ঢাকা ১১:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৪ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বগুড়ায় ধানের পোকামাকড় দমনে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে আলোক ফাঁদ

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ০৬:৫৬:৪৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ৫৫৭ বার পড়া হয়েছে

বগুড়ার নন্দীগ্রামে ধানের পোকামাকড় দমনে কৃষকের কাছে আলোক ফাঁদ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। পোকামাকড় দমনে মাত্রাহীন পরিমাণে কীটনাশক ব্যবহার জীববৈচিত্র্য, পরিবেশ, পশুপাখি ও মানুষের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে। কীটনাশকের এই ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রোপা আমন ধান রক্ষা করতে বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার কৃষকরা আলোক ফাঁদের মতো পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহার করতে শুরু করেছে যা আমন ধানের জমিতে কীটনাশকের ব্যবহার কমাতেও সাহায্য করছে। ফলে এক দিকে কৃষক আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে, অপর দিকে ক্ষতিকর কীটনাশক থেকে জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ রক্ষা পাচ্ছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, আলোক ফাঁদ ধানের পোকা দমনের একটি পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি। এ পদ্ধতিতে সন্ধ্যার পর ধানখেত হতে ৫০ থেকে ১০০ মিটার দূরে ফাঁকা জায়গায় বাঁশের তিনটি খুঁটি ত্রিকোণাকার করে মাটিতে পুঁতে মাথার অংশ একত্রে বেঁধে দিতে হয়। এরপর মাটি থেকে আড়াই থেকে তিন ফুট ওপরে একটি বৈদ্যুতিক বাল্ব জ্বালিয়ে খুঁটির তিন মাথার সংযোগস্থলে রশির সাহায্যে ঝুলিয়ে দিতে হয়। এর নিচে একটি বড় আকারের প্লাস্টিকের গামলা বা পাত্রে ডিটারজেন্ট পাউডার অথবা কেরোসিন মিশ্রিত পানি রাখা হয়। সন্ধ্যার পর মাঠ জুড়ে যখন অন্ধকার নেমে আসতে থাকে তখন আলোক ফাঁদের আলোর ঝলকে আকৃষ্ট হয়ে ধানখেতের বিভিন্ন পোকামাকড় এ পাত্রে চলে আসে। ইদানীং ধানখেতে বৈদ্যুতিক বাল্বের পাশাপাশি সৌর বিদ্যুতের আলোক ফাঁদও ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এভাবে আলোক ফাঁদ ব্যবহার করে ধান ফসলের মাঠে ক্ষতিকর ও উপকারী পোকামাকড়ের উপস্থিতি নির্ণয় করে নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। অতি অল্প খরচে তৈরি আলোক ফাঁদ অন্ধকার রাতে দেখতে দৃষ্টিনন্দনও বটে। এতে খরচ কম হয় এবং পরিবেশবান্ধব। নন্দীগ্রাম উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে ধানের ক্ষতিকর ও উপকারী পোকামাকড়ের উপস্থিতি শনাক্তকরণ ও নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে এ বছর রোপা আমন ধানে আলোক ফাঁদ স্থাপনের এক কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় ইতিমধ্যে এ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে সন্ধ্যায় আমন ধানখেতের পাশে বৈদ্যুতিক ও সৌর বিদ্যুতের আলোক ফাঁদ স্থাপন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। স্ব স্ব ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের সঙ্গে নিয়ে আলোক ফাঁদ স্থাপনের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় নন্দীগ্রাম পৌরসভা ব্লকের কুচাইকুড়ি মাঠে আলোক ফাঁদ তৈরি করেন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শাহারুল ইসলাম। সেসময় স্থানীয় কৃষকরা উপস্থিত ছিলেন। এ বিষয়ে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শাহারুল ইসলাম বলেন, পোকামাকড় ফসলি জমির চরম ক্ষতি করে। তাই পোকামাকড় নির্ণয়ের জন্য আলোক ফাঁদ তৈরি করে পোকামাকড় নির্ণয় এবং তা দমন করার জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা গাজীউল হক বলেন, আলোক ফাঁদ এমন একটি পদ্ধতি আলোক ফাঁদের মাধ্যমে পোকামাকড়ের উপস্থিতি নির্ণয় করা হয়। এই পদ্ধতিতে পোকামাকড় নির্ণয় করলে জমিতে পোকামাকড় সনাক্ত এবং তা দমনে করণীয় বিষয় কৃষকরা জানতে পারে। ইতিমধ্যই এই উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ৫টি ইউনিয়নের প্রতিটি ব্লকে এ কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। আলোক ফাঁদ পদ্ধতি ব্যবহার করে কৃষক ভালো সুফল পাচ্ছে।

 

