ঢাকা ০৮:৪৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দিল্লিতে বসেই ভারতের এক প্রধানমন্ত্রীর মুখের ওপর যে জবাব দিয়েছিলেন খালেদা জিয়া

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ০৫:১৮:৫৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫
  • ৫৪০ বার পড়া হয়েছে

তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুর খবর ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোতে ব্যাপক গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশ করা হচ্ছে। এসব প্রতিবেদনে বিশেষভাবে উঠে আসছে ভারতের আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে তার দৃঢ় ও আপসহীন অবস্থানের কথা। এরই অংশ হিসেবে আলোচনায় এসেছে ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী পি. ভি. নরসিমা রাওয়ের সঙ্গে তার এক সরাসরি ও সাহসী কথোপকথন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, বেগম খালেদা জিয়ার জন্ম তৎকালীন অবিভক্ত ভারতের জলপাইগুড়িতে। শৈশবে পরিবারের কাছে তিনি ‘পুতুল’ নামে পরিচিত ছিলেন। পরে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে বিয়ের পর তার নামের সঙ্গে যুক্ত হয় ‘জিয়া’ উপাধি।
প্রতিবেদনে পুনম পান্ডের লেখা ‘ইন্ডিয়া বাংলাদেশ ডমিস্টিক পলিটিক্স’ বইয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, তিনবার প্রধানমন্ত্রী হলেও খালেদা জিয়া ভারত সফর করেন মাত্র দুবার। এর মধ্যে একটি ছিল ১৯৯২ সালে নয়াদিল্লি সফর। সে সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরসিমা রাওয়ের সঙ্গে সাক্ষাতে তিনি বাংলাদেশ–ভারত সম্পর্কের নানা স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে কথা বলেন।
বইটিতে উল্লেখ করা হয়, বৈঠকে নরসিমা রাও অভিযোগ করেন যে বহু বাংলাদেশি অবৈধভাবে ভারতে বসবাস করছেন। এর জবাবে খালেদা জিয়া তাৎক্ষণিক ও দৃঢ় কণ্ঠে বলেন—
“ভারতে বাঙালিরাও বাংলা বোঝেন, বাংলায় কথা বলেন—এর অর্থ এই নয় যে তারা বাংলাদেশি।”
এই বক্তব্য ভারতীয় রাজনৈতিক মহলেও আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল বলে উল্লেখ করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম।
বিএনপির প্রেস উইং ও দলীয় ওয়েবসাইট সূত্রে জানা যায়, বেগম খালেদা জিয়ার জন্ম ১৯৪৬ সালের ১৫ আগস্ট, জলপাইগুড়ির নয়াবস্তি এলাকায়। জন্মের সময় তার নাম রাখা হয় ‘শান্তি’। পরে তার মেজো বোন সেলিমা ইসলাম আদর করে তার নাম রাখেন ‘পুতুল’। পরবর্তীতে পরিবার দিনাজপুরে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে। তার বাবা ছিলেন ইস্কান্দার মজুমদার এবং মা তৈয়বা মজুমদার। তাদের আদি বাড়ি ফেনী জেলার ফুলগাজী উপজেলার শ্রীপুর গ্রামে।
শিক্ষাজীবনে খালেদা জিয়া ১৯৬০ সালে দিনাজপুর সরকারি স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন। এরপর দিনাজপুর সুরেন্দ্রনাথ কলেজে পড়াশোনা করেন। কলেজে অধ্যয়নকালেই তিনি তৎকালীন সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন জিয়াউর রহমানের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর বিশ্লেষণে উঠে আসছে—খালেদা জিয়া কেবল বাংলাদেশের রাজনীতিতে নয়, আঞ্চলিক রাজনীতিতেও ছিলেন এক দৃঢ় কণ্ঠস্বর, যিনি জাতীয় স্বার্থের প্রশ্নে কখনো আপস করেননি।

