ভয়াবহ দাবানলের কবলে পড়েছে তুরস্কের একাধিক প্রদেশ। প্রচণ্ড বাতাস, তীব্র গরম ও শুষ্ক আবহাওয়ায় আগুন নিয়ন্ত্রণহীনভাবে ছড়িয়ে পড়ছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় হিমশিম খাচ্ছেন দমকলকর্মীরা।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) টার্কি টুডে-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দাবানল এখন শুধু বনাঞ্চলেই সীমাবদ্ধ নেই— ছড়িয়ে পড়েছে আবাসিক এলাকাতেও। বহু মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে পালিয়ে যাচ্ছেন। প্রশাসন বাধ্য হয়ে অনেককে সরিয়ে নিচ্ছে।
দাবানলের ভয়াবহতায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে স্থানীয়দের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পর্যটকদের মাঝেও। অনেক পর্যটক তাদের ভ্রমণ সংক্ষিপ্ত করে তুরস্ক ছাড়ছেন বলে জানায় সংবাদমাধ্যমটি।
এ পর্যন্ত ইজমির, মুগলা, আন্টালিয়া, কানাক্কালে, বিলেসিক, হাতায় এবং সাকারিয়ায় আগুন লাগার খবর পাওয়া গেছে। বিশেষত, ইজমির প্রদেশের আলিয়াগা জেলা সবচেয়ে মারাত্মক পরিস্থিতির মুখোমুখি। সেখানকার বোজকয় ও হোরোজগেদিগি গ্রামের কাছে একটি গ্রামীণ বনাঞ্চল থেকে দাবানল শুরু হয়, যা এখন ফোকার ইলিপিনার পাড়ায় ছড়িয়ে পড়েছে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ১৭৫টি বাড়ি থেকে অন্তত ৫৫০ জন বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। অনেকে আশপাশের গ্রামে আশ্রয় নিয়েছেন, কেউ কেউ ফোকার অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন।
দমকল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তীব্র বাতাস, প্রচণ্ড তাপমাত্রা ও কম আর্দ্রতার কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে বড় বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। প্রতি মুহূর্তেই নতুন এলাকায় আগুন ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা বাড়ছে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি এখন তুরস্কের দিকে। দেশটির সরকার আগুন নেভাতে অতিরিক্ত সাহায্যের জন্য প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছে, যদিও এখন পর্যন্ত আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনার কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত চরম আবহাওয়া পরিস্থিতি এই ধরনের দাবানলের মাত্রা ও বিস্তার বাড়িয়ে দিচ্ছে, যা ভবিষ্যতে আরও বড় হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।