জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পুলিশের সাবেক আইজিপিসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে আজ রায় ঘোষণা করবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের প্যানেল সোমবার রায় ঘোষণা করবেন।
এটি জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত অপরাধের প্রথম কোনো মামলার রায়। রায়কে ঘিরে রাজধানীসহ সারাদেশে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট এলাকা, হাইকোর্ট, ট্রাইব্যুনালের ভেতর-বাহির, শাহবাগ, মিরপুর, মোহাম্মদপুর, কারওয়ানবাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে মোতায়েন রয়েছে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি এবং সেনাবাহিনীর সদস্যরা। দোয়েল চত্বর–শিক্ষাভবন সড়কে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে এবং সন্দেহভাজনদের তল্লাশি বাড়ানো হয়েছে।
যদিও কড়াকড়ি নিরাপত্তার মধ্যে রাজধানীতে স্বাভাবিকভাবে চলছে অফিস-আদালত, গণপরিবহন এবং মেট্রোরেল।
আজকের রায় বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি), রয়টার্স এবং ট্রাইব্যুনালের ফেসবুক পেজে সরাসরি প্রচার করা হবে। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বড় পর্দায় লাইভ দেখানোর ব্যবস্থাও করেছে।
রাষ্ট্রপক্ষ বলছে, শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে আনা পাঁচটি অভিযোগই সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে এবং তারা সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড প্রত্যাশা করছে। অপরদিকে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন আশা প্রকাশ করেছেন, তার মক্কেলরা খালাস পাবেন।
মির্জা ফখরুলের দাবি
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর রায়ের আগে স্বচ্ছতা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমরা পূর্ণ ন্যায়বিচার চাই।”
প্রসিকিউশনের আবেদন
প্রসিকিউশন জানিয়েছে, দোষী সাব্যস্ত হলে আসামিদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে ভিকটিম পরিবারের মধ্যে বিতরণের আবেদন তারা ট্রাইব্যুনালে করেছে।
বিচার প্রক্রিয়ার অগ্রগতি
গত বছরের ১৪ আগস্ট অভিযোগ গ্রহণের পর গত ১০ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে বিচার শুরু হয়। মোট পাঁচটি অভিযোগের মধ্যে রয়েছে এক হাজার ৪০০ জনকে হত্যা, ২৫ হাজার মানুষকে অঙ্গহানি, উস্কানি, প্ররোচনা এবং ‘সুপিরিয়র কমান্ড রেসপনসিবিলিটি’। প্রায় তিন মাসে বিচার কার্যক্রম সম্পন্ন হয় এবং ২৩ অক্টোবর যুক্তিতর্ক শেষ হয়।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সতর্কবার্তা
বরিশালে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, রায় যা-ই হোক, তা কার্যকর করা হবে। রায়কে কেন্দ্র করে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা হলে কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে।

























