ঢাকা ০৩:০১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫, ৬ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জামালপুরের মাদারগঞ্জে নাম ভাঙ্গিয়ে বিএনপি নেতার চাদাবাজির অডিও ভাইরাল

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ১০:১৪:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৫
  • ৫৩৭ বার পড়া হয়েছে

জামালপুরের মাদারগঞ্জের পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খালেদ মাসুদ তালুকদার সোহেলের নিজের স্বীকারোক্তি মুলক একটি চাদাবাজির অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে৷  সোমবার (১৮ আগস্ট) রাতে বিভিন্ন পেইজ ও প্রোফাইল থেকে ছড়িয়ে পড়ায় অডিওটি বর্তমানে জেলা ছাড়িয়ে এখন ‘টক অব দ্য কান্ট্রি’তে পরিণত হয়েছে। দলের সাধারণ সম্পাদক হয়ে  তার এমন কান্ডে নেটিজনদের তীব্র সমালোচনা চলছে সোশ্যাল নেটওয়ার্কে। এদিকে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে মাদারগঞ্জ বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে।
ভাইরাল হওয়া ৬ মিনিট ১০ সেকেন্ড অডিওতে ৩ / ৪ জনের কথোপকথনে শুনা যায়, এক ব্যবসার থেকে ১০ লাখ টাকার মধ্যে ৬ লাখ টাকা দিছে। আর তা ছাড়া প্রতি মাসে ১ লাখ করে টাকা দেয়। এদিকে আরেকজন বলে উঠল তুমি তো ডিআইজির নাম সহ পচায় ফেলছো; এর উত্তরে বিএনপি নেতা খালেদ মাসুদ তালুকদার সোহেল বলেন, ডিআইজির নাম কইয়াইতো খাই আমি। এরপর হাসি তামাশা করে বিএনপি নেতা আরো বলেন, আমি পৌর বিএনপির সেক্রেটারি আর ডিআইজির বইনতে (বোন জামাই) আমি খাব না তাইলে কেরা খাব। এখন অনেকেই এসে বলে ভাই এইল্লা দেইখেন, তারপর আরেকজন ২ লাখ টাকা দিয়ে গেছে দেখবার জন্য, আমি দেখলাম । আমার ২ লাখ টাকা হজম হলো না? এদিকে তার এমন কথাতে আরেকজন বলে উঠল তুমি পৌর বিএনপি সেক্রেটারি তুমি খাও এটা কি মানুষে জানে না কবার চাও উত্তরে বিএনপি নেতা বলে, আমার অতহানি ক্ষমতা আছে তো তাই আমি খাই। তোমার নাই তুমি খাবার পাওনা। হাসি আড্ডার মধ্যে তিনি আবারো বলে উঠল, ভাই আমার কি দোষ। ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা থেকে ওসি আসছে; বলে ভাই ২ লাখ টাকা থাকল একটু দেইখেন। আমি ২ লাখ টাকা নিয়ে ওরে ভাল করে দেখলাম শেষ। ওসিরা আমাক টাকা দিয়ে গেলে কি আমি না করমু। এদিকে হেসে আরেক নেতা বলে উঠে সুযোগ কি বার বার আসে। সে সময় বিএনপি নেতা আবারো বলেন, আমি হালাল করেই খাই। যে মনে করেন আমায় ৬ লাখ টাকা দিছে সে প্রতিমাসে আমায় ১ লাখ করে টাকা দেয় নইলে গাড়ী বন্ধ। ময়মনসিংহ এর সব বালু আমার এখান থাইকা নিয়ে যায়। সে সময় আরেক নেতা বলে উঠল  এগুলা সব বাবুল ভাই জানে? তিনি উত্তরে রাগান্বিত হয়ে বলে উঠল, বাবুল জানুকগা থাইকা বাবুলের বাপ জানুকগা তা আমার কি?  আমি আমার হেডামে চলি।  