এবার পাকিস্তানে ভারী বৃষ্টি ও তীব্র ঝড়ের কারণে অন্তত ১৯ জন প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ৯০ জন। দেশটির পাঞ্জাব প্রদেশে এই হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। এর ফলে সেখানে সড়ক ও আকাশপথে যোগাযোগ ব্যাহত হয়েছে, বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে এবং বিভিন্ন অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
রোববার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন। তবে দেশটির প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ বলছে, পাঞ্জাবের বিভিন্ন অঞ্চলে মুষলধারে বৃষ্টিপাতে অন্তত ১৩ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত ও ৯২ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় পাঞ্জাবের রিলিফ কমিশনার নাবিল জাভেদ বলেছেন, ঝড়ে আহতদের চিকিৎসা সহায়তা প্রদান করা হবে।
প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমটি জানায়, বাড়ির দেয়াল ও ছাদ ধসে, গাছ ও সোলার প্যানেল পড়ে এসব প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। লাহোরে অন্তত দুই ডজন সোলার প্যানেল ও বিলবোর্ড পড়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। পাঞ্জাব ছাড়াও ইসলামাবাদে প্রবল বৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গে দমকা হাওয়া ও শিলাবৃষ্টি হয়, ফলে নিচু এলাকাগুলোতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয় এবং বহু গাছ পড়ে যায়। খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হলেও কোনো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি।
মুলতানের বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি (মেপকো) জানায়, ঝড়বৃষ্টির কারণে দক্ষিণ পাঞ্জাবের বিভিন্ন জেলায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট হয়। মুলতান, খানেওয়াল, ভেহারি ও সাহিওয়ালে সাময়িক ব্ল্যাকআউট হয়। খাইবার পাখতুনখোয়ায় পেশোয়ার ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি (পেসকো) জানায়, ১১৩টির বেশি ফিডার ট্রিপ করে। পেশোয়ার, মারদান, সোয়াবি, সোয়াত ও অ্যাবোটাবাদে বিদ্যুৎ বিভ্রাট হয়। পেশোয়ার ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকে।
সোয়াতের মিংওরা, আমানকোট ও কামবারে জলাবদ্ধতা হয়, শিক্ষার্থীদের অন্ধকারে পরীক্ষা দিতে হয়। আম্বার ও প্যান্ডিয়ালি এলাকায় শিলাবৃষ্টিতে কৃষকেরা ক্ষতির মুখে পড়েন। এসময় ফ্লাইট চলাচল ব্যাহত হয়েছে বলেও জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম ডন। পরে আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে বিমান চলাচল পুনরায় শুরু হয়।
এদিকে পাকিস্তান আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ রোববারও পাঞ্জাব ও খাইবার পাখতুনখোয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে ঝড়বৃষ্টি ও শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। লাহোর, রাওয়ালপিন্ডি, মুলতান, ফয়সালাবাদ, শিয়ালকোট, পেশোয়ার ও মারদানে বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।