মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা যখন চরমে, ঠিক তখনই ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধের হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করলেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের লাগাতার হুমকির পর এবার প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে যুদ্ধের প্রতিজ্ঞা জানালেন তিনি।
বুধবার (১৮ জুন) সিরিজ এক্স (সাবেক টুইটার) পোস্টে খামেনি ঘোষণা দেন, “ইহুদিবাদী শাসকদের সঙ্গে আপোষ নয়, বরং সম্মুখ যুদ্ধই একমাত্র পথ।” তিনি বলেন, “মুহূর্তে মৃত্যু হলেও ইসরায়েলকে ছাড় দেয়া হবে না।”
খামেনির এই বক্তব্য এমন সময় এলো, যখন ইসরায়েল ‘অপারেশন রাইজিং লাইন’ নামক সামরিক অভিযানের মাধ্যমে একে একে ইরানের মিত্রদের আক্রমণ করছে। এতদিন প্রকাশ্যে মুখ না খুললেও এবার কড়া বার্তা দিলেন খামেনি, যা শুধু ধর্মীয় বক্তব্য নয়, বরং রাষ্ট্রীয় প্রতিরক্ষা কৌশলের সরাসরি প্রতিফলন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
প্রসঙ্গত, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সম্প্রতি হুমকি দিয়ে বলেন, “খামেনির মৃত্যু হলেই সংঘাত শেষ হবে।” তার পরদিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়াভ গ্যালান্ট মন্তব্য করেন, খামেনির পরিণতি হবে ইরাকের সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হুসেইনের মতো। এমনকি সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও জানিয়েছেন, খামেনির অবস্থান সম্পর্কে তারা অবগত এবং প্রয়োজনে তাকেও লক্ষ্যবস্তু করা হবে।
এই প্রেক্ষাপটে খামেনির এক্স পোস্টে একাধিক ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় রেফারেন্স উঠে আসে। এক পোস্টে তিনি হযরত আলী (রা.)-এর খাইবার বিজয়ের কথা উল্লেখ করে লেখেন, “সম্মানিত হায়দারের নামে যুদ্ধ শুরু হলো। যুফিকার হাতে নিয়ে খাইবারে ফিরছেন আলী।” এর মাধ্যমে ইসরায়েলকে খাইবারের প্রতীক হিসেবে তুলে ধরে বিজয়ের প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।
আরেক পোস্টে কোরআনের আয়াত উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, “আল্লাহর ইচ্ছায় আমরা যুদ্ধ করব ইহুদিবাদী সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে।”
আয়াতুল্লাহ খামেনির এই ঘোষণা এখন শুধু ইরান বা ইসরায়েল নয়, বরং গোটা মধ্যপ্রাচ্য ও আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহলে চরম আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি যুদ্ধের ঘোষণার স্পষ্ট বার্তা, যা চলমান উত্তেজনাকে আরও বিস্ফোরক করে তুলতে পারে।
সূত্র: আল জাজিরা, ইরানি রাষ্ট্রীয় মিডিয়া, এক্স পোস্ট @Khamenei_ir.