বাংলাদেশে একটি গণতান্ত্রিক কাঠামো গঠনের আহ্বান জানিয়ে নির্বাচন-সংক্রান্ত ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি চত্বরে ছাত্রদল আয়োজিত জুলাই আন্দোলনে শহীদ ছাত্রদের স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, দেশের মানুষ চায় একটি সুষ্ঠু নির্বাচন এবং সেই লক্ষ্যে আমরা প্রায় সবক্ষেত্রে একমত হয়েছি। তবে সমস্যা শুরু হয় তারেক রহমান ও ড. ইউনূসের লন্ডন বৈঠকের পর থেকে। এরপর থেকেই নির্বাচন ঠেকানোর ষড়যন্ত্র শুরু হয়। তবে তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, বাংলাদেশের মানুষ লড়াই-সংগ্রামে অভ্যস্ত, এবং এই নির্বাচন অবশ্যই ফেব্রুয়ারির মধ্যেই হবে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, সরকার ও তাদের মদদপুষ্ট গোষ্ঠী বিএনপিকে উত্তেজনায় টেনে এনে সংঘাতে জড়াতে চায়, যেন গণতন্ত্রের উত্তরণ ব্যাহত হয়। কিন্তু বিএনপি সেই ফাঁদে পা দেবে না। তিনি বলেন, “আমরা ধৈর্যের সঙ্গে, সহনশীলতার সঙ্গে, শান্তির সঙ্গে গণতন্ত্রের দিকে এগিয়ে যাবো।”
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার তত্ত্বাবধায়ক সরকার চালুর প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, বিএনপি সেই দল, যা সত্যিকার অর্থেই মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন চায় এবং বাংলাদেশকে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর মতো রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়।
তারেক রহমানকে নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে অশালীন ভাষা ব্যবহারের অভিযোগ এনে ফখরুল বলেন, “তারা ভয় পেয়েছে। কারণ তারেক রহমান জাতীয় নেতা হিসেবে অলরেডি প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছেন। তিনি যদি ফিরে আসেন, তাহলে ওরা যাবে কোথায়?”
তিনি জোর দিয়ে বলেন, বিএনপি শুধু একটি রাজনৈতিক দল নয়, এটি একটি আদর্শ—গণতন্ত্র, মুক্তি ও উন্নয়নের প্রতীক।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। তিনি অভিযোগ করে বলেন, নির্বাচন ঠেকানোর চেষ্টা চলছে, কারণ ক্ষমতাসীনরা জানে নির্বাচনে কোন দল জয়ী হবে। ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় ধৈর্যের সঙ্গে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, গত বছরের ১৭ জুলাই সরকার আন্দোলন দমন করতে সারা দেশে ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছিল, পুলিশ ও ছাত্রলীগকে লেলিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু সেই দমন নীতির মুখেও ছাত্রদল থেমে যায়নি। তিনি জানান, আন্দোলনের সময় আহত ছাত্রদের সেবা দিতে ড্যাব ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা রাতভর ঢাকা মেডিকেলে পাশে ছিলেন। বাধা-বিপত্তি সত্ত্বেও ছাত্রদল আন্দোলনের অগ্রভাগে থেকে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি নাছির উদ্দিন নাছির।