ঢাকা ০২:৩৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জুলাইয়ের ঘটনার পর বিএনপি কোন ইশারায় আবার পুরনো বিভাজনের রাজনীতিতে ফিরে গেল

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ১২:১১:০৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৫
  • ৫৫৮ বার পড়া হয়েছে

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেছেন, জুলাইয়ের ঘটনার পর বিএনপি কোন ইশারায় আবার পুরনো বিভাজনের রাজনীতিতে ফিরে গেল—তা তাঁর বোধগম্য নয়। রবিবার (৩০ নভেম্বর) নিজের ফেসবুক আইডিতে দেওয়া দীর্ঘ এক পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন।

পোস্টে তিনি বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সম্পর্কে ছাত্রনেতা ও সচেতন নাগরিক হিসেবে যতটুকু জানার সুযোগ হয়েছে, তাতে তিনি মুগ্ধ। কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন—জিয়া বিভাজনের দেয়াল ভেঙে জাতীয় ঐক্যের সূচনা করেছিলেন; আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে তাঁর দৃঢ় অবস্থান এবং পার্বত্য অঞ্চলে কৌশলী নীতি ছিল দূরদর্শী নেতৃত্বের পরিচয়।

জাহিদুল ইসলাম দাবি করেন, শৈশব থেকেই বেগম খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনাকে দেখে বড় হয়েছেন। তাঁর ভাষায়, বেগম জিয়ার অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল নম্রতা ও রাষ্ট্রীয় স্বার্থে আপসহীন অবস্থান, বিপরীতে শেখ হাসিনা ছিলেন সম্পূর্ণ ভিন্ন চরিত্রের। তিনি বলেন, ১/১১ থেকে ২০২৫ পর্যন্ত বেগম জিয়ার দৃঢ়তার পরিচয় দেখা গেছে; তিনি নির্যাতন সহ্য করলেও ফ্যাসিবাদ বা কোনো আধিপত্যবাদী শক্তির কাছে মাথা নত করেননি।

বেগম জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে দলমত নির্বিশেষে মানুষের দোয়া করার বিষয়টিকে ‘দুর্লভ ঐতিহাসিক ঘটনা’ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবর্তিত এই সময়ে তাঁর চিন্তা ও পরামর্শ জাতির জন্য খুব জরুরি।

তারেক রহমানকে স্মার্ট ও সম্ভাবনাময় নেতা হিসেবে উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন, হাওয়া ভবন–দুর্নীতির সমালোচনা থাকলেও তিনি আশা করেছিলেন ৩৬ জুলাই পরবর্তী বাংলাদেশে তারেক রহমান নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও উদারতা প্রদর্শন করবেন। কিন্তু গত দেড় বছরে বিএনপির রাজনৈতিক আচরণ সেই প্রত্যাশার সঙ্গে মেলে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।

শিবির সভাপতি অভিযোগ করেন, ছাত্রদল–শিবিরের মধ্যে অভ্যুত্থান-পূর্ব ও পরবর্তী সময়ের যে অদৃশ্য দূরত্ব তৈরি হয়েছে, তা কার ইচ্ছায় হয়েছে তিনি নিশ্চিত নন। তাঁর দাবি—জামায়াত সর্বোচ্চ ছাড় দিয়ে বিএনপির সঙ্গে সম্পর্ক অটুট রাখার চেষ্টা করলেও বিএনপি বরং তুচ্ছতাচ্ছিল্য দেখিয়েছে এবং নিজেদের বাইরে অন্য কোনো দলকে জাতীয় রাজনীতির অংশ হিসেবে মানতে চায় না।

তিনি বলেন, বিএনপি আওয়ামী লীগের মতোই আবার ‘৭১–৭১–৭১’ জিকির তুলেছে, যা আদর্শিক বয়ানের জায়গা থেকে এই প্রজন্ম ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছে। তাঁর প্রশ্ন—তারেক রহমান কি এসব বোঝেন না?

২০১৫ সালের কারাজীবনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি লেখেন, আমদানি সেল থেকে কারা হাসপাতালে নেওয়ার সময় গুলিবিদ্ধ বন্দিদের ভয়াবহ অবস্থা দেখেছেন। তাঁর দাবি, গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ ছাত্রশিবির ও জামায়াতের ওপর স্টিমরোলার চালালেও বিএনপিও নানা সময়ে নেতাকর্মীদের দুর্বিষহ নির্যাতনের মুখে ফেলেছে—এসব ইতিহাস তাঁর জানা।

তবে তিনি বলেন, তারেক রহমানের ওপর তিনি আশাহত হতে চান না। তিনি চান, তারেক রহমান কারও শৃঙ্খলে আবদ্ধ না থেকে নিজের স্বকীয়তা ও পিতামাতার আদর্শ ধারণ করে রাজনীতি করুন। তাঁর দাবি—ছাত্রশিবিরসহ দেশপ্রেমিক শক্তিগুলো তাঁকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।

শেষে তিনি সতর্ক করেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়া ও বেগম জিয়ার আদর্শ থেকে বিচ্যুত হলে বিএনপি টিকতে পারবে না। আর বাম বা কথিত বন্ধু রাষ্ট্রগুলো কখনোই দেশের উপকার করেনি—বরং বিভাজন ও ইসলামবিদ্বেষই ছিল তাদের প্রধান এজেন্ডা বলে মন্তব্য করেন তিনি।

