অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস চার দিনের সরকারি সফরে বর্তমানে লন্ডনে অবস্থান করছেন। যুক্তরাজ্য সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে বৈঠকসহ গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন তিনি। সফরের অংশ হিসেবে বুধবার তিনি যোগ দেন লন্ডনের খ্যাতনামা গবেষণা প্রতিষ্ঠান চ্যাথাম হাউজে একটি অনুষ্ঠানে।
তবে তার এই সফর ঘিরে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে লন্ডনের বাঙালি কমিউনিটির একাংশে। চ্যাথাম হাউজে তার অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের আগে থেকেই মূল প্রবেশপথের উল্টোদিকে অবস্থান নেয় যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের কিছু স্থানীয় নেতা-কর্মী। তারা স্লোগান দেন শেখ হাসিনার পক্ষে এবং ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে, যা ধীরে ধীরে বিক্ষোভের রূপ নেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশ মোতায়েন ছিল কঠোর নিরাপত্তা।
এই বিক্ষোভ এবং তাকে ঘিরে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনাকে ব্যঙ্গ করে ড. ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম তার ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে একটি পোস্ট করেন। তিনি লেখেন, “ঘেউ ঘেউ করার জন্য পুরা ইউরোপ টোকাইয়া মাত্র ২০টা লোক পাইলো!” এই সংক্ষিপ্ত কিন্তু রসিকতাপূর্ণ পোস্টটি মুহূর্তেই সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়।
এই পোস্টে নানা ধরনের মন্তব্য এসেছে। কারও চোখে এটি সাহসিকতা ও দৃঢ় অবস্থান, আবার কেউ দেখেছেন এটিকে বিতর্কিত ও অশোভন। পোস্টের মন্তব্যে কেউ বলেছেন, “মজা পাইলাম শফিক ভাই! টোকাই ছাড়া বাংলাদেশের সকল মানুষ আপনাদের পাশে আছে।” আবার কেউ শফিকুল আলমকে উদ্দেশ্য করে লিখেছেন, “আপনার মুখ দেখে মনে হলো ভালোই ঘাবড়ে গেছেন।”
ড. ইউনূস যখন অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করেন, তখন তার আশপাশে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। আমন্ত্রিত অতিথিদের নিরাপত্তার স্বার্থে প্রবেশে ছিল কড়াকড়ি, পরিচয়পত্র যাচাই এবং নিয়ন্ত্রিত চলাচল। বিক্ষোভকারীরা ঘটনাস্থলে লিফলেট বিতরণ করেও উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টা করে।
পুরো সফরের প্রেক্ষাপটে ড. ইউনূসের উপস্থিতি যেমন কূটনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতার প্রতিফলনও দেখা গেছে প্রবাসেও। শফিকুল আলমের ব্যঙ্গাত্মক পোস্ট একদিকে সফরকে ঘিরে সমর্থকদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস তৈরি করলেও, অন্যদিকে সমালোচকদের কাছে এটি হয়ে উঠেছে বিতর্কের বিষয়।