ঢাকার রাজপথে বুধবার আবারও শোনা গেছে জুলাইয়ের উত্তাল স্লোগান। রাজধানীর বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিবাদের ভাষা। পুলিশের ব্যারিকেডের সামনে দাঁড়িয়ে দাসত্ব ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে স্লোগানে মুখর হন দেশপ্রেমিক ছাত্রজনতা। ভারতীয় হাইকমিশন অভিমুখে ‘মার্চ টু ইন্ডিয়ান হাইকমিশন’ কর্মসূচিতে অংশ নেয় জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সঙ্গে যুক্ত একাধিক সংগঠনের মোর্চা ‘জুলাই ঐক্য’।
জুলাই অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ও পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ভারতে অবস্থানরত সব খুনিকে ফিরিয়ে আনার দাবি এবং ভারতীয় প্রক্সি রাজনৈতিক দল, মিডিয়া ও কিছু সরকারি কর্মকর্তার কথিত ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে এই কর্মসূচি পালিত হয়। এতে সাবেক সেনা কর্মকর্তাদের একটি অংশ, ডাকসু ও জাকসুর নেতারা, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজ, মাদরাসা ও স্কুলের শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।
বুধবার বিকেলে রামপুরা ব্রিজ থেকে শুরু হয়ে কর্মসূচিটি মধ্য বাড্ডা পর্যন্ত অগ্রসর হলে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। পরে সেখানেই অবস্থান কর্মসূচি ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে জুলাই ঐক্যের সংগঠক ও ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক এবি জুবায়ের অভিযোগ করেন, চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের পর থেকে ভারতের প্রক্সিরা বাংলাদেশ নিয়ে নতুন করে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তিনি বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে গণহত্যায় জড়িতদের আশ্রয় দেওয়া হয়েছে এবং আহত জুলাইযোদ্ধা শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনায় অপরাধীদের গ্রেপ্তারে দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই। তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বলেন, “দুই হাজার ছাত্রজনতার রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে সরকার বসেছে—এই দায় এড়ানো যাবে না।”
ডাকসুর সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মোসাদ্দেক আলী ইবনে মোহাম্মদ তার বক্তব্যে হামলার ঘটনার তদন্ত ও দায়ীদের প্রত্যর্পণ দাবি করেন। তিনি পররাষ্ট্রনীতিতে সরকারের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, সীমান্ত হত্যা ও প্রত্যর্পণ ইস্যুতে কার্যকর প্রতিবাদ দেখা যাচ্ছে না।
আরেক সংগঠক ইসরাফিল ফরাজি বলেন, এই কর্মসূচি ছিল একটি সতর্কবার্তা। তাঁর অভিযোগ, আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের লক্ষ্যে বিভিন্ন মহল থেকে তৎপরতা চলছে। তিনি বলেন, “আজ আমরা হাজারে এসেছি, সামনে লাখে আসব।”
সমাবেশ থেকে বক্তারা শেখ হাসিনাসহ কথিত খুনিদের প্রত্যর্পণে দ্রুত কূটনৈতিক উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানান এবং দাবি বাস্তবায়নে ব্যর্থ হলে ভবিষ্যতে আরও বৃহত্তর কর্মসূচির ইঙ্গিত দেন।





















