ঢাকা ০৮:৩৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫, ৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঢাবিতে ইসরায়েলের পতাকা পুড়িয়ে বিক্ষোভ, মুসলিম দেশগুলোকে ইরানের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ০৭:৫৪:৫৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫
  • ৫২৬ বার পড়া হয়েছে

ফিলিস্তিন ও ইরানের ওপর ইসরায়েলের সামরিক আগ্রাসনের প্রতিবাদে রাজধানীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ। বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে দখলদার অবৈধ রাষ্ট্র ইসরায়েলের পতাকা পুড়িয়ে প্রতিবাদ জানানো হয়।

বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা মুসলিম রাষ্ট্রগুলোকে ফিলিস্তিন ও ইরানকে অস্ত্র, গোলাবারুদ ও সেনা দিয়ে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে জাতিসংঘে বিল উত্থাপনসহ কূটনৈতিক ও সামরিকভাবে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলার দাবি তোলেন।

বিক্ষোভ কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক আবদুল ওয়াহেদ এবং সঞ্চালনা করেন সদস্য সচিব ফজলুর রহমান। বক্তব্য রাখেন জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামসুদ্দীন, যুগ্ম আহ্বায়ক সাইয়েদ কুতুব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত পাকিস্তানি ছাত্র মোহাম্মদ তাহের, এবং মাদ্রাসা-ই-আলিয়ার আহ্বায়ক রাকিব মণ্ডল।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক গোলাম নূর শাফায়েতুল্লাহ, বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম, মাদ্রাসা-ই-আলিয়ার সদস্য সচিব জিনাত হোসেন, সদস্য মাসুম বিল্লাহ, আবদুর রহমান ও শাহিনুর রহমান।

সমাবেশে মোহাম্মদ শামসুদ্দীন বলেন, “৭০ বছর ধরে ফিলিস্তিন দখল করে ইসরাইল এবার ইরানেও আগ্রাসন চালিয়েছে। মুসলিম উম্মাহ ঐক্যবদ্ধ না হলে আগ্রাসনের শিকার হবে একে একে সবাই। জাতিসংঘ মুসলমানদের রক্ষা করবে—এমন ধারণা ভ্রান্ত, কারণ মুসলিমবিরোধী প্রস্তাবগুলো সবসময়ই যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোতে আটকে যায়।”

তিনি আরও বলেন, ইরান ভারতকে চাবাহার বন্দর ব্যবহার করতে দিয়ে যে কূটনৈতিক সুযোগ দিয়েছিল, তা ইসরাইলের কাছে তথ্য পাচারে রূপ নেয়, যার ফলে ইরানি নেতারা হত্যার শিকার হন। এমনকি আফগানিস্তানও ভারতের সঙ্গে অতিমাত্রায় সম্পর্ক গড়ে তুললে একই ঝুঁকিতে পড়তে পারে।

সাইয়েদ কুতুব বলেন, “ইসরাইল শুধু ফিলিস্তিন নয়, সব মুসলিম দেশের ওপর হামলা চালাচ্ছে। এমনকি বাংলাদেশেও ইসরাইলি প্রযুক্তি ব্যবহার করে হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছে। ইসরাইল একটি ক্যান্সার। এ ক্যান্সার নির্মূলে বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।”

আবদুল ওয়াহেদ বলেন, “ইসরাইল এখন ইরানকে টার্গেট করেছে, যার ইন্ধন দিচ্ছে আমেরিকা ও জি-৭ ভুক্ত দেশগুলো। এ অবস্থায় পাকিস্তান যেমন ইরানের পাশে দাঁড়িয়েছে, তেমনি প্রতিটি মুসলিম রাষ্ট্রকে ফিলিস্তিন ও ইরানের পাশে দাঁড়াতে হবে।”

পাকিস্তানি ছাত্র মোহাম্মদ তাহের বলেন, “গ্রেটার ইসরাইল বাস্তবায়নের পথে সবচেয়ে বড় বাধা ইরান ও পাকিস্তান। যদি এই দুই দেশ ধ্বংস হয়, মুসলমানদের প্রতিরোধ ক্ষমতা তলানিতে ঠেকবে। তাই এখনই ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ প্রয়োজন।”

বক্তব্যে রাকিব মণ্ডল বলেন, “ইসরাইল মুসলিম নিধনে লিপ্ত হয়েছে। যদি মুসলিম রাষ্ট্রগুলো ইরানের পাশে না দাঁড়ায়, তাহলে তারা সবাই একে একে ইসরাইলি আগ্রাসনের শিকার হবে।”

সমাবেশ শেষে একটি ইসরাইল বিরোধী মিছিল রাজু ভাস্কর্য থেকে শুরু হয়ে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি ও কলাভবন ঘুরে মধুর ক্যান্টিনে গিয়ে শেষ হয়।

