ঢাকা ০১:২১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ফিরে এসো হাদি, প্রার্থনায় সয়লাব সামাজিকমাধ্যম

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ১১:৫৯:৩২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫
  • ৫২০ বার পড়া হয়েছে

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরীফ ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় দেশজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। প্রকাশ্যে দিবালোকে একজন প্রার্থীর ওপর এমন হত্যাচেষ্টাকে গণতন্ত্র ও নির্বাচনব্যবস্থার জন্য ‘অশনিসংকেত’ হিসেবে দেখছেন রাজনীতিক, শিক্ষাবিদ, সাংস্কৃতিক কর্মী ও সাধারণ মানুষ।

ঘটনার পর থেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করছে। গত সোমবার রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বদলীয় ঐক্য সমাবেশে লাখো মানুষ অংশ নেয়। সমাবেশ থেকে দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তার ও ঘটনার পেছনের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য উদ্ঘাটনের দাবি জানানো হয়।

এদিকে সারা দেশের মসজিদ ও মাদরাসায় শরীফ ওসমান হাদির সুস্থতা কামনায় বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। বহু মানুষ নফল রোজা রেখেছেন। তবে ঘটনার কয়েক দিন পেরিয়ে গেলেও অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার না হওয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ ও উদ্বেগ আরও বেড়েছে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক আবুল হাশেম তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘মানুষের অশ্রু আজ দুটি স্রোতস্বিনীতে প্রবাহিত—একটি বেগম খালেদা জিয়ার দিকে, অন্যটি স্নেহধন্য হাদির দিকে। মানুষের এমন পাগলপারা ভালোবাসা ও দোয়া পেতে কার না লোভ হয়।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক ফাতিমা তাসনিম জুমা আবেগঘন স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘সব দলের বাংলাদেশপন্থি অংশ আমাদের অসম্ভব ভালোবাসে—ভাই বলত, একদিন বুঝবা। আজ বুঝছি, কিন্তু আমরা এভাবে বুঝতে চাইনি।’

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (রাকসু) সাবেক ভিপি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, ‘সন্ত্রাসীরা জানে না—বিপ্লবীদের গুলি করে থামানো যায় না।’

ডাকসুর ভিপি সাদিক কায়েম তার স্ট্যাটাসে উদ্বেগ প্রকাশ করে লেখেন, ‘নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিনই একজন প্রার্থীকে গুলি করা খুবই অশনিসংকেত। এতে প্রার্থীদের নিরাপত্তা ও নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার প্রশ্নে বড় আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।’ তিনি দ্রুত দোষীদের শনাক্ত ও রাজনৈতিক মোটিভ জাতির সামনে তুলে ধরার আহ্বান জানান।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাধারণ মানুষও হাদির সুস্থতার জন্য দোয়া অব্যাহত রেখেছেন। কেউ লিখেছেন, ‘হাদি ভাই ফিরবে বীরের বেশে ইনশাল্লাহ’, কেউ লিখেছেন, ‘এই দেশে হাদিকে প্রয়োজন—যেখানেই নেওয়া হোক, আমরা দোয়া করি তিনি ফিরে আসুন।’

অভিনেত্রী রুকাইয়া জাহান চমক তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে লেখেন, ‘হাদি হয়তো ফিরবে আরও জোরালো গর্জনে। আর যদি না ফেরে, তার নামটাই হয়ে যাবে নতুন প্রজন্মের যুদ্ধ ঘোষণা।’

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার রাজধানীর পল্টন এলাকায় নির্বাচনি প্রচারণার সময় শরীফ ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ হন। প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখান থেকেও শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে উন্নত চিকিৎসার জন্য সোমবার দুপুরে তাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়। বর্তমানে তিনি সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

জনপ্রিয় সংবাদ

জনশক্তি রপ্তানিতে বড় বাধা দালালরা: ড. ইউনূস

ফিরে এসো হাদি, প্রার্থনায় সয়লাব সামাজিকমাধ্যম

আপডেট সময় ১১:৫৯:৩২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরীফ ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় দেশজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। প্রকাশ্যে দিবালোকে একজন প্রার্থীর ওপর এমন হত্যাচেষ্টাকে গণতন্ত্র ও নির্বাচনব্যবস্থার জন্য ‘অশনিসংকেত’ হিসেবে দেখছেন রাজনীতিক, শিক্ষাবিদ, সাংস্কৃতিক কর্মী ও সাধারণ মানুষ।

ঘটনার পর থেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করছে। গত সোমবার রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বদলীয় ঐক্য সমাবেশে লাখো মানুষ অংশ নেয়। সমাবেশ থেকে দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তার ও ঘটনার পেছনের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য উদ্ঘাটনের দাবি জানানো হয়।

এদিকে সারা দেশের মসজিদ ও মাদরাসায় শরীফ ওসমান হাদির সুস্থতা কামনায় বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। বহু মানুষ নফল রোজা রেখেছেন। তবে ঘটনার কয়েক দিন পেরিয়ে গেলেও অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার না হওয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ ও উদ্বেগ আরও বেড়েছে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক আবুল হাশেম তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘মানুষের অশ্রু আজ দুটি স্রোতস্বিনীতে প্রবাহিত—একটি বেগম খালেদা জিয়ার দিকে, অন্যটি স্নেহধন্য হাদির দিকে। মানুষের এমন পাগলপারা ভালোবাসা ও দোয়া পেতে কার না লোভ হয়।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক ফাতিমা তাসনিম জুমা আবেগঘন স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘সব দলের বাংলাদেশপন্থি অংশ আমাদের অসম্ভব ভালোবাসে—ভাই বলত, একদিন বুঝবা। আজ বুঝছি, কিন্তু আমরা এভাবে বুঝতে চাইনি।’

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (রাকসু) সাবেক ভিপি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, ‘সন্ত্রাসীরা জানে না—বিপ্লবীদের গুলি করে থামানো যায় না।’

ডাকসুর ভিপি সাদিক কায়েম তার স্ট্যাটাসে উদ্বেগ প্রকাশ করে লেখেন, ‘নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিনই একজন প্রার্থীকে গুলি করা খুবই অশনিসংকেত। এতে প্রার্থীদের নিরাপত্তা ও নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার প্রশ্নে বড় আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।’ তিনি দ্রুত দোষীদের শনাক্ত ও রাজনৈতিক মোটিভ জাতির সামনে তুলে ধরার আহ্বান জানান।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাধারণ মানুষও হাদির সুস্থতার জন্য দোয়া অব্যাহত রেখেছেন। কেউ লিখেছেন, ‘হাদি ভাই ফিরবে বীরের বেশে ইনশাল্লাহ’, কেউ লিখেছেন, ‘এই দেশে হাদিকে প্রয়োজন—যেখানেই নেওয়া হোক, আমরা দোয়া করি তিনি ফিরে আসুন।’

অভিনেত্রী রুকাইয়া জাহান চমক তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে লেখেন, ‘হাদি হয়তো ফিরবে আরও জোরালো গর্জনে। আর যদি না ফেরে, তার নামটাই হয়ে যাবে নতুন প্রজন্মের যুদ্ধ ঘোষণা।’

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার রাজধানীর পল্টন এলাকায় নির্বাচনি প্রচারণার সময় শরীফ ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ হন। প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখান থেকেও শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে উন্নত চিকিৎসার জন্য সোমবার দুপুরে তাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়। বর্তমানে তিনি সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।