ঢাকা ০৭:৩২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫, ২৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নাফিজা হত্যা নিয়ে কুলাউড়ায় জামায়াত আমির: “এই মেয়ে যদি আমার মেয়ে হতো, কেমন লাগতো?”

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ০৫:৩৪:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫
  • ৫৪২ বার পড়া হয়েছে

মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় প্রাইভেট পড়তে গিয়ে নিখোঁজ হওয়ার পর খাল থেকে উদ্ধার হওয়া কিশোরী নাফিজা জান্নাত আনজুম হত্যাকাণ্ড নিয়ে গভীর শোক ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।

শুক্রবার (২৭ জুন) শেরপুর গ্রামে নিহত নাফিজার বাড়িতে গিয়ে শোকাহত পরিবারকে সান্ত্বনা দেন তিনি। নিহত মেয়েটির বাবার সঙ্গে কথা বলার পর চোখেমুখে গভীর বেদনা নিয়ে তিনি বলেন,
“আমার নিজ উপজেলায় এ হৃদয়বিদারক ঘটনা শুনে আমি মর্মাহত। মেয়েটির বাবার কথা শুনে আমার বিবেকে আঘাত লেগেছে। এই নির্মম হত্যাকাণ্ড প্রমাণ করে আমরা কী ভয়াবহ এক সমাজে বাস করছি। একটি নিষ্পাপ মেয়েকে হত্যা করে তার পরিবারকে যে জুলুম করা হয়েছে, তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।”

তিনি আরও বলেন, “আপনাদের মতো আমিও এ নির্মম হত্যার বিচার চাই। আমরা লক্ষ্য করছি, এ মামলাটিকে প্রভাবিত করার চেষ্টা চলছে। একটি প্রভাবশালী মহল খুনিকে রক্ষায় সক্রিয় হয়েছে। যদি তাই হয়, কথা দিচ্ছি—আমরা আপনাদের নিয়ে জুলুমের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলবো।”

ডা. শফিকুর রহমান জানান, তিনি স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং তাদের সতর্ক করে দিয়েছেন— “খুনিকে বাঁচাতে কোনো ধোঁয়াশা তৈরি হলে তা সহ্য করা হবে না। পুলিশের কলম যেন ন্যায়ের পক্ষে চলে। তদন্ত কর্মকর্তারা যেন কোনো গড়মিল না করেন।”

পরিবারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “আপনাদের পাশে আছি। এ মজলুম পরিবারকে সহযোগিতা করলে দুনিয়া ও আখেরাতে এর কল্যাণ রয়েছে।”
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে আবেগঘন কণ্ঠে বলেন,
“আমি মানসিকভাবে বিধ্বস্ত। এই মেয়ে যদি আমার মেয়ে হতো, তাহলে আমার কেমন লাগতো? প্লিজ, আজ রাজনৈতিক প্রশ্ন নেব না। দুঃখিত।”

এ সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ, যাদের মধ্যে ছিলেন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, জেলা আমির ইঞ্জিনিয়ার মো. শাহেদ আলী, নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুর রহমান, জেলা সেক্রেটারি মো. ইয়ামীর আলী, ছাত্রশিবির জেলা সভাপতি নিজাম উদ্দিন, উপজেলা সেক্রেটারি বেলাল আহমদ চৌধুরী, সহকারী সেক্রেটারি সাইফুল ইসলাম খান আলাউদ্দিন এবং ছাত্রশিবির উপজেলা সভাপতি আতিকুর রহমান তারেক।

এর আগে তিনি জেলা জামায়াতের সাবেক আমির সিরাজুল ইসলাম মতলিবের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সমবেদনা জানান এবং তার কবর জিয়ারত করেন।

উল্লেখ্য, গত ১২ জুন সকাল ৭টায় প্রাইভেট পড়তে গিয়ে নিখোঁজ হয় নাফিজা জান্নাত আনজুম। দুই দিন পর ১৪ জুন সন্ধ্যায় শেরপুর গ্রামের একটি খালের ঝোপ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরিবারের দায়ের করা হত্যা মামলার পর পুলিশ প্রতিবেশী জুনেল মিয়াকে গ্রেফতার করেছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

“হাসিনা চ্যাপ্টার ক্লোজড”—ঝিনাইদহে এনসিপি নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহর বক্তব্যে উত্তেজনা

নাফিজা হত্যা নিয়ে কুলাউড়ায় জামায়াত আমির: “এই মেয়ে যদি আমার মেয়ে হতো, কেমন লাগতো?”