জনপ্রিয় সংবাদ

প্রস্তুত তারেক রহমানের বাসভবন ও অফিস

জুলাইয়ের ঘটনার পর বিএনপি কোন ইশারায় আবার পুরনো বিভাজনের রাজনীতিতে ফিরে গেল

আপডেট সময় ১২:১১:০৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৫

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেছেন, জুলাইয়ের ঘটনার পর বিএনপি কোন ইশারায় আবার পুরনো বিভাজনের রাজনীতিতে ফিরে গেল—তা তাঁর বোধগম্য নয়। রবিবার (৩০ নভেম্বর) নিজের ফেসবুক আইডিতে দেওয়া দীর্ঘ এক পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন।

পোস্টে তিনি বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সম্পর্কে ছাত্রনেতা ও সচেতন নাগরিক হিসেবে যতটুকু জানার সুযোগ হয়েছে, তাতে তিনি মুগ্ধ। কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন—জিয়া বিভাজনের দেয়াল ভেঙে জাতীয় ঐক্যের সূচনা করেছিলেন; আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে তাঁর দৃঢ় অবস্থান এবং পার্বত্য অঞ্চলে কৌশলী নীতি ছিল দূরদর্শী নেতৃত্বের পরিচয়।

জাহিদুল ইসলাম দাবি করেন, শৈশব থেকেই বেগম খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনাকে দেখে বড় হয়েছেন। তাঁর ভাষায়, বেগম জিয়ার অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল নম্রতা ও রাষ্ট্রীয় স্বার্থে আপসহীন অবস্থান, বিপরীতে শেখ হাসিনা ছিলেন সম্পূর্ণ ভিন্ন চরিত্রের। তিনি বলেন, ১/১১ থেকে ২০২৫ পর্যন্ত বেগম জিয়ার দৃঢ়তার পরিচয় দেখা গেছে; তিনি নির্যাতন সহ্য করলেও ফ্যাসিবাদ বা কোনো আধিপত্যবাদী শক্তির কাছে মাথা নত করেননি।

বেগম জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে দলমত নির্বিশেষে মানুষের দোয়া করার বিষয়টিকে ‘দুর্লভ ঐতিহাসিক ঘটনা’ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবর্তিত এই সময়ে তাঁর চিন্তা ও পরামর্শ জাতির জন্য খুব জরুরি।

তারেক রহমানকে স্মার্ট ও সম্ভাবনাময় নেতা হিসেবে উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন, হাওয়া ভবন–দুর্নীতির সমালোচনা থাকলেও তিনি আশা করেছিলেন ৩৬ জুলাই পরবর্তী বাংলাদেশে তারেক রহমান নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও উদারতা প্রদর্শন করবেন। কিন্তু গত দেড় বছরে বিএনপির রাজনৈতিক আচরণ সেই প্রত্যাশার সঙ্গে মেলে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।

শিবির সভাপতি অভিযোগ করেন, ছাত্রদল–শিবিরের মধ্যে অভ্যুত্থান-পূর্ব ও পরবর্তী সময়ের যে অদৃশ্য দূরত্ব তৈরি হয়েছে, তা কার ইচ্ছায় হয়েছে তিনি নিশ্চিত নন। তাঁর দাবি—জামায়াত সর্বোচ্চ ছাড় দিয়ে বিএনপির সঙ্গে সম্পর্ক অটুট রাখার চেষ্টা করলেও বিএনপি বরং তুচ্ছতাচ্ছিল্য দেখিয়েছে এবং নিজেদের বাইরে অন্য কোনো দলকে জাতীয় রাজনীতির অংশ হিসেবে মানতে চায় না।

তিনি বলেন, বিএনপি আওয়ামী লীগের মতোই আবার ‘৭১–৭১–৭১’ জিকির তুলেছে, যা আদর্শিক বয়ানের জায়গা থেকে এই প্রজন্ম ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছে। তাঁর প্রশ্ন—তারেক রহমান কি এসব বোঝেন না?

২০১৫ সালের কারাজীবনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি লেখেন, আমদানি সেল থেকে কারা হাসপাতালে নেওয়ার সময় গুলিবিদ্ধ বন্দিদের ভয়াবহ অবস্থা দেখেছেন। তাঁর দাবি, গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ ছাত্রশিবির ও জামায়াতের ওপর স্টিমরোলার চালালেও বিএনপিও নানা সময়ে নেতাকর্মীদের দুর্বিষহ নির্যাতনের মুখে ফেলেছে—এসব ইতিহাস তাঁর জানা।

তবে তিনি বলেন, তারেক রহমানের ওপর তিনি আশাহত হতে চান না। তিনি চান, তারেক রহমান কারও শৃঙ্খলে আবদ্ধ না থেকে নিজের স্বকীয়তা ও পিতামাতার আদর্শ ধারণ করে রাজনীতি করুন। তাঁর দাবি—ছাত্রশিবিরসহ দেশপ্রেমিক শক্তিগুলো তাঁকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।

শেষে তিনি সতর্ক করেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়া ও বেগম জিয়ার আদর্শ থেকে বিচ্যুত হলে বিএনপি টিকতে পারবে না। আর বাম বা কথিত বন্ধু রাষ্ট্রগুলো কখনোই দেশের উপকার করেনি—বরং বিভাজন ও ইসলামবিদ্বেষই ছিল তাদের প্রধান এজেন্ডা বলে মন্তব্য করেন তিনি।