যুক্তরাষ্ট্রের বোমারু বিমান ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালানোর পর পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় উত্তাল হয়ে উঠেছে তেহরান। দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা ও প্রভাবশালী কায়হান পত্রিকার প্রধান সম্পাদক হোসেইন শরিয়তমাদারি রোববার (২২ জুন) এক হুঁশিয়ারিমূলক বার্তায় বলেছেন, “এবার আমাদের পালা।”
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, কায়হানের টেলিগ্রাম চ্যানেলে প্রকাশিত এক বার্তায় হোসেইন শরিয়তমাদারি দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্র বাহরাইনের মার্কিন নৌবাহিনীর ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জন্য প্রস্তুত থাকুক। সেইসঙ্গে হরমুজ প্রণালি—যেখানে দিয়ে বিশ্বের এক-পঞ্চমাংশ জ্বালানিবাহী জাহাজ চলাচল করে—তা বন্ধ করে দেয়ারও সরাসরি হুমকি দেন তিনি।
তিনি আরও বলেন,
“কোনো সংশয় বা বিলম্ব না করে প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে বাহরাইনে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবহরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাতে হবে এবং হরমুজ প্রণালি বন্ধ করে দিতে হবে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, জার্মানি ও ফ্রান্সের নৌযান চলাচলের জন্য।”
এর আগে, শনিবার রাতে ইরানের ফোরদো, নাতাঞ্জ ও আরাক পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন যুদ্ধবিমানের হামলার খবর নিশ্চিত করে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ হামলার পর একটি জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে বলেন—
“ইসরায়েলের জন্য এই ভয়াবহ হুমকি মুছে ফেলতে আমরা অনেক দূর এগিয়েছি। এখন হয় শান্তি আসবে, না হলে ইরানের জন্য অপেক্ষা করছে মর্মান্তিক পরিণতি।”
ট্রাম্প আরও বলেন,
“এই হামলা ছিল সবচেয়ে কঠিন ও সবচেয়ে বৈধ। আমাদের আরও লক্ষ্যবস্তু প্রস্তুত আছে। আমরা প্রয়োজনে নিখুঁতভাবে এবং দ্রুততার সঙ্গে সেগুলোতেও আঘাত করব।”
তিনি সরাসরি বলেন, এই অভিযানের মূল লক্ষ্য হলো ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা ধ্বংস করে দেওয়া এবং বিশ্বের এক নম্বর সন্ত্রাসের পৃষ্ঠপোষক দেশটির হুমকি বন্ধ করা।
তবে এখনও ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির পক্ষ থেকে সরাসরি কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া আসেনি। তবে তার টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্টে পুরনো একটি টেলিভিশন ভাষণ আবারও শেয়ার করা হয়েছে, যেখানে তিনি বলেন:
“যদি যুক্তরাষ্ট্র ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে জড়ায়, তবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে তারাই। আমেরিকার ক্ষয়ক্ষতি ইরানের ক্ষতির চেয়েও বহু গুণ বেশি হবে।”