জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেছেন, “৫ আগস্টের পর থেকে আজ পর্যন্ত বাংলাদেশের কোনো ব্যক্তি যদি প্রমাণ দিতে পারেন আমি বা আমার সহযোদ্ধারা কোনো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে টাকা নিয়েছি কিংবা দুর্নীতি করেছি, তবে আমরা রাজনীতি থেকে ইস্তফা দিয়ে দেবো।”
শনিবার (১৬ আগস্ট) রাজধানীর বাংলামোটরে ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণপরিষদ নির্বাচন’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
হাসনাত বলেন, “৫ আগস্টে যে গণঅভ্যুত্থান ঘটেছে, তার মূল কারণগুলো বিদ্যমান রেখে আবার যদি কেউ রাষ্ট্র গঠনের চেষ্টা করে, তবে ৫ বা ১০ বছরের মধ্যেই নতুন করে গণপ্রতিরোধের মুখে পড়তে হবে। আমরা ইতিহাস থেকে এরই আলামত দেখতে শুরু করেছি। জনগণের জন্য গঠিত আমলাতন্ত্রও এখন রাজনৈতিক দলের কাছে নতজানু।”
প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও মিডিয়ার ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “যে প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও মিডিয়া একটি ফ্যাসিস্ট সরকার প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করেছে, ৫ আগস্টের পর আবার তারাই রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছে। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে না পারা আমাদের দুর্ভাগ্য।”
নির্বাচন প্রসঙ্গে এনসিপির এই নেতা জানান, “আমাদের সমস্যা নির্বাচন কবে হবে সেটা নয়। নভেম্বরে হোক, ডিসেম্বরে হোক কিংবা জানুয়ারিতে হোক—আমাদের আপত্তি নেই। কিন্তু নির্বাচন হতে হবে ‘রুলস অব দ্য গেম চেঞ্জ’-এর মাধ্যমে। সেটি অবশ্যই গণপরিষদ নির্বাচন হতে হবে। আমরা আবার পুরোনো চুরিতন্ত্রে ফিরতে চাই না।”
তিনি যোগ করেন, “একটি সরকার যদি অর্ধেক চলে পল্টন থেকে, অর্ধেক এফবিসিসিআই থেকে, কিছুটা গণভবন থেকে, আরেকটু বঙ্গভবন থেকে—তাহলে সেই রাষ্ট্রব্যবস্থা টিকবে না। ৫ আগস্টের অভ্যুত্থান প্রমাণ করেছে আগের ব্যবস্থা ব্যর্থ। তাই নতুন সংবিধানই এখন জরুরি।”
হাসনাত আবদুল্লাহ অভিযোগ করেন, গণঅভ্যুত্থানের পর যাকে রাষ্ট্রপ্রধান বানানো হয়েছে তিনি লন্ডনে গিয়ে “সিজদা দিয়েছেন” এবং সেখানেই সরকারকে “বিক্রি করে এসেছেন”। তিনি আরও বলেন, “মিডিয়া এখন রাজনৈতিক দলের কাছে বিক্রি। সচিবালয়ে ৫টায় অফিস শেষ হলেও ৪টা থেকে গুলশান-পল্টনে লাইন শুরু হয়। আগে যেটি হতো ধানমন্ডি ৩২ ও গুলিস্তানে আওয়ামী লীগের অফিসে। এ ধরনের প্রবণতা জাতীয়তাবাদী রাজনীতির জন্যও সুখকর নয়।”
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “নতুন রাজনৈতিক দলকে দমিয়ে রাখার চেষ্টা করে কোনো লাভ নেই। আসন দিয়ে আমাদের কেনা যাবে না। আমরা বিক্রি হতে আসিনি। প্রতিটি রাজনৈতিক দলকে বলছি—আগেই সমঝোতা করে নির্বাচন করলে সেটি আর মধ্যরাতের নির্বাচনের মধ্যে কোনো পার্থক্য থাকবে না। আর আমরা সেই নির্বাচন চাই না।”