জনপ্রিয় সংবাদ

বিতর্কে ঘেরা নোবেল ‘জাতীয় বেয়াদব’—রবি চৌধুরীর তীক্ষ্ণ গানে নতুন অভিধা

ঢাবিতে ইসরায়েলের পতাকা পুড়িয়ে বিক্ষোভ, মুসলিম দেশগুলোকে ইরানের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের

আপডেট সময় ০৭:৫৪:৫৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫

ফিলিস্তিন ও ইরানের ওপর ইসরায়েলের সামরিক আগ্রাসনের প্রতিবাদে রাজধানীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ। বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে দখলদার অবৈধ রাষ্ট্র ইসরায়েলের পতাকা পুড়িয়ে প্রতিবাদ জানানো হয়।

বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা মুসলিম রাষ্ট্রগুলোকে ফিলিস্তিন ও ইরানকে অস্ত্র, গোলাবারুদ ও সেনা দিয়ে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে জাতিসংঘে বিল উত্থাপনসহ কূটনৈতিক ও সামরিকভাবে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলার দাবি তোলেন।

বিক্ষোভ কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক আবদুল ওয়াহেদ এবং সঞ্চালনা করেন সদস্য সচিব ফজলুর রহমান। বক্তব্য রাখেন জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামসুদ্দীন, যুগ্ম আহ্বায়ক সাইয়েদ কুতুব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত পাকিস্তানি ছাত্র মোহাম্মদ তাহের, এবং মাদ্রাসা-ই-আলিয়ার আহ্বায়ক রাকিব মণ্ডল।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক গোলাম নূর শাফায়েতুল্লাহ, বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম, মাদ্রাসা-ই-আলিয়ার সদস্য সচিব জিনাত হোসেন, সদস্য মাসুম বিল্লাহ, আবদুর রহমান ও শাহিনুর রহমান।

সমাবেশে মোহাম্মদ শামসুদ্দীন বলেন, “৭০ বছর ধরে ফিলিস্তিন দখল করে ইসরাইল এবার ইরানেও আগ্রাসন চালিয়েছে। মুসলিম উম্মাহ ঐক্যবদ্ধ না হলে আগ্রাসনের শিকার হবে একে একে সবাই। জাতিসংঘ মুসলমানদের রক্ষা করবে—এমন ধারণা ভ্রান্ত, কারণ মুসলিমবিরোধী প্রস্তাবগুলো সবসময়ই যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোতে আটকে যায়।”

তিনি আরও বলেন, ইরান ভারতকে চাবাহার বন্দর ব্যবহার করতে দিয়ে যে কূটনৈতিক সুযোগ দিয়েছিল, তা ইসরাইলের কাছে তথ্য পাচারে রূপ নেয়, যার ফলে ইরানি নেতারা হত্যার শিকার হন। এমনকি আফগানিস্তানও ভারতের সঙ্গে অতিমাত্রায় সম্পর্ক গড়ে তুললে একই ঝুঁকিতে পড়তে পারে।

সাইয়েদ কুতুব বলেন, “ইসরাইল শুধু ফিলিস্তিন নয়, সব মুসলিম দেশের ওপর হামলা চালাচ্ছে। এমনকি বাংলাদেশেও ইসরাইলি প্রযুক্তি ব্যবহার করে হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছে। ইসরাইল একটি ক্যান্সার। এ ক্যান্সার নির্মূলে বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।”

আবদুল ওয়াহেদ বলেন, “ইসরাইল এখন ইরানকে টার্গেট করেছে, যার ইন্ধন দিচ্ছে আমেরিকা ও জি-৭ ভুক্ত দেশগুলো। এ অবস্থায় পাকিস্তান যেমন ইরানের পাশে দাঁড়িয়েছে, তেমনি প্রতিটি মুসলিম রাষ্ট্রকে ফিলিস্তিন ও ইরানের পাশে দাঁড়াতে হবে।”

পাকিস্তানি ছাত্র মোহাম্মদ তাহের বলেন, “গ্রেটার ইসরাইল বাস্তবায়নের পথে সবচেয়ে বড় বাধা ইরান ও পাকিস্তান। যদি এই দুই দেশ ধ্বংস হয়, মুসলমানদের প্রতিরোধ ক্ষমতা তলানিতে ঠেকবে। তাই এখনই ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ প্রয়োজন।”

বক্তব্যে রাকিব মণ্ডল বলেন, “ইসরাইল মুসলিম নিধনে লিপ্ত হয়েছে। যদি মুসলিম রাষ্ট্রগুলো ইরানের পাশে না দাঁড়ায়, তাহলে তারা সবাই একে একে ইসরাইলি আগ্রাসনের শিকার হবে।”

সমাবেশ শেষে একটি ইসরাইল বিরোধী মিছিল রাজু ভাস্কর্য থেকে শুরু হয়ে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি ও কলাভবন ঘুরে মধুর ক্যান্টিনে গিয়ে শেষ হয়।