ঢাকা ০৯:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫, ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ফিলিস্তিনি বন্দিদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে ইসরায়েলি সেনারা

এবার গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের টানা ১৯ মাসের সামরিক আগ্রাসন ভয়াবহ মাত্রা ধারণ করেছে। এই আগ্রাসনের এক নিষ্ঠুর রূপ তুলে ধরেছে আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)। তাদের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, কীভাবে ইসরাইলি সেনাবাহিনী নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরাইলি সেনারা অভিযান চালানোর সময় ফিলিস্তিনিদের জিম্মি করে বিভিন্ন টানেল ও ভবনে ঢুকতে বাধ্য করে। এমনকি অনেক সময় নিরীহ ফিলিস্তিনিদের শরীরে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর পোশাক পরিয়ে দিয়ে হামাসের গোপন অবস্থান শনাক্ত করার কাজে ব্যবহার করা হয়। উদ্দেশ্য একটাই, হামাস যেন ভুলবশত সেই ব্যক্তিকে সেনা ভেবে গুলি চালায় এবং তাদের অবস্থান প্রকাশ পায়।

এদিকে এক ভুক্তভোগী ফিলিস্তিনি, আবু হামদানের অভিজ্ঞতা তুলে ধরা হয় এপি-র প্রতিবেদনে। তিনি জানান, তাঁকে ইসরাইলি সেনার পোশাক পরিয়ে হামলার মুখে ঠেলে দেওয়া হতো। এতে তাঁর জীবন ঝুঁকিতে থাকত এবং তাঁকে কার্যত একটি বেঁচে থাকা ক্যামেরা হিসেবে ব্যবহার করা হতো।

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, এই প্রক্রিয়াকে ইসরাইলি বাহিনী ‘মস্কুইটো প্রোটোকল’ নামে চিহ্নিত করেছে। বন্দিদের দিয়ে বিভিন্ন জায়গা স্কাউট করানো হতো, কখনো কখনো আট ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে হাঁটানো হতো তাদের। একেকটি অভিযানে ছয়জন পর্যন্ত মানবঢাল হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ার উদাহরণও উঠে এসেছে রিপোর্টে। এপি জানিয়েছে, ইসরাইলি বাহিনী এসব মানবঢালের শরীরে ক্যামেরা বসিয়ে সরাসরি কমান্ড সেন্টারে ভিডিও পাঠাত। এর মাধ্যমে প্রতিপক্ষের অবস্থান সম্পর্কে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হতো।

উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন অনুযায়ী, যেকোনো সামরিক অভিযানে মানবঢাল ব্যবহার কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। নিরীহ সাধারণ মানুষকে এভাবে যুদ্ধের ঢাল বানানো আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। ইসরাইলি সেনাবাহিনী যদিও জানিয়েছে যে এসব অভিযোগ তদন্তাধীন, তবে বাস্তব চিত্রে ভয়াবহ এক মানবিক বিপর্যয় স্পষ্ট হয়ে উঠছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো ইতোমধ্যেই এই অনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি তুলেছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

কুষ্টিয়া-৩ আসনে জামায়াতের এমপি প্রার্থী মুফতি আমীর হামজা

ফিলিস্তিনি বন্দিদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে ইসরায়েলি সেনারা

আপডেট সময় ০১:৫৪:০৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫

এবার গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের টানা ১৯ মাসের সামরিক আগ্রাসন ভয়াবহ মাত্রা ধারণ করেছে। এই আগ্রাসনের এক নিষ্ঠুর রূপ তুলে ধরেছে আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)। তাদের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, কীভাবে ইসরাইলি সেনাবাহিনী নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরাইলি সেনারা অভিযান চালানোর সময় ফিলিস্তিনিদের জিম্মি করে বিভিন্ন টানেল ও ভবনে ঢুকতে বাধ্য করে। এমনকি অনেক সময় নিরীহ ফিলিস্তিনিদের শরীরে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর পোশাক পরিয়ে দিয়ে হামাসের গোপন অবস্থান শনাক্ত করার কাজে ব্যবহার করা হয়। উদ্দেশ্য একটাই, হামাস যেন ভুলবশত সেই ব্যক্তিকে সেনা ভেবে গুলি চালায় এবং তাদের অবস্থান প্রকাশ পায়।

এদিকে এক ভুক্তভোগী ফিলিস্তিনি, আবু হামদানের অভিজ্ঞতা তুলে ধরা হয় এপি-র প্রতিবেদনে। তিনি জানান, তাঁকে ইসরাইলি সেনার পোশাক পরিয়ে হামলার মুখে ঠেলে দেওয়া হতো। এতে তাঁর জীবন ঝুঁকিতে থাকত এবং তাঁকে কার্যত একটি বেঁচে থাকা ক্যামেরা হিসেবে ব্যবহার করা হতো।

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, এই প্রক্রিয়াকে ইসরাইলি বাহিনী ‘মস্কুইটো প্রোটোকল’ নামে চিহ্নিত করেছে। বন্দিদের দিয়ে বিভিন্ন জায়গা স্কাউট করানো হতো, কখনো কখনো আট ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে হাঁটানো হতো তাদের। একেকটি অভিযানে ছয়জন পর্যন্ত মানবঢাল হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ার উদাহরণও উঠে এসেছে রিপোর্টে। এপি জানিয়েছে, ইসরাইলি বাহিনী এসব মানবঢালের শরীরে ক্যামেরা বসিয়ে সরাসরি কমান্ড সেন্টারে ভিডিও পাঠাত। এর মাধ্যমে প্রতিপক্ষের অবস্থান সম্পর্কে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হতো।

উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন অনুযায়ী, যেকোনো সামরিক অভিযানে মানবঢাল ব্যবহার কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। নিরীহ সাধারণ মানুষকে এভাবে যুদ্ধের ঢাল বানানো আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। ইসরাইলি সেনাবাহিনী যদিও জানিয়েছে যে এসব অভিযোগ তদন্তাধীন, তবে বাস্তব চিত্রে ভয়াবহ এক মানবিক বিপর্যয় স্পষ্ট হয়ে উঠছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো ইতোমধ্যেই এই অনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি তুলেছে।