জনপ্রিয় সংবাদ

বহিষ্কারের দুদিন আগেই পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছিলেন হাসান মামুন, আজ বহিষ্কার করল বিএনপি

দিল্লিতে বসেই ভারতের এক প্রধানমন্ত্রীর মুখের ওপর যে জবাব দিয়েছিলেন খালেদা জিয়া

আপডেট সময় ০৫:১৮:৫৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫

তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুর খবর ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোতে ব্যাপক গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশ করা হচ্ছে। এসব প্রতিবেদনে বিশেষভাবে উঠে আসছে ভারতের আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে তার দৃঢ় ও আপসহীন অবস্থানের কথা। এরই অংশ হিসেবে আলোচনায় এসেছে ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী পি. ভি. নরসিমা রাওয়ের সঙ্গে তার এক সরাসরি ও সাহসী কথোপকথন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, বেগম খালেদা জিয়ার জন্ম তৎকালীন অবিভক্ত ভারতের জলপাইগুড়িতে। শৈশবে পরিবারের কাছে তিনি ‘পুতুল’ নামে পরিচিত ছিলেন। পরে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে বিয়ের পর তার নামের সঙ্গে যুক্ত হয় ‘জিয়া’ উপাধি।
প্রতিবেদনে পুনম পান্ডের লেখা ‘ইন্ডিয়া বাংলাদেশ ডমিস্টিক পলিটিক্স’ বইয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, তিনবার প্রধানমন্ত্রী হলেও খালেদা জিয়া ভারত সফর করেন মাত্র দুবার। এর মধ্যে একটি ছিল ১৯৯২ সালে নয়াদিল্লি সফর। সে সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরসিমা রাওয়ের সঙ্গে সাক্ষাতে তিনি বাংলাদেশ–ভারত সম্পর্কের নানা স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে কথা বলেন।
বইটিতে উল্লেখ করা হয়, বৈঠকে নরসিমা রাও অভিযোগ করেন যে বহু বাংলাদেশি অবৈধভাবে ভারতে বসবাস করছেন। এর জবাবে খালেদা জিয়া তাৎক্ষণিক ও দৃঢ় কণ্ঠে বলেন—
“ভারতে বাঙালিরাও বাংলা বোঝেন, বাংলায় কথা বলেন—এর অর্থ এই নয় যে তারা বাংলাদেশি।”
এই বক্তব্য ভারতীয় রাজনৈতিক মহলেও আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল বলে উল্লেখ করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম।
বিএনপির প্রেস উইং ও দলীয় ওয়েবসাইট সূত্রে জানা যায়, বেগম খালেদা জিয়ার জন্ম ১৯৪৬ সালের ১৫ আগস্ট, জলপাইগুড়ির নয়াবস্তি এলাকায়। জন্মের সময় তার নাম রাখা হয় ‘শান্তি’। পরে তার মেজো বোন সেলিমা ইসলাম আদর করে তার নাম রাখেন ‘পুতুল’। পরবর্তীতে পরিবার দিনাজপুরে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে। তার বাবা ছিলেন ইস্কান্দার মজুমদার এবং মা তৈয়বা মজুমদার। তাদের আদি বাড়ি ফেনী জেলার ফুলগাজী উপজেলার শ্রীপুর গ্রামে।
শিক্ষাজীবনে খালেদা জিয়া ১৯৬০ সালে দিনাজপুর সরকারি স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন। এরপর দিনাজপুর সুরেন্দ্রনাথ কলেজে পড়াশোনা করেন। কলেজে অধ্যয়নকালেই তিনি তৎকালীন সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন জিয়াউর রহমানের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর বিশ্লেষণে উঠে আসছে—খালেদা জিয়া কেবল বাংলাদেশের রাজনীতিতে নয়, আঞ্চলিক রাজনীতিতেও ছিলেন এক দৃঢ় কণ্ঠস্বর, যিনি জাতীয় স্বার্থের প্রশ্নে কখনো আপস করেননি।