বাংলাদেশের বিরোধী রাজনীতিতে নতুন করে জোটবদ্ধতার আভাস মিললেও জামায়াতে ইসলামীকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে বড় ধরনের মতপার্থক্য। ন্যাশনালিস্ট কনভেনশন পার্টি (এনসিপি) অভ্যন্তরীণ আপত্তির কারণে এখনই জামায়াতের সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতায় যাচ্ছে না। তবে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন, জাতীয় পার্টি ও ১৪ দল নিষিদ্ধ, নির্বাচনী লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড এবং জুলাই গণহত্যার বিচারসহ চার দফা সংস্কার দাবিতে দলটি অবস্থান জানাবে।
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীতে জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন, এনসিপি, এবি পার্টি, গণঅধিকার পরিষদ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, নেজামে ইসলাম পার্টি ও খেলাফত মজলিসের নেতারা বৈঠক করেন। বৈঠকে জুলাই সনদ বাস্তবায়নকে কেন্দ্র করে যুগপৎ আন্দোলনের সম্ভাবনা আলোচনা হলেও চূড়ান্ত সমঝোতায় পৌঁছানো যায়নি।
এনসিপির ভেতরে জামায়াতবিরোধী সুর স্পষ্ট হয়েছে উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ফেসবুক পোস্টে। যুক্তরাজ্য সফররত এই উপদেষ্টা লেখেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন করে “মওদুদীবাদী প্রক্সি দল” এর প্রয়োজন নেই। একই সঙ্গে দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব এবং সদস্য সচিব আখতার হোসেনও জানিয়েছেন, জামায়াতের সঙ্গে কোনো জোট বা যুগপৎ আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নেয়নি এনসিপি।
অন্যদিকে জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলন সংসদের উভয় কক্ষে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতি দাবি করছে। গণঅধিকার পরিষদ শুধু উচ্চকক্ষে পিআরের পক্ষে। তবে বিএনপি এখনো কোনো কক্ষেই পিআরে রাজি নয়; তাদের অবস্থান হলো সংসদ নির্বাচনের পর জুলাই সনদের সংস্কার বাস্তবায়ন।
বৈঠক সূত্র বলছে, আপাতত প্রত্যেক দল নিজেদের দাবিনামা অনুযায়ী কর্মসূচি নেবে। কেউ সমাবেশ করবে, কেউ বিবৃতি দেবে। তবে জুলাই সনদ ছাড়া নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না—এই অবস্থান বৈঠকে জোরালোভাবে উঠে এসেছে।
আজ (রবিবার) খেলাফত মজলিস সংবাদ সম্মেলন করে নিজেদের কর্মসূচি জানাবে। ইসলামী আন্দোলন সোমবার ঘোষণা দিতে পারে। এবি পার্টি তাদের চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জুর দেশে ফেরার পর ১৭ সেপ্টেম্বর কর্মসূচি প্রকাশ করবে।
এই প্রেক্ষাপটে স্পষ্ট হচ্ছে, বিএনপিবিরোধী বৃহত্তর প্ল্যাটফর্ম তৈরির চেষ্টা চললেও জামায়াত ইস্যুতে ঐকমত্যের অভাবেই আপাতত বিভক্ত অবস্থানে আছে বিরোধী দলগুলো।