জুলাই-অগাস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। রায় ঘোষণা করেন চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল। অপর দুই সদস্য ছিলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
রায়ের দিনটি দুর্ভাগ্যবশত শেখ হাসিনার ৫৮তম বিবাহবার্ষিকী, ১৯৬৭ সালে তিনি পরমাণু বিজ্ঞানী এম এ ওয়াজেদ মিয়া এর সঙ্গে বিয়ে করেছিলেন। দম্পতির দুই সন্তান রয়েছে—সজীব ওয়াজেদ জয় (জন্ম ১৯৭১) এবং সায়মা ওয়াজেদ পুতুল (জন্ম ১৯৭২)।
২০২৪ সালের জুলাই-অগাস্টে ছাত্রদের কোটা সংস্কার আন্দোলন গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয়ার সময় পুলিশের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও অঙ্গসংগঠনরা হামলা চালায়। আন্দোলনের ফলে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পদত্যাগ করে শেখ হাসিনা দেশ ছাড়তে বাধ্য হন।
রায়ে উল্লেখ করা হয়, শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান পলাতক, আর সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন একমাত্র গ্রেপ্তারকৃত। রাজসাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেওয়ায় তাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মামলার ৫টি আনুষ্ঠানিক অভিযোগ ছিল—
-
১৪ জুলাই গণভবনে উসকানিমূলক বক্তব্য প্রদান
-
হেলিকপ্টার, ড্রোন ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের নির্মূলের নির্দেশ
-
রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদকে হত্যা
-
রাজধানীর চানখারপুলে ছয়জনকে হত্যা
-
আশুলিয়ায় ছয়জনকে পুড়িয়ে হত্যা
মামলায় ৫৪ জন সাক্ষী জবানবন্দি দিয়েছেন। প্রসিকিউশন ও রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম মামলায় মৃত্যুদণ্ডের দাবি করেন। যুক্তিতর্ক শেষ হয় ২৩ অক্টোবর।
রায় ঘোষণার দিন দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে ৪৫৩ পৃষ্ঠার প্রথম অংশ পড়া শুরু হয়। দুই ঘণ্টা ১০ মিনিটের সংক্ষিপ্ত রায় শেষে দুপুর ২টা ৫০ মিনিটে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার ঘোষণা দেন ট্রাইব্যুনাল।


























