এবার ইসরায়েলের সঙ্গে সাম্প্রতিক ১২ দিনের সংঘাতের পর যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়াকে ইরানের “গৌরবময় বিজয়” হিসেবে অভিহিত করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান। তিনি বলেন, ‘জাতি হিসেবে ইরানিরা এই বিজয়ে গর্ব করার মতো প্রমাণ দিয়েছে—তাদের ঐক্য, প্রতিরোধ এবং দৃঢ় মনোবল আজ বিশ্ববাসীর সামনে উদাহরণ।’
মঙ্গলবার (২৪ জুন) রাতে দেওয়া এক টেলিভিশন ভাষণে প্রেসিডেন্ট বলেন, যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত ইসরাইলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ইরানি জনগণের সংহতি এবং সশস্ত্র বাহিনীর প্রতিরোধ ইসরায়েলকে যুদ্ধবিরতি মেনে নিতে বাধ্য করেছে।
পেজেশকিয়ান বলেন, ‘ইরানের ওপর দখলদার বাহিনীর টানা বারোদিনের আগ্রাসনের জবাবে আমাদের বাহিনীর প্রত্যুত্তরই প্রমাণ করেছে—ইরানি জাতি কখনও মাথা নত করে না। এই সময়ে গড়ে ওঠা জাতীয় ঐক্য ও সংহতি আমাদের সবচেয়ে বড় অর্জন এবং ভবিষ্যতের জন্য এটি অমূল্য সম্পদ হয়ে থাকবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘জাতীয় ঐক্য ধরে রাখা এখন সময়ের দাবি। জনগণের মধ্যকার এই সংহতি আমাদের ভবিষ্যৎ উন্নয়নের ভিত্তি। শত্রুদের যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা কেবল সামরিক নয়, কূটনৈতিকভাবেও তারা মারাত্মক চাপের মুখে পড়েছে।’
ইসরায়েলের ওপর পাল্টা জবাব প্রসঙ্গে পেজেশকিয়ান বলেন, ‘জায়নিস্ট শক্তির এই দুঃসাহসিকতা তাদের অনেক বেশি ক্ষতির মুখে ফেলেছে। আমাদের জনগণের প্রতিরোধ আজ গোটা বিশ্বে ইরানিদের মর্যাদা ও সাহসিকতা প্রমাণ করেছে।’ বিজয়ের জন্য জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘এই গর্ব আমাদের জনগণেরই অর্জন। এমন ঐক্য, এমন সাহস কেবল একটি চেতনার জাতিকেই সম্ভব করে তোলে—এবং সে জাতি ইরান।’
বার্তার শেষাংশে আঞ্চলিক শান্তি ও সহযোগিতার প্রতি ইরানের অবস্থান তুলে ধরে পেজেশকিয়ান বলেন, ‘ইরান চায় শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা। আমাদের প্রতিরক্ষা শক্তি শুধু নিজেদের জন্য নয়, গোটা মুসলিম বিশ্বের এবং আশপাশের দেশগুলোর স্থিতিশীলতা রক্ষার জন্য নিয়োজিত থাকবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘শত্রুরা তাদের বিভাজনমূলক কৌশল দিয়ে আমাদের অগ্রগতি রুখে দিতে পারবে না। মুসলিম বিশ্বের প্রজ্ঞা আর সতর্কতাই সেই চক্রান্ত ভেস্তে দেবে।’