অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা ‘জুলাই শহীদদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে’ ক্ষমতায় এসেও এখন ভোগ-বিলাসে মত্ত হয়ে পড়েছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রকাশনা সম্পাদক সাদিক কায়েম। তিনি বলেন, “তাদের আচরণে আমরা হতাশ, কারণ তারা জুলাইয়ের চেতনা ধারণ করছেন না। ছাত্র উপদেষ্টাদের ব্যর্থতা, দুর্নীতি এবং দায়িত্বহীনতা স্পষ্টভাবে চোখে পড়ছে।”
শনিবার বিকেলে রংপুর নগরীর মুন্সিপাড়া কবরস্থানে জুলাই আন্দোলনের শহীদ সাথী আব্দুল্লাহ আল তাহির ও স্বর্ণ শ্রমিক মোসলেম উদ্দিন মিলনের কবর জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব মন্তব্য করেন তিনি।
সাদিক কায়েম বলেন, “খুনি শেখ হাসিনা আমাদের দুই হাজার ভাইবোনকে শহীদ করেছেন, পঙ্গু করে দিয়েছেন ৪০ হাজার মানুষকে। ১৬ বছরের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচার আজও হয়নি। এক বছরেও আমরা কোনো রায় দেখতে পাইনি। এটি পুরো জাতিকে হতাশ করেছে।”
জুলাই আন্দোলনের সার্বজনীনতা নষ্ট করার জন্য ‘দায়িত্বশীল মহলের বিভাজনমূলক আচরণ’ দেখছেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তার অভিযোগ, এক বছরেও পুলিশের কাঠামোগত সংস্কার হয়নি এবং ‘জুলাই সনদ’ নিয়ে পক্ষপাতমূলক আচরণ চলছে। তিনি সরকারকে হুঁশিয়ার করে বলেন, “সকল অংশীজনের মতামতের ভিত্তিতে যদি জুলাই সনদ প্রণয়ন না হয়, তবে তা মেনে নেওয়া হবে না।”
তিনি আরও বলেন, “জুলাই বিপ্লবে রাজনৈতিক পরিচয় ছিল না। শহীদরা বামপন্থি বা ইসলামীপন্থি নন—তারা জাতির সম্পদ। তাদের পরিচয় দলীয় করলেই সেটি শহীদদের প্রতি অসম্মান হবে। আমরা তাদের সম্মান জানাতে পরিবারে যাচ্ছি, ডকুমেন্টারি ও স্মারকগ্রন্থ তৈরি করছি।”
শেষে তিনি বলেন, “জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। ইনসাফভিত্তিক নতুন বাংলাদেশ গড়তে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবো। মতের পার্থক্য থাকতে পারে, তবে শহীদদের প্রশ্নে কোনও আপস নেই।”
এই সময় ইসলামী ছাত্রশিবিরের রংপুর মহানগর সেক্রেটারি নুরুল হুদাসহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।