ঢাকা ০৫:৩৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ জুন ২০২৫, ৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যুক্তরাষ্ট্রকে আর বিশ্বাস করছে না ইরান: ‘আলোচনার আড়ালে হামলার ছক’— আরাগচি

ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রের ওপর আস্থাহীনতার কঠোর বার্তা দিয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি। শুক্রবার (২০ জুন) জেনেভায় ইউরোপের তিন পরাশক্তি—ফ্রান্স, জার্মানি ও যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

“যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান আলোচনা আসলে ইসরায়েলের হামলার একটি ছদ্মাবরণ,”—এনবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করে আরাগচি বলেন,

“এটা কূটনীতির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা। ওয়াশিংটনকে এখন প্রমাণ করতে হবে, তারা সত্যিকারের কোনো সমাধান চায়। আমরা আর নিশ্চিত নই—তাদের ওপর কীভাবে আস্থা রাখব।”

এই মন্তব্য এমন এক সময়ে এলো, যখন ইরান-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। একদিকে যেমন মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের সামরিক তৎপরতা চলছে, অন্যদিকে ভিয়েনা চুক্তি পুনরুজ্জীবনের জন্য কূটনৈতিক আলোচনাও চালু রয়েছে—যা এখন নতুন করে প্রশ্নের মুখে।

বৈঠক শেষে শুক্রবার রাতে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পৌঁছান তুরস্কে। শনিবার ইস্তাম্বুলে তিনি অংশ নেবেন ৫৭টি মুসলিম দেশের জোট, ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা (OIC)-এর এক জরুরি বৈঠকে। সেখানে ইসরায়েলি হামলার বিষয়ে মুসলিম বিশ্বের ঐক্যবদ্ধ অবস্থান তুলে ধরার চেষ্টা করবেন তিনি।

তুরস্কে পৌঁছে স্থানীয় ইরানি গণমাধ্যমকে আরাগচি জানান,

“এই সুযোগকে আমরা পুরোপুরি কাজে লাগাতে চাই, যেন নির্দোষ ও ন্যায়সংগত ইরানি জনগণের কণ্ঠ বিশ্বমঞ্চে পৌঁছে দিতে পারি।”

এছাড়া তার তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানসহ গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পরিকল্পনাও রয়েছে বলে জানান তিনি।এই বক্তব্য ও পদক্ষেপগুলো স্পষ্টভাবে দেখাচ্ছে—ইরান কেবল আঞ্চলিক নয়, বৈশ্বিক কূটনৈতিক মহলেও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি অনাস্থা জানাতে চাইছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এতে করে ভবিষ্যতে ভিয়েনা চুক্তি, নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার এবং পারমাণবিক ইস্যুতে পুনঃআলোচনার পথ আরও কঠিন হয়ে পড়তে পারে।

জনপ্রিয় সংবাদ

মধ্যপ্রাচ্যে ভয়াবহ মোড়: ইসরায়েলের হামলায় ইরানি সংহতি, শুরু হাইব্রিড যুদ্ধ

যুক্তরাষ্ট্রকে আর বিশ্বাস করছে না ইরান: ‘আলোচনার আড়ালে হামলার ছক’— আরাগচি

আপডেট সময় ০৭:২৯:৫৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ জুন ২০২৫

ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রের ওপর আস্থাহীনতার কঠোর বার্তা দিয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি। শুক্রবার (২০ জুন) জেনেভায় ইউরোপের তিন পরাশক্তি—ফ্রান্স, জার্মানি ও যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

“যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান আলোচনা আসলে ইসরায়েলের হামলার একটি ছদ্মাবরণ,”—এনবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করে আরাগচি বলেন,

“এটা কূটনীতির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা। ওয়াশিংটনকে এখন প্রমাণ করতে হবে, তারা সত্যিকারের কোনো সমাধান চায়। আমরা আর নিশ্চিত নই—তাদের ওপর কীভাবে আস্থা রাখব।”

এই মন্তব্য এমন এক সময়ে এলো, যখন ইরান-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। একদিকে যেমন মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের সামরিক তৎপরতা চলছে, অন্যদিকে ভিয়েনা চুক্তি পুনরুজ্জীবনের জন্য কূটনৈতিক আলোচনাও চালু রয়েছে—যা এখন নতুন করে প্রশ্নের মুখে।

বৈঠক শেষে শুক্রবার রাতে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পৌঁছান তুরস্কে। শনিবার ইস্তাম্বুলে তিনি অংশ নেবেন ৫৭টি মুসলিম দেশের জোট, ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা (OIC)-এর এক জরুরি বৈঠকে। সেখানে ইসরায়েলি হামলার বিষয়ে মুসলিম বিশ্বের ঐক্যবদ্ধ অবস্থান তুলে ধরার চেষ্টা করবেন তিনি।

তুরস্কে পৌঁছে স্থানীয় ইরানি গণমাধ্যমকে আরাগচি জানান,

“এই সুযোগকে আমরা পুরোপুরি কাজে লাগাতে চাই, যেন নির্দোষ ও ন্যায়সংগত ইরানি জনগণের কণ্ঠ বিশ্বমঞ্চে পৌঁছে দিতে পারি।”

এছাড়া তার তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানসহ গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পরিকল্পনাও রয়েছে বলে জানান তিনি।এই বক্তব্য ও পদক্ষেপগুলো স্পষ্টভাবে দেখাচ্ছে—ইরান কেবল আঞ্চলিক নয়, বৈশ্বিক কূটনৈতিক মহলেও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি অনাস্থা জানাতে চাইছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এতে করে ভবিষ্যতে ভিয়েনা চুক্তি, নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার এবং পারমাণবিক ইস্যুতে পুনঃআলোচনার পথ আরও কঠিন হয়ে পড়তে পারে।