আমি বাবুলের হেডামে কি আটকায়ছি।  আমার ক্ষমতায় আমি আটকায়ছি। আমার নাম কইয়া চান্দা তুলবার গেছিল ৩ টারে আটকায় থুইছি জেল খানার মধ্যে। আমার ক্ষমতা আছে আমি আটকামু না কি করমু। আজ ক্ষমতা আছে আজ দেখামু, কাল থাকব না কাল দেখামু না। অডিওতে আরো শুনা যায় বিএনপি নেতার কন্ঠে খামুই তো। এদিকে আরেক কর্মী বলে উঠল আপনি তো সোহেল না একটা সংগঠন এর সেক্রেটারি। উত্তরে তিনি বলে উঠলেন, বহিষ্কার করে দাও। ক্ষ্যাম থাকলে চান্দাবাজি করবার লাগছে, ধান্দাবাজি করবার লাগছে বলে বহিষ্কার করে দাও। এদিকে আরেক কর্মী বলে উঠল সেদিন আমাগোরে মুখলেসে ধরছে বলে সোহেলের নাম তো সেনাবাহিনীর কাছে আমাদের কাছে রিপোর্ট আইছে।  পরে বিএনপি নেতা উত্তর দিয়ে বলে উঠে, কয় সেনাবাহিনীতো আমাক কোনদিন ডাকে না। আমার বিরুদ্ধে সরাসরি সেনাবাহিনীর কাছে অভিযোগ দিয়েনছে। কয়েকজনে দিছে। কয় সেনাবাহিনী তো আমাক কোনদিন ডাহে না। আরেকজনে বলে উঠল তুমি নিজেই স্বীকার করছ ভাই সব এর জন্য ধন্যবাদ। এটা শুনেই বিএনপি নেতা বলে উঠল আমি ৫ লাখ টাকার গাড়ীতে চড়ি আপনি ঠাপুর পান না।
এ বিষয়ে মাদারগঞ্জ পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক  খালেদ মাসুদ তালুকদার সোহেল জানান, আপনারা তদন্ত করবেন। মানে যেগুলা বলছি এইগুলা কত টুকু সত্য এটা আপনারা তদন্ত করবেন। মুল বিষয় হল আমাকে ফল্ডে ফালানোর জন্য আমাদের পৌর বিএনপির সভাপতি নাম গফুর সাব। উনি খালি বাবুল সাহেবের কাছে বলে বিচার দেয়। তুমি মেল্লা টাহা কামাই করো অমুক খান থাইকা টাকা পাও, তমক খান থাইকা টাকা পাও খালি এগুলা খুচায়। পরে একদিন আমারে ধরছে পরিকল্পনা করেই সম্ভবত আর কি। পরে বলছি এই যে অমক খান থাইকা টাকা দেয়, তমক খান থাইকা টাকা দেয়, ঘাটায় ঘাটায় টাহা দেয়, এমনে টাহা দেয়, সেমনে টাহা দেয়। তিনি আরও জানান, আমি সোহেল তালুকদার যদি কোন অন্যায় করে থাকি আপনারা তদন্ত করবেন। বের করবেন। সোহেল তালুকদার একটা অন্যায় করছে কিনা। দুর্নীতি করে কিনা, চাদাবাজি করে কিনা। কারো কাছ থাইকা টাকা নেয় কিনা,এটা আপনারা দেখবেন। তিনি আরো জানান, আমি এখন বুঝতেছি যে, ওনারা পরিকল্পিত ভাবে আলোচনার মাধ্যমে আমাকে এই প্রশ্ন গুলা করছে যেন আমি এ রকম করে উত্তর দেই। আমার জন্ম থেকে আজ পর্যন্ত কোন অন্যায় কিংবা কোন দুর্নীতি করে থাকি আপনারা খতিয়ে দেখবেন।
এদিকে মাদারগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ সাইফুল্লাহ সাইফ বলেন,  এ বিষয়ে আমি কোন অভিযোগ পায়নি।  অভিযোগ পেলে সে যেই হোক না কেন আইনের আওতায় আনা হবে।
এ বিষয়ে মাদারগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি মঞ্জুর কাদের বাবুল খান সোমবার রাত সাড়ে ১০ টায় মুঠোফোনে জানান, আমি এখনো তেমন কিছু দেখিনি বা শুনিনি।  আগেই মন্তব্য করা উচিৎ হবে না।

