সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মাসুদ কামাল বলেছেন, ঈদের আগের দিন জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এমন কিছু মন্তব্য করেছেন, যা জাতীয় ঐক্যকে সুসংহত না করে বরং জাতিকে আরও বিভক্ত করেছে। বৃহস্পতিবার রাতে দেওয়া ভাষণের পরদিন (শুক্রবার) নিজের ফেসবুক পেজ ‘কথা’-য় দেওয়া এক বিশ্লেষণে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মাসুদ কামাল বলেন, “আমি ভেবেছিলাম, তিনি এমন কিছু বলবেন যার মাধ্যমে আমাদের জাতীয় ঐক্য দৃঢ় হবে। কিন্তু তিনি উল্টো করেছেন। তাঁর বক্তব্য জাতীয় জীবনে বিভেদের মাত্রাকে আরও তীব্র করে তুলেছে।”
তিনি আরও বলেন, “আওয়ামী লীগের গত ১৫ বছরের শাসনামলে আমি বহুবার বলেছি, তারা দেশটাকে বিভক্ত করেছে—এই ভাবনায় যে, তুমি আওয়ামী লীগ করো, তুমি জামায়াত করো, অতএব তুমি আমাদের লোক না, তুমি দেশপ্রেমিক না। সেই বিভক্তির বিরুদ্ধে আমরা আন্দোলন করেছি। অথচ ড. ইউনূস এসে সেই বিভক্তিকে আরও তীক্ষ্ণ করেছেন। গতরাতের ভাষণে তিনি সেটিকে আরও গভীর করেছেন।”
বন্দর ও মানবিক চ্যানেল সংক্রান্ত মন্তব্য নিয়েও মাসুদ কামাল সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা যেভাবে আত্মপক্ষ সমর্থন করেছেন, সেটি অনেকটা আগের সরকারের স্টাইলেই হয়েছে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, “আপনি যে কোম্পানিকে দায়িত্ব দিয়েছেন, সে কি আন্তর্জাতিক কোনো প্রতিযোগিতার মাধ্যমে নির্বাচিত? আপনি যদি বলেন, এটা সবচেয়ে ভালো কোম্পানি, তাই তাকে কাজ দিলাম—এটা কি আপনার ব্যক্তিগত সম্পত্তি? না, এটা তো রাষ্ট্রের সম্পদ। এখানে নিয়ম মেনে চলতে হবে।”
তিনি একটি উদাহরণ দিয়ে বলেন, “ধরুন আপনি চট্টগ্রাম যাবেন, আমি বললাম, আপনি বিএমডাব্লিউ গাড়িতে যান—সর্বোচ্চ আরাম পাবেন। কিন্তু আপনি যাবেন না, কারণ তেলের খরচই বহন করতে পারবেন না। সামর্থ্যের মধ্যে যে মাধ্যম নিরাপদ এবং সাশ্রয়ী, সেটিই তো রাষ্ট্রের জন্য ভালো। কাজেই সেরা কোম্পানি আনার দাবি যদি সামর্থ্য, প্রতিযোগিতা ও স্বচ্ছতার ভিত্তিতে না হয়, তাহলে সেটা প্রশ্নবিদ্ধ হবে।”