বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, “এক আবরারের রক্ত থেকে লাখো আবরার জন্ম নেবে। জুলাই অভ্যুত্থানের ভিত্তি তৈরি হয়েছে আবরারদের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে। এ শহীদদের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে গণঅভ্যুত্থানের সিঁড়িগুলো নির্মিত হয়েছে। এই সিঁড়ি তৈরি হয়েছে শাপলা চত্বরে শহীদদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে, অসংখ্য ছাত্র-যুবকের আত্মত্যাগের পথ মাড়িয়ে।”
তিনি আরও বলেন, “১৯৭১ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত রাজনৈতিক ইতিহাসগুলো নির্মোহভাবে বিশ্লেষণ করতে হবে, রচনা করতে হবে। তাহলেই আমরা বুঝতে পারব ভিনদেশি আধিপত্যবাদ কীভাবে আমাদের ওপর প্রভাব বিস্তার করেছে।”
মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি অডিটোরিয়ামে শহীদ আবরার ফাহাদের ষষ্ঠ শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে “মতপ্রকাশ থেকে মৃত্যু: শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফ্যাসিবাদের বিস্তার ও প্রতিরোধ” শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, “দীর্ঘ ৪৭ থেকে ৭১ পর্যন্ত তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের পক্ষে এবং স্বায়ত্তশাসনের পক্ষে যারা সংগ্রাম করেছেন, সেই সংগ্রামের সিঁড়ি একদিন মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত পৌঁছেছিল। সকলের সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের ফলেই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে।”
তিনি উল্লেখ করেন, “পৃথিবীর প্রতিটি জায়গায় বড় দেশগুলোর পরিকল্পনা থাকে কিভাবে পার্শ্ববর্তী ছোট দেশগুলোতে আধিপত্য বিস্তার করা যায়। তারা অনুগত শাসক তৈরি করে শিক্ষা, সংস্কৃতি ও রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। হাসিনার মতো অনুগতদের গদিতে বসিয়ে তারা সফল হয়েছে। শহীদ আবরার ফাহাদ সেই আধিপত্যবাদেরই শিকার।”
নির্বাসিত জীবনে থেকেও আবরার হত্যার ঘটনায় গভীর বেদনা প্রকাশ করে সালাউদ্দিন বলেন, “আমি লক্ষ্য করেছিলাম, বাংলাদেশের তরুণ সমাজের ভেতরে দেশপ্রেম ও প্রতিরোধের আগুন জ্বলছে। যারা সোশ্যাল মিডিয়ায় দেশের পক্ষে কথা বলছে, তারা নতুন প্রজন্মের প্রতীক। তাদের জীবন কেড়ে নিলে এক আবরারের রক্ত থেকে লক্ষ্য আবরার জন্ম নিবে।”
তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “পৃথিবীর তিনটি শক্তি- দুটি আঞ্চলিক ও একটি বৈশ্বিক- এ অঞ্চলে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করছে। কিন্তু এদের প্রত্যেকের দ্বারাই আমাদের স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই দলমত নির্বিশেষে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় এক নীতির ওপর ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।”
সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, “আমাদের নীতি হবে- সবার আগে বাংলাদেশ। এই তিনটি শব্দেই জাতির মুক্তির পথ নিহিত আছে। যদি আমরা এই নীতি প্রতিষ্ঠা করতে পারি, তাহলে জাতি কোনোদিন ভুল পথে পরিচালিত হবে না।”
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শ্যামল মালুম। এ সময় ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদ, ঢাকা মহানগরী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।