যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলার পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি) এক বিবৃতিতে বলেছে, মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অসংখ্য সামরিক ঘাঁটি তাদের শক্তির প্রতীক নয়, বরং সবচেয়ে বড় দুর্বলতা। রোববার প্রকাশিত বিবৃতিতে আইআরজিসি সতর্ক করে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ওপর আগ্রাসন চালিয়ে নিজের জন্যই নতুন সংঘাত ডেকে এনেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, “অবৈধ মার্কিন শাসকগোষ্ঠী আগের যুদ্ধগুলোর কোনো শিক্ষাই নেয়নি। তারা শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলা চালিয়ে এখন নিজেরাই প্রতিক্রিয়ার মুখে পড়েছে।”
আইআরজিসি দাবি করেছে, যুক্তরাষ্ট্রের যেসব যুদ্ধবিমান ইরানের আকাশসীমায় হামলায় অংশ নিয়েছে, সেগুলোর ফ্লাইট লোকেশন ইতোমধ্যেই নজরদারির আওতায় এসেছে। “মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ঘাঁটির বিস্তার তাদের জন্য ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে তুলেছে,” উল্লেখ করে বাহিনীটি।
আইআরজিসি অভিযোগ করে, যুক্তরাষ্ট্র কেবল কৌশলগত ব্যর্থতাই দেখাচ্ছে না, বরং তারা মধ্যপ্রাচ্যের বাস্তবতা অস্বীকার করে এক নতুন যুদ্ধাবস্থা তৈরি করছে।
এর আগে, স্থানীয় সময় শনিবার রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দেন, “যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় সফল হামলা চালিয়েছে এবং সেগুলো সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করা হয়েছে।” তিনি বলেন, “হয় শান্তি আসবে, নয়তো ইরানের জন্য গত আট দিনে যা দেখেছে, তার চেয়েও বড় ট্র্যাজেডি অপেক্ষা করছে।”
তবে ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ইরনা জানায়, যেসব স্থাপনায় হামলা চালানো হয়েছে, সেগুলোর ভেতরে কোনো তেজস্ক্রিয় উপাদান ছিল না। অর্থাৎ, স্থাপনাগুলো কর্মক্ষম পারমাণবিক স্থাপনা ছিল না বলেই দাবি তেহরানের।
যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পরপরই পাল্টা জবাব দেয় ইরান। আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, তেল আবিবসহ ইসরায়েলের ১০টি স্থানে রকেট ও শার্পনেল হামলা চালিয়েছে ইরান। এসব হামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ১১ জন আহত হয়েছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ইরান থেকে ছোড়া দুটি ক্ষেপণাস্ত্র তারা শনাক্ত করেছে।
জেরুজালেমে বিস্ফোরণের শব্দ এবং বিমান হামলার সতর্কতামূলক সাইরেন বাজতে দেখা গেছে। বিশ্লেষকদের মতে, পরিস্থিতি দ্রুত মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে এবং ভবিষ্যতে আরও ভয়াবহ সংঘাতের আশঙ্কা বাড়ছে।