বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় মনে করেন, সাম্প্রদায়িক শক্তি দেশের জন্য ফ্যাসিবাদের চেয়ে বেশি ক্ষতিকর। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “জামায়াত-শিবির বহুরূপী রাজনীতি করে। শেখ হাসিনার আমলেও তারা ছাত্রলীগ করেছে। এখন দেশের বহু সেক্টরে তাদের প্রভাব বিস্তার হয়েছে। এভাবেই সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থান ঘটছে।”
গয়েশ্বর বলেন, বিএনপি যেখানে নিজেদের নামেই নির্বাচন করেছে, জামায়াত সেখানে প্রয়োজন অনুযায়ী রূপ বদলেছে। দীর্ঘদিন ছাত্রদল বিশ্ববিদ্যালয়ে সক্রিয় না থেকেও নিজের নামেই দাঁড়িয়েছে—যা ব্যর্থতা নয় বরং বিএনপির অবস্থান স্পষ্ট করেছে।
তিনি আরও দাবি করেন, জামায়াত দেশের বিভিন্ন জায়গায় নিজেদের শক্ত করতে চাইছে, তবে শেষ পর্যন্ত তারা সফল হবে না। বিশেষ করে নারীরা তাদের গ্রহণ করবে না। তাঁর মতে, জিয়াউর রহমান নারীদের শিক্ষা, সেনাবাহিনী ও বিভিন্ন খাতে সুযোগ দিয়েছেন, যা সমাজে পরিবর্তন এনেছে। ফলে কুসংস্কার ও সীমাবদ্ধতার মাধ্যমে নারীর অধিকার কেড়ে নিতে চাইলে তা কেউ মেনে নেবে না।
গয়েশ্বর সতর্ক করে বলেন, “সাম্প্রদায়িক শক্তি যদি মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে, তবে দেশ, সমাজ, নারী সমাজ—কেউই নিরাপদ থাকবে না। সার্বভৌমত্বও হুমকির মুখে পড়বে। ফ্যাসিবাদের চেয়ে সাম্প্রদায়িক শক্তি অনেক বেশি ক্ষতিকর।”
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার প্রসঙ্গে গয়েশ্বর বলেন, কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করে সমস্যার সমাধান হয় না। জনগণের ইচ্ছার ওপরই রাজনৈতিক দল বেঁচে থাকে বা নিঃশেষ হয়। তিনি উদাহরণ টেনে বলেন, একসময় দাপটের দল ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (মাওলানা ভাসানী) বা ইউনাইটেড পিপলস পার্টি আজ আর সাইনবোর্ডেও নেই।
জামায়াত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “জামায়াত ইসলামকে নিষিদ্ধ করে নাই আওয়ামী লীগ? জামায়াত ইসলাম কী চলে গেছে? জামায়াত ইসলাম তো দাপটে আছে, মনে হয় ক্ষমতায় তারাই। যেকোনো প্রশাসনে যাবেন, যেখানেই যাবেন—রদবদলে যাবেন, জামায়াতের কথার বাইরে নড়ে চলে না। স্বাস্থ্য খাত নড়ে চড়ে না, শিক্ষা খাত নড়ে চড়ে না, সব ভিসি জামায়াতের। এই ১৭ বছর এত জামায়াত শেখ হাসিনার আচলের ছায়ায় কিভাবে থাকলো? যেখানে পোস্টমর্টেম করে ছাঁটাই করেছে।”
তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক চর্চা সঠিকভাবে হলে জনগণই ঠিক করবে, কে দেশের জন্য প্রয়োজন আর কে প্রয়োজন নয়।