ঢাকা ১২:০৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

লাইফ সাপোর্ট মানেই কৃত্রিমভাবে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে, এটা ভুল ধারণা

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ১০:১৩:২৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৫
  • ৫৬৮ বার পড়া হয়েছে

লাইফ সাপোর্ট বলতে সাধারণভাবে বোঝায়—শরীরের এমন কোনো অঙ্গ বা সিস্টেম, যা ছাড়া জীবন বজায় রাখা সম্ভব নয়, সেটির কাজকে সাময়িকভাবে যন্ত্র বা প্রযুক্তির মাধ্যমে সহায়তা দেওয়া। এর অর্থ এই নয় যে রোগী মৃত্যুপথযাত্রী; বরং প্রয়োজনীয় সময় পর্যন্ত শরীরকে বিশ্রাম ও সাপোর্ট দিয়ে সুস্থতার দিকে ফিরিয়ে আনার চিকিৎসা-ব্যবস্থা।

বেগম খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে কয়েকটি সিস্টেম সাময়িকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে—লিভার, কিডনি, রক্ত জমাট বাঁধার সিস্টেম এবং শ্বাস–প্রশ্বাসের সিস্টেম। তাঁর লিভারজনিত জটিলতা বহুদিন ধরেই রয়েছে, যেটা নিয়েই তিনি এতদিন স্বাভাবিক জীবনযাপন করেছেন। কিডনিতেও আগেও সমস্যা দেখা দিয়েছিল; তখন কিছুদিন ডায়ালাইসিস লাগলেও পরে আর লাগেনি। এবারও সাময়িক ডায়ালাইসিস প্রয়োজন হয়েছে, যা চিকিৎসকদের মতে পরিস্থিতি অনুযায়ী স্বাভাবিক।

তার রক্ত জমাট বাঁধার সমস্যা ওষুধের মাধ্যমে এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। রক্তচাপ ঠিক রাখতে কম ডোজে লাইফ-সাপোর্টিং ওষুধ দেওয়া হচ্ছে—যা ডায়ালাইসিস রোগীদের জন্য খুবই নিয়মিত ব্যবস্থা।

সবচেয়ে বেশি দুর্বলতা দেখা দেয় শ্বাস–প্রশ্বাসে। শ্বাস নিতে অতিরিক্ত পরিশ্রম হওয়ায় শরীরের ক্যালোরির বড় অংশ নষ্ট হচ্ছিল। তাই তাঁকে ভেন্টিলেটরে নেওয়া হয়েছে—জীবন রক্ষার শেষ ধাপ হিসেবে নয়, বরং শরীরকে বিশ্রাম দিতে এবং শক্তি সংরক্ষণ করে সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াইকে শক্তিশালী করতে।

বর্তমানে যন্ত্রগুলো তাঁর শরীরকে সহায়তা করছে, আর তাঁর রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা অ্যান্টিবায়োটিকের সঙ্গে মিলে সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়ছে। যখন সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আসবে, তখন একে একে ভেন্টিলেটর, রক্তচাপের সাপোর্ট এবং ডায়ালাইসিস—সবই ধীরে ধীরে বন্ধ করা সম্ভব হবে।

লাইফ সাপোর্ট মানে কৃত্রিমভাবে মৃতপ্রায় কাউকে বাঁচিয়ে রাখা—এ ধারণা ভুল। লাইফ সাপোর্ট হলো সাময়িক সহায়তা, যতক্ষণ না শরীর নিজে নিজে কাজ চালাতে সক্ষম হয়। এভারকেয়ারের চিকিৎসকরা সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। আশাবাদী হওয়া যায়—বেগম খালেদা জিয়া এ দফায় সুস্থ হয়ে তাঁর আগের অবস্থায় ফিরে আসবেন।


 

জনপ্রিয় সংবাদ

জেনেভায় রোহিঙ্গা নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক, অগ্রগতি তুলে ধরবে বাংলাদেশ

লাইফ সাপোর্ট মানেই কৃত্রিমভাবে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে, এটা ভুল ধারণা

আপডেট সময় ১০:১৩:২৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৫

লাইফ সাপোর্ট বলতে সাধারণভাবে বোঝায়—শরীরের এমন কোনো অঙ্গ বা সিস্টেম, যা ছাড়া জীবন বজায় রাখা সম্ভব নয়, সেটির কাজকে সাময়িকভাবে যন্ত্র বা প্রযুক্তির মাধ্যমে সহায়তা দেওয়া। এর অর্থ এই নয় যে রোগী মৃত্যুপথযাত্রী; বরং প্রয়োজনীয় সময় পর্যন্ত শরীরকে বিশ্রাম ও সাপোর্ট দিয়ে সুস্থতার দিকে ফিরিয়ে আনার চিকিৎসা-ব্যবস্থা।

বেগম খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে কয়েকটি সিস্টেম সাময়িকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে—লিভার, কিডনি, রক্ত জমাট বাঁধার সিস্টেম এবং শ্বাস–প্রশ্বাসের সিস্টেম। তাঁর লিভারজনিত জটিলতা বহুদিন ধরেই রয়েছে, যেটা নিয়েই তিনি এতদিন স্বাভাবিক জীবনযাপন করেছেন। কিডনিতেও আগেও সমস্যা দেখা দিয়েছিল; তখন কিছুদিন ডায়ালাইসিস লাগলেও পরে আর লাগেনি। এবারও সাময়িক ডায়ালাইসিস প্রয়োজন হয়েছে, যা চিকিৎসকদের মতে পরিস্থিতি অনুযায়ী স্বাভাবিক।

তার রক্ত জমাট বাঁধার সমস্যা ওষুধের মাধ্যমে এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। রক্তচাপ ঠিক রাখতে কম ডোজে লাইফ-সাপোর্টিং ওষুধ দেওয়া হচ্ছে—যা ডায়ালাইসিস রোগীদের জন্য খুবই নিয়মিত ব্যবস্থা।

সবচেয়ে বেশি দুর্বলতা দেখা দেয় শ্বাস–প্রশ্বাসে। শ্বাস নিতে অতিরিক্ত পরিশ্রম হওয়ায় শরীরের ক্যালোরির বড় অংশ নষ্ট হচ্ছিল। তাই তাঁকে ভেন্টিলেটরে নেওয়া হয়েছে—জীবন রক্ষার শেষ ধাপ হিসেবে নয়, বরং শরীরকে বিশ্রাম দিতে এবং শক্তি সংরক্ষণ করে সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াইকে শক্তিশালী করতে।

বর্তমানে যন্ত্রগুলো তাঁর শরীরকে সহায়তা করছে, আর তাঁর রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা অ্যান্টিবায়োটিকের সঙ্গে মিলে সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়ছে। যখন সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আসবে, তখন একে একে ভেন্টিলেটর, রক্তচাপের সাপোর্ট এবং ডায়ালাইসিস—সবই ধীরে ধীরে বন্ধ করা সম্ভব হবে।

লাইফ সাপোর্ট মানে কৃত্রিমভাবে মৃতপ্রায় কাউকে বাঁচিয়ে রাখা—এ ধারণা ভুল। লাইফ সাপোর্ট হলো সাময়িক সহায়তা, যতক্ষণ না শরীর নিজে নিজে কাজ চালাতে সক্ষম হয়। এভারকেয়ারের চিকিৎসকরা সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। আশাবাদী হওয়া যায়—বেগম খালেদা জিয়া এ দফায় সুস্থ হয়ে তাঁর আগের অবস্থায় ফিরে আসবেন।