সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন বলে জানা গেছে। নির্ভরযোগ্য সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, মঙ্গলবার সারাদিন ও বুধবার সকাল পর্যন্ত তার অবস্থা স্থিতিশীল থাকলেও দুপুরের পর হঠাৎ করে স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে।
সংকটাপন্ন অবস্থাতেই গত সোমবার এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে পরিবহনের সময় তার অবস্থার কিছুটা অবনতি হলেও হাসপাতালে পৌঁছানোর পর প্রাথমিকভাবে কিছুটা উন্নতি হয় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
এর আগে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও পরিবারের অনুরোধে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে যুক্তরাজ্যের বার্মিংহামের কুইন এলিজাবেথ হাসপাতালে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এ লক্ষ্যে মেডিক্যাল রিপোর্ট সংযুক্ত করে আনুষ্ঠানিকভাবে একটি চিঠিও পাঠানো হয়। স্বাস্থ্য পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে যুক্তরাজ্যে পাঠানোর এই প্রক্রিয়া চলমান থাকতেই তার শারীরিক অবস্থার অবনতির খবর আসে।
সূত্র জানায়, শরীফ ওসমান হাদির মাথায় একটি অত্যন্ত জটিল অস্ত্রোপচার প্রয়োজন। তবে এ ধরনের অস্ত্রোপচারের জন্য সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে পর্যাপ্ত সুবিধা নেই। যুক্তরাজ্যের বার্মিংহামের কুইন এলিজাবেথ হাসপাতালে এ অপারেশনের উন্নত ব্যবস্থা রয়েছে বলে চিকিৎসকরা মনে করছেন।
সূত্র আরও জানায়, শুরুতে ইনকিলাব মঞ্চ এবং বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের কয়েকজন শুভানুধ্যায়ী তাকে ব্রিটেনে নেওয়ার উদ্যোগ নেন। বর্তমানে বিষয়টি নিয়ে সরকারও সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। বুধবার সকালে উপদেষ্টা ফওজুল কবির খান, মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ও ডা. সায়েদুর রহমান টেলিকনফারেন্সে হাদির বড় ভাই ওমরের সঙ্গে কথা বলেন এবং সরকারের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা ও প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের আশ্বাস দেন।
তবে চিকিৎসকদের মতে, দীর্ঘ পথের ভ্রমণের জন্য হাদির শারীরিক অবস্থা উপযুক্ত কি না—সে বিষয়ে সিঙ্গাপুরের চিকিৎসকদের চূড়ান্ত অনুমোদন বা ‘সবুজ সংকেত’ প্রয়োজন। চিকিৎসকরা সম্মতি না দিলে তাকে যুক্তরাজ্যে নেওয়ার প্রচেষ্টা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
এর আগে বুধবার সকালে ইনকিলাব মঞ্চ তাদের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে জানায়, হাদির শরীরকে অস্ত্রোপচারের জন্য প্রস্তুত করতে হলে আগে পুরোপুরি স্থিতিশীল করা জরুরি। চিকিৎসা সিঙ্গাপুর বা ইংল্যান্ড—যেকোনো জায়গায় হতে পারে। ব্রেন সক্রিয় করার জন্য অপারেশন প্রয়োজন এবং বর্তমানে মূল লক্ষ্য হলো শরীর ও মস্তিষ্কের মধ্যে কার্যকর সংযোগ স্থাপন করা। মস্তিষ্ক ছাড়া শরীরের অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সক্রিয় রয়েছে বলেও জানানো হয়।



















