Home ধর্ম অতীতের সব রেকর্ড ভেগে শোলাকিয়ায় লাখো মুসল্লি

অতীতের সব রেকর্ড ভেগে শোলাকিয়ায় লাখো মুসল্লি

এবার উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ ও দেশের সবচেয়ে প্রাচীন ঈদগাহ ময়দান কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়ায় সর্বোচ্চ সতর্কতা ও নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে লাখো মুসল্লির অংশগ্রহণে শেষ হলো ঈদের জামাত। এ ঈদ জামাতে প্রায় ৬ লাখ মুসল্লি অংশ নেয়।

আজ সোমবার (৩১ মার্চ) সকাল ৯টার আগেই মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। সকাল ১০টায় ঈদের জামাত শুরুর আগে ঈদগাহ ময়দানের রেওয়াজ অনুযায়ী জামাত শুরুর ৫ মিনিট আগে ৩টি, ৩ মিনিট আগে ২টি ও ১ মিনিট আগে ১টি শটগানের ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে নামাজ আরম্ভের ঘোষণা দেয়া হয়। জামাতে ইমামতি করেন জেলা শহরের বড় বাজার মসজিদের খতিব মুফতি আবুল খায়ের মোহাম্মদ ছাইফুল্লাহ।

ঈদগাহ ময়দানে জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, রাজনৈতিক ব্যক্তিসহ দেশ-বিদেশের মুসল্লিরা ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে বাংলাদেশসহ মুসলিম উম্মা বিশেষ করে ফিলিস্তিনের মুসলমানদের জন্য শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে দোয়া করা হয়।

ঈদগাহ মাঠ ছাড়িয়ে আশপাশের রাস্তাঘাট, ছাদ এবং নদীর পাড়েও মুসল্লিদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। শোলাকিয়া মাঠে অনুষ্ঠিত এই ঈদ জামাতে এবার ৬ লাখেরও বেশি মুসল্লি অংশগ্রহণ করেছেন বলে জানিয়েছেন ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সদস্যরা। এদিকে দেশের সবচেয়ে বড় এই ঈদের জামাত নির্বিঘ্ন করতে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয় স্থানীয় প্রশাসন। মোতায়েন করা হয় র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব), আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন), রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্স (আরআরএফ), বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং জেলা পুলিশের সহস্রাধিক সদস্য। মাঠের ভেতর ও বাইরে সিসি ক্যামেরা ছাড়াও পুরো মাঠ সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করে দুটি ড্রোন। ৬টি পর্যবেক্ষণ টাওয়ারের মাধ্যমে আগত ব্যক্তিদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। নিরাপত্তার স্বার্থে জায়নামাজ ও মোবাইল ফোন ছাড়া আর কিছু সঙ্গে নিয়ে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।

শোলাকিয়ায় নামাজ আদায় করতে শনিবার থেকে নরসিংদী, গাজীপুর, মুন্সিগঞ্জ, রংপুর, ঠাকুরগাঁও, কুমিল্লা, বরিশাল, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, হবিগঞ্জ, নেত্রকোনা, যশোরসহ ৬৪টি জেলা ও বিভিন্ন উপজেলা থেকে কিশোরগঞ্জে লোক আসতে শুরু করে। অনেকে আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধবের বাসায়, আবাসিক হোটেল, শহরের মসজিদগুলোতে এবং ঈদগাহ মাঠে খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়ে রাত যাপন করেন।

জামাত শেষে মোনাজাতের পূর্বে ইমাম আবুল খায়ের মোহাম্মদ ছাইফুল্লাহ উপস্থিত পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে আগামী বছর এ মাঠে নামাজে আসার আগে প্রত্যেকে যেন বাড়িতে একটি গাছের চারা রোপণ করে আসার আহ্বান জানান। শেষে মোনাজাতে ইমাম বায়ান্নের ভাষা আন্দোলনে, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে, চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে নিহতদের স্মরণ এবং বাংলাদেশসহ মুসলিম উম্মার শান্তি-শৃঙ্খলা, সমৃদ্ধি ও ঐক্য কামনাসহ বিশেষ দোয়া করা হয়। এ সময় লাখো লাখো মুসল্লিদের উচ্চকিত হাত আর আবাল-বৃদ্ধ-বনিতার আমীন, আমীন ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠে পুরো ঈদগাহ এলাকা।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Exit mobile version