ঢাকা ০১:০৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ৫ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‘দল আমার বাবাকে ৩৬৫ মামলায় ২২ বছরের সাজার মূল্য দিলো না’

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ০৬:১২:৪৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৫
  • ৫৫২ বার পড়া হয়েছে

 

ঢাকা-৭ আসনে বিএনপির মনোনয়ন ঘোষণাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে পুরান ঢাকার রাজনৈতিক অঙ্গন। যুবদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ইসহাক সরকারের মনোনয়ন না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ তাঁর কর্মী-সমর্থকরা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করছেন। তাদের অভিযোগ—পুরান ঢাকার ত্যাগী ও নির্যাতিত নেতাদের প্রতি দল চরম অবমূল্যায়ন করেছে।

বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) বিকালে গুলশান কার্যালয়ে ঘোষিত দ্বিতীয় দফার তালিকায় ঢাকা-৭ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে নাম আসে সাবেক ছাত্রনেতা, দক্ষিণ যুবদলের সাবেক সভাপতি এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হামিদুর রহমানের। ঘোষণা দেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

মনোনয়ন ঘোষণার পর থেকেই ইসহাক সরকারের সমর্থকেরা বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন, যেখানে ইসহাক নিজেও অংশ নেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও প্রতিবাদের ঢেউ ছড়িয়ে পড়েছে বিএনপির বিভিন্ন গ্রুপে।

মনোনয়ন না পাওয়ায় গভীর হতাশা প্রকাশ করেছেন ইসহাকের ছেলে ইশফাক সরকার। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে বাবার হাতকড়া পরা একটি ছবি ফেসবুকে শেয়ার করে তিনি লেখেন— “দল আমার বাবাকে ৩৬৫ মামলায় ২২ বছরের সাজার মূল্য দিল না। যিনি ১৮ বছরে একটি মামলাও খাননি, একদিনও জেল যাননি, তাঁকে নমিনেশন দেওয়া হলো। আমরা জানতে চাই—এই আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নেয় কারা?” তাঁর এই পোস্ট মুহূর্তেই ভাইরাল হয় এবং বহু নেতাকর্মী মন্তব্যে ইসহাকের প্রতি সমর্থন জানান। শুক্রবার সকালে ইসহাকও নিজের ভেরিফায়েড আইডিতে পোস্টটি শেয়ার করে শুধু লেখেন— “আল্লাহ ভরসা।”

দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে ইসহাক সরকার বলেন, বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ থাকায় বিএনপি সব কর্মসূচি স্থগিত রেখেছিল। ঠিক সেই সংকটে হঠাৎ মনোনয়ন ঘোষণা করে দল নেতাকর্মীদের আঘাত দিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

তিনি বলেন, পুরান ঢাকা দীর্ঘদিন আন্দোলন-সংগ্রামের ঘাঁটি। এখানে যারা বছরের পর বছর মামলা-নির্যাতন-জেল-জুলুম সহ্য করেছেন, স্থানীয়রা তাদের মধ্য থেকেই প্রার্থী চান। কিন্তু মনোনয়ন পাওয়া ব্যক্তি এলাকাবাসীর কাছে অপরিচিত, ভোটারও নন—অথবা খুব সম্প্রতি হয়েছেন। গত ১৮ বছর আন্দোলনের মাঠে তার উপস্থিতি দেখা যায়নি, এমনকি তার নামে একটি মামলাও নেই।

ইসহাক আরও অভিযোগ করেন, “যাকে এলাকায় কখনো দেখা যায়নি, তাকেই চাপিয়ে দেওয়া হলো। এতে কি আবারও মাইনাস ফর্মুলার ছায়া দেখছি না? যারা ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে আঁতাত করে ১৮ বছর ব্যবসা করেছেন, তারাই নমিনেশন পাচ্ছেন। এতে ত্যাগী নেতাকর্মীদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে।”

তিনি মনোনয়ন প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বলেন, পুরান ঢাকার নির্যাতিত পরিবারগুলোর মধ্য থেকে কাউকে প্রার্থী দিতে হবে।

তারেক রহমানকেও উদ্দেশ্য করে ইসহাক বলেন, “আপনি বলেছিলেন—তিনটি ক্রাইটেরিয়া: নির্যাতিতদের মধ্যে থেকে প্রার্থী, যারা মাঠে ছিল এবং যারা এলাকায় জনপ্রিয়। কিন্তু এই তিনটির কোনোটিই মানা হয়নি। তাই জনগণের দাবি তুলে ধরতে আমরা বাধ্য হয়েছি।”

