পাচার হওয়া বাংলাদেশি অর্থ উদ্ধার করতে একজন ব্রিটিশ আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

সম্প্রতি ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস বলেন, “ব্রিটিশ সরকার এই প্রচেষ্টায় অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা রাখছে। তারা যেভাবে দ্রুততা দেখিয়েছে, আমি সত্যিই প্রশংসা করি।”

বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়, আন্তর্জাতিক দুর্নীতি প্রতিরোধ সমন্বয় কেন্দ্র (আইএসিসিসি) বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার এবং যুক্তরাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা সংস্থাগুলোর সঙ্গে একযোগে কাজ করার সুযোগ খুঁজছে। বিশেষভাবে, গত সরকারের আমলে (হাসিনা প্রশাসন) সংঘটিত দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করাই এই প্রচেষ্টার মূল লক্ষ্য।

বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের হিসাব মতে, শেখ হাসিনার সরকারের সময় ২৩৪ বিলিয়ন ডলার (প্রায় ১৭৪ বিলিয়ন ব্রিটিশ পাউন্ড) বিদেশে পাচার হয়েছে, যার অধিকাংশই যুক্তরাজ্যে বিনিয়োগ বা ব্যয়ে ব্যবহৃত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এ প্রসঙ্গে যুক্তরাজ্যের জাতীয় অপরাধ সংস্থা (এনসিএ) জানিয়েছে, তারা তদন্ত কিংবা আন্তর্জাতিক সহযোগিতার বিষয়ে সাধারণত প্রকাশ্যে মন্তব্য করে না। তবে আইএসিসিসিকে তারা লন্ডনে আনুষ্ঠানিকভাবে আমন্ত্রণ জানিয়েছে।

সম্প্রতি বাকিংহাম প্যালেসে রাজা চার্লসের সঙ্গে দেখা করেন অধ্যাপক ইউনূস। একইসঙ্গে, ব্রিটিশ পার্লামেন্টে বাণিজ্য সচিব জনাথন রেনল্ডসের সঙ্গেও তার বৈঠক হয়। বৈঠকের পর এক্সে (সাবেক টুইটার) রেনল্ডস জানান, তিনি ও ইউনূস “অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, কর্মসংস্থান ও পারস্পরিক সমৃদ্ধি” নিয়ে আলোচনা করেছেন।

তবে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে ইউনূসের দেখা হয়নি। তিনি বলেন, “আমি জানি না আমার হতাশ হওয়া উচিত, নাকি দুঃখিত হওয়া উচিত। এটি একটি হারানো সুযোগ।”

অধ্যাপক ইউনূস আরও জানান, তারা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ না হওয়ার কোনো কারণ এখনো জানতে পারেননি। তিনি বলেন, “সম্ভবত তিনি অন্য কোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যস্ত ছিলেন।”

এদিকে, এই অভিযান ও তদন্ত ঘিরে যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশি রাজনৈতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেউ একে ‘দুর্নীতিবিরোধী কার্যকর পদক্ষেপ’ হিসেবে দেখছেন, আবার কেউ কেউ এটিকে ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অংশ’ বলেও উল্লেখ করছেন।

তবে ইউনূস জানিয়েছেন, “এই অভিযান কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নয়, বরং এটি জনগণের সম্পদ রক্ষার জাতীয় প্রয়াস।”