ঢাকা ০৪:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভারত ও আ.লীগের গুপ্ত হামলার পরিকল্পনা ফাঁস

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ০৯:৩২:৫৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫
  • ৫২৫ বার পড়া হয়েছে

 

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরপরই ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনায় নতুন করে উদ্বেগ ছড়িয়েছে। হামলার পেছনে সংঘবদ্ধ চক্র ও সুদূরপ্রসারী নাশকতার পরিকল্পনা রয়েছে—এমন অভিযোগ উঠে এসেছে বিভিন্ন সূত্রে। একই সঙ্গে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও ভারতের সংশ্লিষ্টতার দাবিও আলোচনায় এসেছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি টেলিগ্রাম অডিওতে ‘আওয়ামী লীগ অনলাইন কমিউনিটি’ নামে একটি গ্রুপের বৈঠকের কথোপকথন শোনা যায়। সেখানে ঢাকা ও চট্টগ্রামকে কেন্দ্র করে বড় ধরনের নাশকতার প্রস্তুতির ইঙ্গিত দেওয়া হয়। গত ৯ ডিসেম্বরের ওই কথোপকথন প্রকাশ করেন আল–জাজিরার অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের।

অডিওতে একজন অ্যাডমিনকে বলতে শোনা যায়, পাঁচ মাস ধরে পরিকল্পনা চলছে এবং ‘ওজেবি’ নামে সাংকেতিক অপারেশনের জন্য একটি টিম প্রস্তুত। নির্দিষ্ট তারিখ থেকে টিম মাঠে নামবে বলেও উল্লেখ করা হয়। আলোচনায় ঢাকার পাশাপাশি চট্টগ্রাম ও সম্ভাব্যভাবে খুলনা কেন্দ্রিক কার্যক্রমের কথাও আসে। সাতক্ষীরায় অভিযান চালানোর প্রস্তাবও উঠে আসে।

ওই টেলিগ্রাম গ্রুপে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের পদধারী নেতা-কর্মীরা যুক্ত বলে দাবি করা হচ্ছে। কারা কারা আলোচনায় অংশ নিয়েছেন এবং ‘চিফ’ নামে সম্বোধিত ব্যক্তির পরিচয় শনাক্তে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো কাজ করছে বলে জানা গেছে।

ঘটনাগুলো নির্বাচনি মাঠে নতুন করে আতঙ্ক তৈরি করেছে। বিশেষ করে বন্দর নগরী চট্টগ্রামে প্রার্থী ও কর্মী-সমর্থকদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। অনেকের আশঙ্কা, নির্বাচন বানচালের উদ্দেশ্যে ‘টার্গেট কিলিং’ শুরু হয়েছে।

এর আগে ৫ নভেম্বর চট্টগ্রাম-৮ আসনে গণসংযোগকালে বিএনপি প্রার্থী এরশাদের ওপর হামলায় যুবদল কর্মী সারোয়ার হোসেন বাবলা নিহত হন এবং প্রার্থী নিজেও গুলিবিদ্ধ হন। ওই ঘটনার পর ঢাকায় হাদির ওপর হামলা এবং কথিত নাশকতার অডিও প্রকাশ পাওয়ায় উদ্বেগ আরও গভীর হয়েছে।

এ বিষয়ে বিভিন্ন দলের প্রার্থীরা প্রশাসনের আরও সক্রিয় ভূমিকার আহ্বান জানিয়েছেন। তারা অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী গ্রেপ্তার এবং গোয়েন্দা নজরদারি জোরদারের দাবি তুলেছেন।

চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ জানান, ভাইরাল অডিওসহ বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য গুরুত্ব দিয়ে যাচাই করা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় টহল বৃদ্ধি, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও সন্ত্রাসী গ্রেপ্তারে অভিযান জোরদার করা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ প্রার্থীদের ক্ষেত্রে বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থাও বিবেচনায় আছে বলে তিনি জানান।

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, নির্বাচনের আগে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কোর কমিটির জরুরি বৈঠক হয়েছে। অস্ত্র লাইসেন্স যাচাই ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

গোয়েন্দা সূত্রগুলো জানায়, রাজধানীর তুলনায় চট্টগ্রাম বেশি ঝুঁকিতে। সীমান্ত ও পার্বত্য রুট ব্যবহার করে অস্ত্র পাচারের আশঙ্কা রয়েছে। এসব তথ্যের ভিত্তিতে নির্বাচনের আগে নিরাপত্তা জোরদারে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বনের কথা জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

