রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে ২০২৪–২৫ শিক্ষাবর্ষের নবীন শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক ও ফ্যাসিবাদবিরোধী বক্তব্য দিয়ে আলোচনায় আসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি সাদিক কায়েম। শনিবার (১৫ নভেম্বর) দুপুর ১২টায় রাবি শাখা ইসলামী ছাত্রশিবির আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, বর্তমান সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ‘ফ্যাসিবাদের ভাষায়’ কথা বলছে এবং তাদের ‘দোসররা’ এখনো প্রভাবশালী অবস্থানে রয়েছে।
তিনি অভিযোগ করেন, অতীতে ‘খুনি হাসিনা ও তার দোসরদের’ মতো ভুল যেন কেউ না করে। ইসলামী ছাত্রশিবির কারও ভয় করে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বাংলাদেশে যদি নব্য ফ্যাসিস্ট কেউ হতে চায়, তবে জুলাইয়ের মতো আবারও আমরা রাস্তায় নামব। মানুষের আজাদীর লড়াই কিয়ামত পর্যন্ত চলবে।”
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে তিনি আরও দাবি করেন, “খুনি হাসিনা ও তার দোসরদের বিচার করে দেশে ফিরিয়ে এনে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। আর ফ্যাসিবাদের দোসরদের যেখানে পাওয়া যাবে, আইনের হাতে তুলে দিতে হবে।”
বক্তব্যে তিনি জুলাই আন্দোলনে নিহত রাজশাহী মহানগর শিবির নেতা আলী রায়হানের ‘শহীদত্ব’ উল্লেখ করে বলেন, এর মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ পেলেও প্রকৃত মুক্তি এখনও আসেনি। তিনি অভিযোগ করেন, পূর্ববর্তী সময়ে ‘গণরুম-গেস্টরুম কালচার’ চালু রেখে ক্যাম্পাসে ‘কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের মতো পরিবেশ’ তৈরি করা হয়েছিল এবং ইসলামচর্চা করতেও শিক্ষার্থীরা বাধার মুখে পড়তেন।
তিনি আরও বলেন, “আজ শহীদদের আকাঙ্ক্ষা ভুলে গিয়ে ছাত্রসংগঠনগুলোতে দাম্ভিকতা দেখা দিচ্ছে। তাই দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও জুলাইয়ের স্পিরিট ধারণ করে প্রতিবাদ–প্রতিরোধ চালিয়ে যেতে হবে।”
প্রায় সাড়ে চার দশক পর রাবি ক্যাম্পাসে সরাসরি ছাত্রশিবিরের নবীনবরণ অনুষ্ঠিত হলো। সর্বশেষ ১৯৮২ সালের ১১ মার্চ ক্যাম্পাসে এমন আয়োজন হয়েছিল। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মাঈন উদ্দীন। বিশেষ অতিথি ছিলেন ডাকসু ও চাকসুর ভিপি সাদিক কায়েম এবং ইব্রাহিম হোসেন রনি। প্রধান আলোচক ছিলেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে প্রায় সাড়ে তিন হাজার নবীন শিক্ষার্থী অংশ নেন।

