আপডেট সময় ০৫:৩৪:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫

মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় প্রাইভেট পড়তে গিয়ে নিখোঁজ হওয়ার পর খাল থেকে উদ্ধার হওয়া কিশোরী নাফিজা জান্নাত আনজুম হত্যাকাণ্ড নিয়ে গভীর শোক ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।

শুক্রবার (২৭ জুন) শেরপুর গ্রামে নিহত নাফিজার বাড়িতে গিয়ে শোকাহত পরিবারকে সান্ত্বনা দেন তিনি। নিহত মেয়েটির বাবার সঙ্গে কথা বলার পর চোখেমুখে গভীর বেদনা নিয়ে তিনি বলেন,
“আমার নিজ উপজেলায় এ হৃদয়বিদারক ঘটনা শুনে আমি মর্মাহত। মেয়েটির বাবার কথা শুনে আমার বিবেকে আঘাত লেগেছে। এই নির্মম হত্যাকাণ্ড প্রমাণ করে আমরা কী ভয়াবহ এক সমাজে বাস করছি। একটি নিষ্পাপ মেয়েকে হত্যা করে তার পরিবারকে যে জুলুম করা হয়েছে, তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।”

তিনি আরও বলেন, “আপনাদের মতো আমিও এ নির্মম হত্যার বিচার চাই। আমরা লক্ষ্য করছি, এ মামলাটিকে প্রভাবিত করার চেষ্টা চলছে। একটি প্রভাবশালী মহল খুনিকে রক্ষায় সক্রিয় হয়েছে। যদি তাই হয়, কথা দিচ্ছি—আমরা আপনাদের নিয়ে জুলুমের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলবো।”

ডা. শফিকুর রহমান জানান, তিনি স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং তাদের সতর্ক করে দিয়েছেন— “খুনিকে বাঁচাতে কোনো ধোঁয়াশা তৈরি হলে তা সহ্য করা হবে না। পুলিশের কলম যেন ন্যায়ের পক্ষে চলে। তদন্ত কর্মকর্তারা যেন কোনো গড়মিল না করেন।”

পরিবারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “আপনাদের পাশে আছি। এ মজলুম পরিবারকে সহযোগিতা করলে দুনিয়া ও আখেরাতে এর কল্যাণ রয়েছে।”
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে আবেগঘন কণ্ঠে বলেন,
“আমি মানসিকভাবে বিধ্বস্ত। এই মেয়ে যদি আমার মেয়ে হতো, তাহলে আমার কেমন লাগতো? প্লিজ, আজ রাজনৈতিক প্রশ্ন নেব না। দুঃখিত।”

এ সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ, যাদের মধ্যে ছিলেন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, জেলা আমির ইঞ্জিনিয়ার মো. শাহেদ আলী, নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুর রহমান, জেলা সেক্রেটারি মো. ইয়ামীর আলী, ছাত্রশিবির জেলা সভাপতি নিজাম উদ্দিন, উপজেলা সেক্রেটারি বেলাল আহমদ চৌধুরী, সহকারী সেক্রেটারি সাইফুল ইসলাম খান আলাউদ্দিন এবং ছাত্রশিবির উপজেলা সভাপতি আতিকুর রহমান তারেক।

এর আগে তিনি জেলা জামায়াতের সাবেক আমির সিরাজুল ইসলাম মতলিবের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সমবেদনা জানান এবং তার কবর জিয়ারত করেন।

উল্লেখ্য, গত ১২ জুন সকাল ৭টায় প্রাইভেট পড়তে গিয়ে নিখোঁজ হয় নাফিজা জান্নাত আনজুম। দুই দিন পর ১৪ জুন সন্ধ্যায় শেরপুর গ্রামের একটি খালের ঝোপ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরিবারের দায়ের করা হত্যা মামলার পর পুলিশ প্রতিবেশী জুনেল মিয়াকে গ্রেফতার করেছে।