কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়া একটি রাজনৈতিক দলের কর্মীদের গোপনে প্রশিক্ষণ দেওয়ার অভিযোগ ঘিরে আলোচনায় আসা সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তাকে বর্তমানে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে সেনাসদর। বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা সেনানিবাসের অফিসার্স মেস ‘এ’-তে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেন মিলিটারি অপারেশনস পরিদপ্তরের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজিম-উদ-দৌলা।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “মেজর সাদিকের বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে সেনাবাহিনীর প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তিনি আরও যোগ করেন, “এটি একটি স্পর্শকাতর বিষয়। তদন্তাধীন অবস্থায় বিস্তারিত মন্তব্য করা সমীচীন নয়।”
ব্রিফিংয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়েও বিস্তারিত তুলে ধরেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল। তিনি জানান, “ইউপিডিএফ ও জেএসএসের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য ও চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে সংঘাত চলছে। সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় রয়েছে।”
তিনি বলেন, “সাম্প্রতিক সময়ে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) আরাকান আর্মির কাছ থেকে অস্ত্র সংগ্রহ করছে এবং পাহাড়ে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করছে। আরাকান আর্মি ও কেএনএফের মধ্যে সাংগঠনিক ও জাতিগত ঘনিষ্ঠতা রয়েছে, ফলে এ ধরনের সংযোগ অস্বাভাবিক নয়। তবে বাস্তবতা হলো, কেএনএফ এখনো পার্বত্যাঞ্চলে তাদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি।”
সাম্প্রতিক সময়ে সেনাবাহিনীর কিছু কর্মকাণ্ড নিয়ে রাজনৈতিক পক্ষপাতের অভিযোগ ওঠে। বিশেষ করে গোপালগঞ্জে এনসিপি নেতাদের নিরাপত্তা দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে মিলিটারি অপারেশনস পরিদপ্তরের কর্নেল স্টাফ কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, “কোনো রাজনৈতিক দলের প্রতি সেনাবাহিনীর পক্ষপাত নেই। গোপালগঞ্জে জীবননাশের আশঙ্কায় নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে। এটা রাজনৈতিক সহায়তা নয়, বরং মানবিক দায়িত্ববোধের অংশ।”
তিনি বলেন, “আমাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন না করলে বড় ধরনের হতাহতের ঘটনা ঘটতে পারত। আমরা কেবল জীবন রক্ষাকে প্রাধান্য দিয়েছি।”