জীবন মৃত্যুর সঙ্গে কষ্টকর লড়াইয়ে, এক, দুই, তিন গুনেগুনে অন্তিম মুহূর্তগুলো কাটাচ্ছেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া! লন্ডনে অবস্থানকারী তাঁর একমাত্র জীবিত সন্তান এমন পরিস্থিতিতেও কেন দেশে ফিরছেন না?
দেশব্যাপী প্রবলভাবে উত্থাপিত সেই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন বিএনপি প্রধান তারেক রহমান। আজ শনিবার বাংলাদেশ সময় সকাল পৌনে ৯টার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে তিনি লিখেছেন, দেশে আসার সুযোগ তাঁর জন্য ‘অবারিত নয়’ এবং দেশ-ফেরার সিদ্ধান্ত তিনি ’এককভাবে’ নিয়ন্ত্রণ করেন না। এমন মন্তব্য জনমনে গুরুতর প্রশ্ন, গভীর বিষ্ময় ও প্রবল হতাশার সৃষ্টি করছে।
রহস্যেঘেরা এমন একটি জবাব শোনার জন্য কেউই প্রস্তুত ছিল না। জনগণের মধ্যে আশংকা দেখা দিয়েছে, কে, কারা, কোন প্রতিষ্ঠান বা কোন বিদেশি শক্তি বাংলাদেশ নিয়ে খেলছে! বিস্মিত, বিচলিত, বিহবল জনমনে আরো যে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে তা হচ্ছে, তারেক রহমানের পক্ষে বা তাঁর স্বার্থানুকূল সিদ্ধান্তসমূহ কে বা কারা নেয়?
তাঁর জীবনের সবচেয়ে বড় ব্যক্তিগত, মানবিক ও রাজনৈতিক মুহূর্তে যদি তিনি নিজ সিদ্ধান্তের মালিক না হন, তবে সেই সিদ্ধান্ত কে বা কার হাতে? কোন শক্তি ওনাকে দেশে ফিরতে বাধা দিচ্ছে? অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, রাষ্ট্রীয় কোন প্রতিষ্ঠান, আদালত, নিজ দলের ভেতরের কোন পক্ষ, না অন্য কোন রাষ্ট্র? নাকি তিনি কোনো বিদেশি শক্তির চাপে নত থাকতে বাধ্য হচ্ছেন?
বাংলাদেশের মানুষের সেই নির্মম সত্য জানার অধিকার রয়েছে। জনগণ স্পষ্ট উত্তর চায়, এই অন্তিম মুহূর্তে সোজা-সাপটা জবাব দিতে হবে। এড়িয়ে যাওয়া বা অস্পষ্ট বচন, গুপ্তরহস্যমূলক কথা বলা চলবে না।
একজন নেতা যদি নিজের মৃত্যুপথযাত্রী মায়ের জীবনের শেষ মুহূর্তগুলোতে তাঁর শয্যা পাশে থাকতে অপারগ হন, যদি সবচেয়ে আপন সিদ্ধান্তও তিনি নিজে নিতে না পারেন, তাহলে দেশমাতৃকার সংকটকালে তাঁর সিদ্ধান্তকে কোনো অদৃশ্য শক্তি নিয়ন্ত্রণ করবে না—এই বিশ্বাস দেশবাসী কোথায় খুঁজে পাবে?
যিনি নিজের প্রিয়তম মায়ের জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে তাঁর কাছে ফেরার সাহস দেখাতে পারেন না, এইটুকু স্বাধীনতা বা সামর্থ যার নাই; তিন দিক থেকে শত্রুরাষ্ট্র ইন্ডিয়া ঘেরা এই বাংলাদেশি জাতিকে তিনি নেতৃত্ব দেবেন কী করে, কীভাবে! যাঁর সিদ্ধান্ত গ্রহণ ক্ষমতাই অন্য কারো ওপর নির্ভরশীল, তিনি কী ভাবে এই দেশকে আধুনিক, অগ্রসর ও সমৃদ্ধির অভিমুখে পরিচালিত করতে পারবেন।




