জনপ্রিয় সংবাদ

ওসমান হাদিকে গুলি, গ্রেপ্তার আরও ২

ভারত ও আ.লীগের গুপ্ত হামলার পরিকল্পনা ফাঁস

আপডেট সময় ০৯:৩২:৫৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫

 

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরপরই ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনায় নতুন করে উদ্বেগ ছড়িয়েছে। হামলার পেছনে সংঘবদ্ধ চক্র ও সুদূরপ্রসারী নাশকতার পরিকল্পনা রয়েছে—এমন অভিযোগ উঠে এসেছে বিভিন্ন সূত্রে। একই সঙ্গে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও ভারতের সংশ্লিষ্টতার দাবিও আলোচনায় এসেছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি টেলিগ্রাম অডিওতে ‘আওয়ামী লীগ অনলাইন কমিউনিটি’ নামে একটি গ্রুপের বৈঠকের কথোপকথন শোনা যায়। সেখানে ঢাকা ও চট্টগ্রামকে কেন্দ্র করে বড় ধরনের নাশকতার প্রস্তুতির ইঙ্গিত দেওয়া হয়। গত ৯ ডিসেম্বরের ওই কথোপকথন প্রকাশ করেন আল–জাজিরার অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের।

অডিওতে একজন অ্যাডমিনকে বলতে শোনা যায়, পাঁচ মাস ধরে পরিকল্পনা চলছে এবং ‘ওজেবি’ নামে সাংকেতিক অপারেশনের জন্য একটি টিম প্রস্তুত। নির্দিষ্ট তারিখ থেকে টিম মাঠে নামবে বলেও উল্লেখ করা হয়। আলোচনায় ঢাকার পাশাপাশি চট্টগ্রাম ও সম্ভাব্যভাবে খুলনা কেন্দ্রিক কার্যক্রমের কথাও আসে। সাতক্ষীরায় অভিযান চালানোর প্রস্তাবও উঠে আসে।

ওই টেলিগ্রাম গ্রুপে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের পদধারী নেতা-কর্মীরা যুক্ত বলে দাবি করা হচ্ছে। কারা কারা আলোচনায় অংশ নিয়েছেন এবং ‘চিফ’ নামে সম্বোধিত ব্যক্তির পরিচয় শনাক্তে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো কাজ করছে বলে জানা গেছে।

ঘটনাগুলো নির্বাচনি মাঠে নতুন করে আতঙ্ক তৈরি করেছে। বিশেষ করে বন্দর নগরী চট্টগ্রামে প্রার্থী ও কর্মী-সমর্থকদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। অনেকের আশঙ্কা, নির্বাচন বানচালের উদ্দেশ্যে ‘টার্গেট কিলিং’ শুরু হয়েছে।

এর আগে ৫ নভেম্বর চট্টগ্রাম-৮ আসনে গণসংযোগকালে বিএনপি প্রার্থী এরশাদের ওপর হামলায় যুবদল কর্মী সারোয়ার হোসেন বাবলা নিহত হন এবং প্রার্থী নিজেও গুলিবিদ্ধ হন। ওই ঘটনার পর ঢাকায় হাদির ওপর হামলা এবং কথিত নাশকতার অডিও প্রকাশ পাওয়ায় উদ্বেগ আরও গভীর হয়েছে।

এ বিষয়ে বিভিন্ন দলের প্রার্থীরা প্রশাসনের আরও সক্রিয় ভূমিকার আহ্বান জানিয়েছেন। তারা অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী গ্রেপ্তার এবং গোয়েন্দা নজরদারি জোরদারের দাবি তুলেছেন।

চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ জানান, ভাইরাল অডিওসহ বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য গুরুত্ব দিয়ে যাচাই করা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় টহল বৃদ্ধি, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও সন্ত্রাসী গ্রেপ্তারে অভিযান জোরদার করা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ প্রার্থীদের ক্ষেত্রে বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থাও বিবেচনায় আছে বলে তিনি জানান।

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, নির্বাচনের আগে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কোর কমিটির জরুরি বৈঠক হয়েছে। অস্ত্র লাইসেন্স যাচাই ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

গোয়েন্দা সূত্রগুলো জানায়, রাজধানীর তুলনায় চট্টগ্রাম বেশি ঝুঁকিতে। সীমান্ত ও পার্বত্য রুট ব্যবহার করে অস্ত্র পাচারের আশঙ্কা রয়েছে। এসব তথ্যের ভিত্তিতে নির্বাচনের আগে নিরাপত্তা জোরদারে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বনের কথা জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।