জনপ্রিয় সংবাদ

নেপালের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ: বিক্ষোভে নিহত ১৯, আহত শতাধিক

বগুড়ায় ধানের পোকামাকড় দমনে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে আলোক ফাঁদ

আপডেট সময় ০৬:৫৬:৪৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বগুড়ার নন্দীগ্রামে ধানের পোকামাকড় দমনে কৃষকের কাছে আলোক ফাঁদ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। পোকামাকড় দমনে মাত্রাহীন পরিমাণে কীটনাশক ব্যবহার জীববৈচিত্র্য, পরিবেশ, পশুপাখি ও মানুষের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে। কীটনাশকের এই ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রোপা আমন ধান রক্ষা করতে বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার কৃষকরা আলোক ফাঁদের মতো পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহার করতে শুরু করেছে যা আমন ধানের জমিতে কীটনাশকের ব্যবহার কমাতেও সাহায্য করছে। ফলে এক দিকে কৃষক আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে, অপর দিকে ক্ষতিকর কীটনাশক থেকে জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ রক্ষা পাচ্ছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, আলোক ফাঁদ ধানের পোকা দমনের একটি পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি। এ পদ্ধতিতে সন্ধ্যার পর ধানখেত হতে ৫০ থেকে ১০০ মিটার দূরে ফাঁকা জায়গায় বাঁশের তিনটি খুঁটি ত্রিকোণাকার করে মাটিতে পুঁতে মাথার অংশ একত্রে বেঁধে দিতে হয়। এরপর মাটি থেকে আড়াই থেকে তিন ফুট ওপরে একটি বৈদ্যুতিক বাল্ব জ্বালিয়ে খুঁটির তিন মাথার সংযোগস্থলে রশির সাহায্যে ঝুলিয়ে দিতে হয়। এর নিচে একটি বড় আকারের প্লাস্টিকের গামলা বা পাত্রে ডিটারজেন্ট পাউডার অথবা কেরোসিন মিশ্রিত পানি রাখা হয়। সন্ধ্যার পর মাঠ জুড়ে যখন অন্ধকার নেমে আসতে থাকে তখন আলোক ফাঁদের আলোর ঝলকে আকৃষ্ট হয়ে ধানখেতের বিভিন্ন পোকামাকড় এ পাত্রে চলে আসে। ইদানীং ধানখেতে বৈদ্যুতিক বাল্বের পাশাপাশি সৌর বিদ্যুতের আলোক ফাঁদও ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এভাবে আলোক ফাঁদ ব্যবহার করে ধান ফসলের মাঠে ক্ষতিকর ও উপকারী পোকামাকড়ের উপস্থিতি নির্ণয় করে নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। অতি অল্প খরচে তৈরি আলোক ফাঁদ অন্ধকার রাতে দেখতে দৃষ্টিনন্দনও বটে। এতে খরচ কম হয় এবং পরিবেশবান্ধব। নন্দীগ্রাম উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে ধানের ক্ষতিকর ও উপকারী পোকামাকড়ের উপস্থিতি শনাক্তকরণ ও নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে এ বছর রোপা আমন ধানে আলোক ফাঁদ স্থাপনের এক কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় ইতিমধ্যে এ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে সন্ধ্যায় আমন ধানখেতের পাশে বৈদ্যুতিক ও সৌর বিদ্যুতের আলোক ফাঁদ স্থাপন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। স্ব স্ব ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের সঙ্গে নিয়ে আলোক ফাঁদ স্থাপনের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় নন্দীগ্রাম পৌরসভা ব্লকের কুচাইকুড়ি মাঠে আলোক ফাঁদ তৈরি করেন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শাহারুল ইসলাম। সেসময় স্থানীয় কৃষকরা উপস্থিত ছিলেন। এ বিষয়ে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শাহারুল ইসলাম বলেন, পোকামাকড় ফসলি জমির চরম ক্ষতি করে। তাই পোকামাকড় নির্ণয়ের জন্য আলোক ফাঁদ তৈরি করে পোকামাকড় নির্ণয় এবং তা দমন করার জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা গাজীউল হক বলেন, আলোক ফাঁদ এমন একটি পদ্ধতি আলোক ফাঁদের মাধ্যমে পোকামাকড়ের উপস্থিতি নির্ণয় করা হয়। এই পদ্ধতিতে পোকামাকড় নির্ণয় করলে জমিতে পোকামাকড় সনাক্ত এবং তা দমনে করণীয় বিষয় কৃষকরা জানতে পারে। ইতিমধ্যই এই উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ৫টি ইউনিয়নের প্রতিটি ব্লকে এ কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। আলোক ফাঁদ পদ্ধতি ব্যবহার করে কৃষক ভালো সুফল পাচ্ছে।