জনপ্রিয় সংবাদ

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ

‘দল আমার বাবাকে ৩৬৫ মামলায় ২২ বছরের সাজার মূল্য দিলো না’

আপডেট সময় ০৬:১২:৪৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৫

 

ঢাকা-৭ আসনে বিএনপির মনোনয়ন ঘোষণাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে পুরান ঢাকার রাজনৈতিক অঙ্গন। যুবদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ইসহাক সরকারের মনোনয়ন না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ তাঁর কর্মী-সমর্থকরা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করছেন। তাদের অভিযোগ—পুরান ঢাকার ত্যাগী ও নির্যাতিত নেতাদের প্রতি দল চরম অবমূল্যায়ন করেছে।

বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) বিকালে গুলশান কার্যালয়ে ঘোষিত দ্বিতীয় দফার তালিকায় ঢাকা-৭ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে নাম আসে সাবেক ছাত্রনেতা, দক্ষিণ যুবদলের সাবেক সভাপতি এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হামিদুর রহমানের। ঘোষণা দেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

মনোনয়ন ঘোষণার পর থেকেই ইসহাক সরকারের সমর্থকেরা বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন, যেখানে ইসহাক নিজেও অংশ নেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও প্রতিবাদের ঢেউ ছড়িয়ে পড়েছে বিএনপির বিভিন্ন গ্রুপে।

মনোনয়ন না পাওয়ায় গভীর হতাশা প্রকাশ করেছেন ইসহাকের ছেলে ইশফাক সরকার। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে বাবার হাতকড়া পরা একটি ছবি ফেসবুকে শেয়ার করে তিনি লেখেন— “দল আমার বাবাকে ৩৬৫ মামলায় ২২ বছরের সাজার মূল্য দিল না। যিনি ১৮ বছরে একটি মামলাও খাননি, একদিনও জেল যাননি, তাঁকে নমিনেশন দেওয়া হলো। আমরা জানতে চাই—এই আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নেয় কারা?” তাঁর এই পোস্ট মুহূর্তেই ভাইরাল হয় এবং বহু নেতাকর্মী মন্তব্যে ইসহাকের প্রতি সমর্থন জানান। শুক্রবার সকালে ইসহাকও নিজের ভেরিফায়েড আইডিতে পোস্টটি শেয়ার করে শুধু লেখেন— “আল্লাহ ভরসা।”

দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে ইসহাক সরকার বলেন, বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ থাকায় বিএনপি সব কর্মসূচি স্থগিত রেখেছিল। ঠিক সেই সংকটে হঠাৎ মনোনয়ন ঘোষণা করে দল নেতাকর্মীদের আঘাত দিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

তিনি বলেন, পুরান ঢাকা দীর্ঘদিন আন্দোলন-সংগ্রামের ঘাঁটি। এখানে যারা বছরের পর বছর মামলা-নির্যাতন-জেল-জুলুম সহ্য করেছেন, স্থানীয়রা তাদের মধ্য থেকেই প্রার্থী চান। কিন্তু মনোনয়ন পাওয়া ব্যক্তি এলাকাবাসীর কাছে অপরিচিত, ভোটারও নন—অথবা খুব সম্প্রতি হয়েছেন। গত ১৮ বছর আন্দোলনের মাঠে তার উপস্থিতি দেখা যায়নি, এমনকি তার নামে একটি মামলাও নেই।

ইসহাক আরও অভিযোগ করেন, “যাকে এলাকায় কখনো দেখা যায়নি, তাকেই চাপিয়ে দেওয়া হলো। এতে কি আবারও মাইনাস ফর্মুলার ছায়া দেখছি না? যারা ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে আঁতাত করে ১৮ বছর ব্যবসা করেছেন, তারাই নমিনেশন পাচ্ছেন। এতে ত্যাগী নেতাকর্মীদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে।”

তিনি মনোনয়ন প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বলেন, পুরান ঢাকার নির্যাতিত পরিবারগুলোর মধ্য থেকে কাউকে প্রার্থী দিতে হবে।

তারেক রহমানকেও উদ্দেশ্য করে ইসহাক বলেন, “আপনি বলেছিলেন—তিনটি ক্রাইটেরিয়া: নির্যাতিতদের মধ্যে থেকে প্রার্থী, যারা মাঠে ছিল এবং যারা এলাকায় জনপ্রিয়। কিন্তু এই তিনটির কোনোটিই মানা হয়নি। তাই জনগণের দাবি তুলে ধরতে আমরা বাধ্য হয়েছি।”