রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সাংবাদিক মাসুদ কামাল বলেছেন, বাংলাদেশের সাংবাদিকতার ইতিহাসে আনিস আলমগীরের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যতিক্রমী। প্রথম ইরাক যুদ্ধের সময় আনিস আলমগীর সরাসরি বাগদাদে উপস্থিত থেকে যুদ্ধ কভার করেন, যা বাংলাদেশি সাংবাদিকতায় এক অনন্য দৃষ্টান্ত। সে সময় তিনি আজকের কাগজে কর্মরত ছিলেন এবং যুদ্ধক্ষেত্র থেকেই প্রতিবেদন করার পাশাপাশি বিভিন্ন টেলিভিশনে বক্তব্য দিয়েছেন। এ কারণেই তাকে প্রকৃত অর্থে ‘ওয়ার জার্নালিস্ট’ বলা হয় এবং বাংলাদেশে তার মতো দ্বিতীয় কোনো সাংবাদিক নেই বলেও মন্তব্য করেন মাসুদ কামাল।
সম্প্রতি নিজের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত এক ভিডিওতে এসব কথা বলেন তিনি। মাসুদ কামাল জানান, আনিস আলমগীর বিভিন্ন সময় টকশোতে নিজের মতামত তুলে ধরেন। তার পরিচালিত ‘অন্য মঞ্চ’ নামের ইউটিউব চ্যানেলে নিয়মিতভাবেই আনিস আলমগীর অতিথি হিসেবে আসেন এবং প্রায় প্রতি সপ্তাহেই নানা বিষয়ে আলোচনা হয়।
ভিডিওতে মাসুদ কামাল আরও বলেন, ওইদিন রাতে ‘অন্য মঞ্চ’-এর জন্য আনিস আলমগীরের সঙ্গে তার একটি ইন্টারভিউ নির্ধারিত ছিল। কিন্তু অনুষ্ঠান শুরুর আগে আনিস আলমগীর নিজেই তাকে ফোন করে জানান যে, ওই রাতে সম্ভবত প্রোগ্রামটি করা যাবে না। মাসুদ কামালের ভাষায়, ফোনালাপে আনিস আলমগীর কোনো সহায়তা চাননি কিংবা আতঙ্ক প্রকাশ করেননি। বরং পেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়ে শুধু জানাতে চেয়েছেন, তার অনুপস্থিতির কারণে যেন অনুষ্ঠান নিয়ে কোনো সমস্যা না হয়। মাসুদ কামাল একে সাংবাদিকতার প্রকৃত পেশাদারিত্ব হিসেবে উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, পরে আনিস আলমগীর জানান, তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবি তার বাসা থেকে ডিবি অফিসে নিয়ে গেছে। শুধু ডিবির সদস্যরাই নয়, ধানমন্ডি থানার পুলিশও সেখানে উপস্থিত ছিল। মাসুদ কামাল বলেন, বিষয়টি শুধু আনিস আলমগীরকে ঘিরে নয়—এটি যে কারও ক্ষেত্রেই ঘটতে পারে। তিনি নিজে, কিংবা সাধারণ যে কোনো নাগরিকও এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে পারেন।
মাসুদ কামালের মন্তব্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে ডিবি বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বাসা থেকে কাউকে তুলে নেওয়ার ঘটনা নতুন নয়। বর্তমান সময়েই নয়, আগের সময়গুলোতেও এমন ঘটনার নজির রয়েছে। হাজার হাজার উদাহরণ রয়েছে, যা দেশটির রাজনৈতিক ও সামাজিক বাস্তবতারই প্রতিফলন।




















