ঢাকা ০৮:৪৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জামালপুরের মাদারগঞ্জ মডেল মসজিদে ৩৫ মাসের বিদ্যুৎ বিল বকেয়া ছয় লাখ টাকা

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ০৩:৫১:০২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫
  • ৫৩৬ বার পড়া হয়েছে

জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে ৩৫ মাসে বিদ্যুৎ বিল বকেয়া দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬ লাখ টাকা। বিপুল অঙ্কের এই বকেয়া পরিশোধ করতে না পারায় চরম সংকটে পড়েছে মসজিদ কর্তৃপক্ষ। বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের জন্য বারবার তাগাদা দেওয়া হলেও এখনো কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।

উপজেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশন সূত্রে জানা যায়, মাদারগঞ্জ পৌরশহরের বালিজুড়ী বাজার এলাকায় ২০২৩ সালের ১৬ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে মডেল মসজিদের কার্যক্রম শুরু হয়। উদ্বোধনের প্রায় তিন বছরে মসজিদের বিদ্যুৎ ব্যবহার ও ব্যয় বেড়েছে উল্লেখযোগ্যভাবে। তবে মসজিদ পরিচালনা কমিটি কিংবা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধে তেমন উদ্যোগ দেখা যায়নি।

মডেল মসজিদে আজান, নামাজ ও সার্বিক রক্ষণাবেক্ষণের জন্য একজন পেশ ইমাম, একজন মুয়াজ্জিন ও দুইজন খাদেম নিয়োগপ্রাপ্ত রয়েছেন। তাদের সম্মানি ইসলামিক ফাউন্ডেশন বহন করলেও মসজিদের অন্যান্য ব্যয়—পরিচ্ছন্নতা, বিদ্যুৎ বিল ও দৈনন্দিন পরিচালন খরচ—নামাজরত মুসল্লিদের দানের অর্থ থেকেই চালানো হচ্ছে।

মসজিদটিতে একাধিক নামাজ কক্ষ, দামি ঝাড়বাতি, শতাধিক লাইট, ফ্যান ও এসি রয়েছে। পাশাপাশি নারী-পুরুষ ও প্রতিবন্ধীদের জন্য পৃথক অজুখানা, আধুনিক টয়লেট, অটিজম কর্নার, ইসলামিক বই বিক্রয় কেন্দ্র, ইসলামিক লাইব্রেরি, ইমাম ট্রেনিং সেন্টার, হজ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, ইসলামিক গবেষণা ও শিশু ও গণশিক্ষার ব্যবস্থাও রয়েছে। এছাড়া দেশি-বিদেশি পর্যটকদের জন্য আবাসন ও অতিথিশালা, মৃতদেহ গোসল ও কফিন বহনের ব্যবস্থাও আছে।

উপজেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ফিল্ড সুপারভাইজার আসাদুল্লাহ সিদ্দিকী জানান, ২০২৫ সালের নভেম্বর পর্যন্ত মডেল মসজিদের বকেয়া বিদ্যুৎ বিলের পরিমাণ প্রায় ৫ লাখ ৭৯ হাজার টাকা। প্রতি মাসে গড়ে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা বিদ্যুৎ বিল আসলেও মুসল্লিদের দান থেকে মাসে আয় হয় মাত্র দুই থেকে তিন হাজার টাকা। বালিজুড়ী বাজার এলাকায় একাধিক মসজিদ থাকায় এবং বাজার থেকে কিছুটা দূরে মডেল মসজিদ নির্মিত হওয়ায় মুসল্লির উপস্থিতি কম, ফলে দানের পরিমাণও কম হচ্ছে।

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মাদারগঞ্জ জোনাল অফিসের উপমহাব্যবস্থাপক ওবায়দুল্লাহ আল মাসুম বলেন, বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের জন্য মডেল মসজিদ কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো অর্থ পরিশোধ করা হয়নি। এতে বকেয়ার পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন চৌধুরী বলেন, তিনি সদ্য এ উপজেলায় যোগদান করেছেন। মডেল মসজিদের বিপুল অঙ্কের বিদ্যুৎ বিল একবারে পরিশোধ করা সম্ভব নয়। মসজিদের আয় বৃদ্ধির উপায় এবং বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

