আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ সমমনা আটটি ইসলামি দলের ঐক্য আরও জোরদার হয়েছে। বিভিন্ন দাবিতে যুগপৎ ও সম্মিলিত আন্দোলনের পর এবার নির্বাচনি সমঝোতার দিকে এগোচ্ছে দলগুলো। তাদের লক্ষ্য— ‘ইসলামি দলের ভোট এক বাক্সে’ এনে সব আসনে একক প্রার্থী দাঁড় করানো।
বিভাগীয় মহাসমাবেশ শেষ হলে আসন সমঝোতা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে জোট সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। এর আগে প্রতিটি দল মাঠপর্যায়ে প্রার্থীদের অবস্থান জরিপ করছে এবং কোন দল কতটি আসন চাইবে—তার তালিকা প্রস্তুত করছে। তবে বেশি আসনের দাবি নিয়ে কিছু জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা থাকলেও নেতারা জানিয়েছেন, “বৃহত্তর স্বার্থে সর্বোচ্চ ছাড়” দেওয়ার মানসিকতা রয়েছে।
জামায়াত–ইসলামী আন্দোলনের নেতৃত্বে আটদলের সমন্বয়
জোটে এখন রয়েছে—
জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত মজলিস, খেলাফত আন্দোলন, নেজামে ইসলাম পার্টি, জাগপা এবং বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি (বিডিপি)। দল সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলন–দুই প্রধান দলই মাঠ জরিপে জোর দিচ্ছে। জরিপে এগিয়ে থাকা প্রার্থীকেই জোটের একক প্রার্থী করতে আগ্রহী বলে জানান জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন বলেন, “মাঠের গ্রহণযোগ্যতা দেখে একক প্রার্থী ঠিক করা হবে। আমাদের সর্বোচ্চ ছাড়ের মানসিকতা আছে।”
জামায়াতের প্রার্থী তালিকা
দলটি আগেই দেশের প্রায় সব আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করে রেখেছে। শীর্ষ নেতাদের মধ্যে—
-
আমির ডা. শফিকুর রহমান: ঢাকা–১৫
-
নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান: রাজশাহী–১
-
সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার: খুলনা–৫
-
ড. হামিদুর রহমান আযাদ: কক্সবাজার–২
-
নুরুল ইসলাম বুলবুল: চাঁপাইনবাবগঞ্জ–৩
-
মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন: সিলেট–৬
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ
সব আসনেই হাতপাখার প্রার্থী ঘোষণা থাকলেও শতাধিক আসনে বেশি তৎপরতা, বাকিগুলো সমঝোতার জন্য খোলা থাকবে।
শীর্ষ প্রার্থীদের মধ্যে—
-
নায়েবে আমির মুফতি ফয়জুল করীম: বরিশাল–৫
-
মহাসচিব মাওলানা ইউনুস আহমদ: খুলনা–৪
-
প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা মোসাদ্দেক বিল্লাহ: ঢাকা–৪
-
গাজী আতাউর রহমান: গাজীপুর–৫
-
শেখ ফজলে বারী মাসউদ: ঢাকা–১১
চরমোনাই পীর মুফতি রেজাউল করীম প্রার্থী হচ্ছেন না।
খেলাফত মজলিস (দেয়াল ঘড়ি)
২৫৮ আসনে প্রার্থী ঘোষণা। সমঝোতার ক্ষেত্রে অবস্থান ভালো এমন আসনগুলোতে জোর দেবে দলটি।
আমির মাওলানা আব্দুল বাছিত আজাদ: হবিগঞ্জ–২
মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের: হবিগঞ্জ–৪
সাখাওয়াত হোসাইন: খুলনা–৪
মুনতাসির আলী: সিলেট–২
ড. ফয়সাল: ফেনী–২
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস (রিকশা)
২৭৪ আসনে প্রার্থী ঘোষণা। সমঝোতার আলোচনার জন্য ১০০ আসন চিহ্নিত করেছে।
আমির মামুনুল হক: প্রার্থিতা এখনো ঘোষিত নয়—
ঢাকা–১৩, ঢাকা–৭, বাগেরহাট–১ আসন তার জন্য খালি।
অন্যদের মধ্যে—
-
শাহিনুর পাশা: সুনামগঞ্জ–৩
-
জালালুদ্দীন আহমদ: শরিয়তপুর–১
-
হেদায়াতুল্লাহ হাদী: কিশোরগঞ্জ–১
-
ফয়সাল আহমদ: ঢাকা–৮
খেলাফত আন্দোলন (বটগাছ)
কয়েকটি আসনে প্রস্তুতি; সমঝোতার অপেক্ষা।
আমির হাবিবুল্লাহ মিয়াজী: ঢাকা–৭
মহাসচিব ইয়ুসুফ সাদেক: ফরিদপুর–১
মুজিবুর রহমান হামিদী: ব্রাহ্মণবাড়িয়া–৩ বা ৫
সুলতান মহিউদ্দিন: কুমিল্লা–১
নেজামে ইসলাম পার্টি
দলীয় আমির নির্বাচন করছেন না।
অন্যান্য শীর্ষ নেতারা—
-
মুসা বিন ইযহার: চট্টগ্রাম–১৬
-
আব্দুল মাজেদ আতহারী: কক্সবাজার–৩
-
আজিজুল হক ইসলামাবাদী: চট্টগ্রাম–১২
জাগপা
প্রাথমিকভাবে ৭ আসন; সমঝোতায় কমবে।
রাশেদ প্রধান চান— পঞ্চগড়–১ বা ২
সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন: দিনাজপুর–৩
বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি (বিডিপি) – ফুলকপি প্রতীক
দুটি আসনে প্রার্থী—
-
চেয়ারম্যান এ কে এম আনোয়ারুল ইসলাম: ময়মনসিংহ–৯
-
মহাসচিব নিজামুল হক নাঈম: ভোলা–৩




















