কিশোরগঞ্জ-২ (কটিয়াদী-পাকুন্দিয়া) আসনের বিএনপির সাবেক দুবারের সংসদ সদস্য ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান নিয়ে নিজ এলাকায় প্রকাশ্য ‘কৈফিয়ত সভা’ করেছেন। শনিবার বিকেলে কটিয়াদী উপজেলার গচিহাটা কলেজ মাঠে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় আখতারুজ্জামান বলেন, বিএনপি তাঁকে দল থেকে বের করে দিয়েছে বলেই তিনি জামায়াতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন। তিনি দাবি করেন, দলের অনেক নেতাকর্মী তাঁকে ফেরত নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানালেও দলীয় নেতৃত্ব তা গ্রহণ করেনি। জামায়াত তাঁকে আশ্রয় না দিলে তিনি রাজনৈতিকভাবে রাস্তায় পড়ে থাকতেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী তাঁকে আশ্রয় দেওয়ায় তিনি কৃতজ্ঞ এবং ভবিষ্যতে দলের জন্য কষ্টকর কোনো বক্তব্য দেবেন না। তবে তিনি স্পষ্ট করেন, তিনি আর কোনো নির্বাচনে অংশ নেবেন না। জামায়াত ক্ষমতায় এলে দলটি তাঁর কোনো না কোনো উপকার করবে—এমন প্রত্যাশাও ব্যক্ত করেন তিনি।
বক্তব্যের শুরুতে ‘নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবার’ স্লোগান দেন আখতারুজ্জামান। এরপর মোবাইল ফোন থেকে মাইকে একটি গান বাজানো হয়। সভায় কটিয়াদী উপজেলা জামায়াতের আমির মোজাম্মেল হক জোয়ারদার, সেক্রেটারি মাওলানা মাহমুদুল হাসান এবং কিশোরগঞ্জ-২ আসনে জামায়াতের প্রার্থী শফিকুল ইসলাম মোড়ল উপস্থিত ছিলেন। তারা সমস্বরে আখতারুজ্জামানকে আশ্বস্ত করেন এবং তাঁর জামায়াতে যোগদানকে স্বাগত জানান।
সভায় আখতারুজ্জামান বলেন, জামায়াতের প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস থাকলে দেশ নিরাপদ থাকবে এবং অশান্তি হবে না। এ সময় তিনি পার্শ্ববর্তী এলাকার গোপাল বর্মণ নামের এক ব্যক্তিকে পরিচয় করিয়ে দেন, যিনি আগামী দিনে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান।
একই সভায় ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদির শোকসভাও অনুষ্ঠিত হয়। বক্তারা বলেন, ৫৪ বছরেও যে ‘সোনার বাংলা’ বাস্তবায়িত হয়নি, তা জামায়াতের নেতৃত্বে আগামী দিনে বাস্তবায়িত হবে।
উল্লেখ্য, গত ১৩ ডিসেম্বর ঢাকার মগবাজারে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গিয়ে দলের আমির ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সদস্য ফরম পূরণের মাধ্যমে জামায়াতে যোগ দেন মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান। জামায়াতে যোগদানের আগ পর্যন্ত তিনি পঞ্চমবারের মতো বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত ছিলেন। সভায় কয়েকশ মানুষ অংশ নেন এবং জামায়াতে ইসলামী মোটরসাইকেল বহরসহ একটি মিছিল নিয়ে অনুষ্ঠানে যোগ দেয়।


