জনপ্রিয় সংবাদ

বহিষ্কারের দুদিন আগেই পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছিলেন হাসান মামুন, আজ বহিষ্কার করল বিএনপি

জামালপুরের মাদারগঞ্জ মডেল মসজিদে ৩৫ মাসের বিদ্যুৎ বিল বকেয়া ছয় লাখ টাকা

আপডেট সময় ০৩:৫১:০২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫

জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে ৩৫ মাসে বিদ্যুৎ বিল বকেয়া দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬ লাখ টাকা। বিপুল অঙ্কের এই বকেয়া পরিশোধ করতে না পারায় চরম সংকটে পড়েছে মসজিদ কর্তৃপক্ষ। বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের জন্য বারবার তাগাদা দেওয়া হলেও এখনো কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।

উপজেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশন সূত্রে জানা যায়, মাদারগঞ্জ পৌরশহরের বালিজুড়ী বাজার এলাকায় ২০২৩ সালের ১৬ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে মডেল মসজিদের কার্যক্রম শুরু হয়। উদ্বোধনের প্রায় তিন বছরে মসজিদের বিদ্যুৎ ব্যবহার ও ব্যয় বেড়েছে উল্লেখযোগ্যভাবে। তবে মসজিদ পরিচালনা কমিটি কিংবা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধে তেমন উদ্যোগ দেখা যায়নি।

মডেল মসজিদে আজান, নামাজ ও সার্বিক রক্ষণাবেক্ষণের জন্য একজন পেশ ইমাম, একজন মুয়াজ্জিন ও দুইজন খাদেম নিয়োগপ্রাপ্ত রয়েছেন। তাদের সম্মানি ইসলামিক ফাউন্ডেশন বহন করলেও মসজিদের অন্যান্য ব্যয়—পরিচ্ছন্নতা, বিদ্যুৎ বিল ও দৈনন্দিন পরিচালন খরচ—নামাজরত মুসল্লিদের দানের অর্থ থেকেই চালানো হচ্ছে।

মসজিদটিতে একাধিক নামাজ কক্ষ, দামি ঝাড়বাতি, শতাধিক লাইট, ফ্যান ও এসি রয়েছে। পাশাপাশি নারী-পুরুষ ও প্রতিবন্ধীদের জন্য পৃথক অজুখানা, আধুনিক টয়লেট, অটিজম কর্নার, ইসলামিক বই বিক্রয় কেন্দ্র, ইসলামিক লাইব্রেরি, ইমাম ট্রেনিং সেন্টার, হজ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, ইসলামিক গবেষণা ও শিশু ও গণশিক্ষার ব্যবস্থাও রয়েছে। এছাড়া দেশি-বিদেশি পর্যটকদের জন্য আবাসন ও অতিথিশালা, মৃতদেহ গোসল ও কফিন বহনের ব্যবস্থাও আছে।

উপজেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ফিল্ড সুপারভাইজার আসাদুল্লাহ সিদ্দিকী জানান, ২০২৫ সালের নভেম্বর পর্যন্ত মডেল মসজিদের বকেয়া বিদ্যুৎ বিলের পরিমাণ প্রায় ৫ লাখ ৭৯ হাজার টাকা। প্রতি মাসে গড়ে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা বিদ্যুৎ বিল আসলেও মুসল্লিদের দান থেকে মাসে আয় হয় মাত্র দুই থেকে তিন হাজার টাকা। বালিজুড়ী বাজার এলাকায় একাধিক মসজিদ থাকায় এবং বাজার থেকে কিছুটা দূরে মডেল মসজিদ নির্মিত হওয়ায় মুসল্লির উপস্থিতি কম, ফলে দানের পরিমাণও কম হচ্ছে।

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মাদারগঞ্জ জোনাল অফিসের উপমহাব্যবস্থাপক ওবায়দুল্লাহ আল মাসুম বলেন, বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের জন্য মডেল মসজিদ কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো অর্থ পরিশোধ করা হয়নি। এতে বকেয়ার পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন চৌধুরী বলেন, তিনি সদ্য এ উপজেলায় যোগদান করেছেন। মডেল মসজিদের বিপুল অঙ্কের বিদ্যুৎ বিল একবারে পরিশোধ করা সম্ভব নয়। মসজিদের আয় বৃদ্ধির উপায় এবং বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।