আজ ৩০ মে, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাৎ বার্ষিকী। ১৯৮১ সালের এই দিনে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে চট্টগ্রামের সার্কিট হাউসে সেনাবাহিনীর কিছু বিপথগামী সদস্যের হাতে তিনি শহীদ হন। তার মৃত্যুতে দেশবাসী হারায় এক মহান মুক্তিযোদ্ধা, স্বাধীনতার ঘোষক, এবং আধুনিক বাংলাদেশের স্থপতিদের একজনকে।
জিয়াউর রহমান ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার ও জেড ফোর্সের অধিনায়ক। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করে দেশবাসীকে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানান তিনি। পরবর্তীতে তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) প্রতিষ্ঠা করেন, যা আজ দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক শক্তি।
শহীদ জিয়ার শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপি ও তার অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনসমূহ ৮ দিনের কর্মসূচি পালন করছে। এ কর্মসূচি শুরু হয়েছে ২৬ মে এবং চলবে ২ জুন পর্যন্ত। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে—
-
আলোচনা সভা
-
পোস্টার ও ক্রোড়পত্র প্রকাশ
-
কালো ব্যাজ ধারণ ও কালো পতাকা উত্তোলন
-
জিয়ার কবরে ফুল দেওয়া ও ফাতেহা পাঠ
-
দরিদ্রদের মাঝে খাদ্য ও বস্ত্র বিতরণ
আজ শুক্রবার সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারাদেশে দলীয় কার্যালয়ে দলীয় পতাকা অর্ধনমিত ও কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে। সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে শেরেবাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এ সময় বিএনপির শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে বিভিন্ন এলাকায় দরিদ্রদের মধ্যে খাদ্য ও বস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় বিএনপি নেতারা বলেন,
“শহীদ জিয়া ছিলেন সততা, দেশপ্রেম ও কর্তব্যনিষ্ঠার প্রতীক। তার খালকাটা কর্মসূচি, সবুজ বিপ্লব, শিল্পায়ন ও আধুনিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার মাধ্যমে তিনি স্বনির্ভর বাংলাদেশের ভিত গড়েন।”
১৯৮১ সালের ২৯ মে সরকারি সফরে চট্টগ্রাম গমন করেন জিয়াউর রহমান। গভীর রাতে ৩০ মে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে তিনি নিহত হন। হত্যার পর তার মরদেহ গোপনে রাউজানের গভীর জঙ্গলে কবর দেওয়া হয়। পরে লাশ উদ্ধার করে ঢাকায় এনে জাতীয় সংসদ ভবন চত্বরে সমাহিত করা হয়, যেখানে লাখো মানুষ অংশ নেয় তার জানাজায়।
শহীদ জিয়ার আদর্শে উদ্ভাসিত বিএনপি নেতারা এদিন তাকে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন এবং জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় তার দেখানো পথে চলার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন