ভারতের ‘সিলিকন ভ্যালি’ হিসেবে পরিচিত কর্ণাটকের রাজধানী বেঙ্গালুরু টানা ভারী বৃষ্টিপাতে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। সোমবারের (১৯ মে) মুষলধারে বৃষ্টিতে শহরের বহু রাস্তা পানির নিচে তলিয়ে গেছে। প্রবল জলাবদ্ধতা ও যানজটে শহরের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওইদিন শহরে প্রায় ১০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়, যা ২০১১ সালের পর সর্বোচ্চ। এতে একটি কম্পাউন্ড দেয়াল ধসে ৩৫ বছর বয়সী এক নারীসহ কমপক্ষে তিনজনের প্রাণহানি ঘটে। মৃতদের মধ্যে রয়েছে ১২ বছর বয়সী এক শিশু।
আঞ্চলিক আবহাওয়া দফতরের পরিচালক সিএস পাতিল এই বৃষ্টিকে ‘বিরল’ উল্লেখ করে জানান, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে শহরে প্রাক-বর্ষা মৌসুমি বৃষ্টিপাত আরও বাড়তে পারে। ইতোমধ্যে বেঙ্গালুরুকে উচ্চ সতর্কতায় রাখা হয়েছে।
বহুজাতিক প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর কেন্দ্রবিন্দু হওয়ায়, বহু প্রতিষ্ঠান তাদের কর্মীদের ঘর থেকে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছে। সোমবার সকালে আইটি করিডোরে আই-জেড সফটওয়্যার কোম্পানির প্রাচীর ধসে একজন কর্মী নিহত হন।
বেঙ্গালুরু সিটি কর্পোরেশন জানিয়েছে, তারা ২১০টি বন্যাপ্রবণ এলাকা চিহ্নিত করেছে এবং পরিস্থিতির উন্নয়নে নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করছে। তবে বৃষ্টিপাতজনিত দুর্ভোগ নিয়ে রাজনীতিও শুরু হয়েছে। বিরোধী দল বিজেপি স্থানীয় সরকারের ব্যর্থতা তুলে ধরে জরুরি ত্রাণ তহবিল হিসেবে ১০ বিলিয়ন রুপি বরাদ্দের দাবি জানিয়েছে।
উপ-মুখ্যমন্ত্রী ডি কে শিবকুমার দাবি করেছেন, এই সমস্যাগুলো নতুন নয়, বরং বছরের পর বছর ধরে প্রশাসনিক অবহেলার ফল। বিশেষজ্ঞদের মতে, শহরের হ্রদ ও জলাভূমি ভরাট করে গড়ে ওঠা অপরিকল্পিত নগরায়ণের কারণে বেঙ্গালুরুর বন্যা পরিস্থিতি বারবার ঘুরে আসছে।