আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–১-এ সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দেওয়া জবানবন্দিতে আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান অভিযোগ করেছেন, তৎকালীন আওয়ামী লীগ নেতা শেখ ফজলে নূর তাপসসহ কয়েকজন আ.লীগ নেতা বিডিআরের কিছু সদস্যের সঙ্গে যোগসাজশ করে সেনা কর্মকর্তা হত্যাকাণ্ডের পরিস্থিতি তৈরি করেছিলেন। তিনি বলেন, ২০০৯ সালে শেখ হাসিনা দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসার মাত্র দুই মাসের মাথায় পরিকল্পিতভাবে বিডিআর হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়, যাতে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর মনোবল দুর্বল হয় এবং বিদেশি শক্তির ইঙ্গিতে ‘পুতুল সরকার’ কায়েম করা যায়।
মাহমুদুর রহমান আরও জানান, এ পরিকল্পনায় শেখ পরিবারের সদস্য ও শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ সাবেক সংসদ সদস্য তাপস সরাসরি জড়িত ছিলেন। ২০০৮ সালের ডিসেম্বরের নির্বাচনের আগেই বিডিআরের কিছু সদস্যের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে তাপসসহ অন্য নেতারা সেনা কর্মকর্তা হত্যাকাণ্ডের ভূমিকা তৈরি করেন। তার দাবি, ঘটনাটিতে তাপসের জড়িত থাকার যথেষ্ট প্রমাণ থাকলেও তাকে কখনো বিচারের মুখোমুখি করা হয়নি।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের ৪৬তম সাক্ষী হিসেবে এ জবানবন্দি দেন মাহমুদুর। মামুন এ মামলায় রাজসাক্ষী হয়ে জবানবন্দি দিয়েছেন। অপর দুই আসামি হাসিনা ও আসাদুজ্জামান পলাতক রয়েছেন।
জবানবন্দিতে মাহমুদুর দাবি করেন, শেখ হাসিনার সেনাবাহিনীর প্রতি ঘৃণা বাকশাল পতনের সময় থেকে শুরু হয়। সেই সময় মুক্তিযোদ্ধাদের একটি অংশের বিদ্রোহের মধ্য দিয়ে একদলীয় বাকশাল শাসনের পতন হয়েছিল। এ প্রসঙ্গে তিনি অ্যান্থনি মাসকারেনহাসের বই ‘বাংলাদেশ: আ লিগ্যাসি অব ব্লাড’-এর উল্লেখ করে বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান নিজেও বাংলাদেশে পাকিস্তানের মতো দানব সেনাবাহিনী তৈরি করতে চাননি। পারিবারিক সেনাবিদ্বেষের কারণেই শেখ হাসিনা সেনাবাহিনীর মেরুদণ্ড ও মনোবল ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।