জনপ্রিয় সংবাদ

বিমানে ত্রাণ পৌঁছল গাজায়, মানবিক সংকট এখনও কমেনি

জামালপুরের মাদারগঞ্জে নাম ভাঙ্গিয়ে বিএনপি নেতার চাদাবাজির অডিও ভাইরাল

আপডেট সময় ১০:১৪:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৫

জামালপুরের মাদারগঞ্জের পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খালেদ মাসুদ তালুকদার সোহেলের নিজের স্বীকারোক্তি মুলক একটি চাদাবাজির অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে৷  সোমবার (১৮ আগস্ট) রাতে বিভিন্ন পেইজ ও প্রোফাইল থেকে ছড়িয়ে পড়ায় অডিওটি বর্তমানে জেলা ছাড়িয়ে এখন ‘টক অব দ্য কান্ট্রি’তে পরিণত হয়েছে। দলের সাধারণ সম্পাদক হয়ে  তার এমন কান্ডে নেটিজনদের তীব্র সমালোচনা চলছে সোশ্যাল নেটওয়ার্কে। এদিকে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে মাদারগঞ্জ বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে।
ভাইরাল হওয়া ৬ মিনিট ১০ সেকেন্ড অডিওতে ৩ / ৪ জনের কথোপকথনে শুনা যায়, এক ব্যবসার থেকে ১০ লাখ টাকার মধ্যে ৬ লাখ টাকা দিছে। আর তা ছাড়া প্রতি মাসে ১ লাখ করে টাকা দেয়। এদিকে আরেকজন বলে উঠল তুমি তো ডিআইজির নাম সহ পচায় ফেলছো; এর উত্তরে বিএনপি নেতা খালেদ মাসুদ তালুকদার সোহেল বলেন, ডিআইজির নাম কইয়াইতো খাই আমি। এরপর হাসি তামাশা করে বিএনপি নেতা আরো বলেন, আমি পৌর বিএনপির সেক্রেটারি আর ডিআইজির বইনতে (বোন জামাই) আমি খাব না তাইলে কেরা খাব। এখন অনেকেই এসে বলে ভাই এইল্লা দেইখেন, তারপর আরেকজন ২ লাখ টাকা দিয়ে গেছে দেখবার জন্য, আমি দেখলাম । আমার ২ লাখ টাকা হজম হলো না? এদিকে তার এমন কথাতে আরেকজন বলে উঠল তুমি পৌর বিএনপি সেক্রেটারি তুমি খাও এটা কি মানুষে জানে না কবার চাও উত্তরে বিএনপি নেতা বলে, আমার অতহানি ক্ষমতা আছে তো তাই আমি খাই। তোমার নাই তুমি খাবার পাওনা। হাসি আড্ডার মধ্যে তিনি আবারো বলে উঠল, ভাই আমার কি দোষ। ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা থেকে ওসি আসছে; বলে ভাই ২ লাখ টাকা থাকল একটু দেইখেন। আমি ২ লাখ টাকা নিয়ে ওরে ভাল করে দেখলাম শেষ। ওসিরা আমাক টাকা দিয়ে গেলে কি আমি না করমু। এদিকে হেসে আরেক নেতা বলে উঠে সুযোগ কি বার বার আসে। সে সময় বিএনপি নেতা আবারো বলেন, আমি হালাল করেই খাই। যে মনে করেন আমায় ৬ লাখ টাকা দিছে সে প্রতিমাসে আমায় ১ লাখ করে টাকা দেয় নইলে গাড়ী বন্ধ। ময়মনসিংহ এর সব বালু আমার এখান থাইকা নিয়ে যায়। সে সময় আরেক নেতা বলে উঠল  এগুলা সব বাবুল ভাই জানে? তিনি উত্তরে রাগান্বিত হয়ে বলে উঠল, বাবুল জানুকগা থাইকা বাবুলের বাপ জানুকগা তা আমার কি?  আমি আমার হেডামে চলি।  আমি বাবুলের হেডামে কি আটকায়ছি।  আমার ক্ষমতায় আমি আটকায়ছি। আমার নাম কইয়া চান্দা তুলবার গেছিল ৩ টারে আটকায় থুইছি জেল খানার মধ্যে। আমার ক্ষমতা আছে আমি আটকামু না কি করমু। আজ ক্ষমতা আছে আজ দেখামু, কাল থাকব না কাল দেখামু না। অডিওতে আরো শুনা যায় বিএনপি নেতার কন্ঠে খামুই তো। এদিকে আরেক কর্মী বলে উঠল আপনি তো সোহেল না একটা সংগঠন এর সেক্রেটারি। উত্তরে তিনি বলে উঠলেন, বহিষ্কার করে দাও। ক্ষ্যাম থাকলে চান্দাবাজি করবার লাগছে, ধান্দাবাজি করবার লাগছে বলে বহিষ্কার করে দাও। এদিকে আরেক কর্মী বলে উঠল সেদিন আমাগোরে মুখলেসে ধরছে বলে সোহেলের নাম তো সেনাবাহিনীর কাছে আমাদের কাছে রিপোর্ট আইছে।  পরে বিএনপি নেতা উত্তর দিয়ে বলে উঠে, কয় সেনাবাহিনীতো আমাক কোনদিন ডাকে না। আমার বিরুদ্ধে সরাসরি সেনাবাহিনীর কাছে অভিযোগ দিয়েনছে। কয়েকজনে দিছে। কয় সেনাবাহিনী তো আমাক কোনদিন ডাহে না। আরেকজনে বলে উঠল তুমি নিজেই স্বীকার করছ ভাই সব এর জন্য ধন্যবাদ। এটা শুনেই বিএনপি নেতা বলে উঠল আমি ৫ লাখ টাকার গাড়ীতে চড়ি আপনি ঠাপুর পান না।
এ বিষয়ে মাদারগঞ্জ পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক  খালেদ মাসুদ তালুকদার সোহেল জানান, আপনারা তদন্ত করবেন। মানে যেগুলা বলছি এইগুলা কত টুকু সত্য এটা আপনারা তদন্ত করবেন। মুল বিষয় হল আমাকে ফল্ডে ফালানোর জন্য আমাদের পৌর বিএনপির সভাপতি নাম গফুর সাব। উনি খালি বাবুল সাহেবের কাছে বলে বিচার দেয়। তুমি মেল্লা টাহা কামাই করো অমুক খান থাইকা টাকা পাও, তমক খান থাইকা টাকা পাও খালি এগুলা খুচায়। পরে একদিন আমারে ধরছে পরিকল্পনা করেই সম্ভবত আর কি। পরে বলছি এই যে অমক খান থাইকা টাকা দেয়, তমক খান থাইকা টাকা দেয়, ঘাটায় ঘাটায় টাহা দেয়, এমনে টাহা দেয়, সেমনে টাহা দেয়। তিনি আরও জানান, আমি সোহেল তালুকদার যদি কোন অন্যায় করে থাকি আপনারা তদন্ত করবেন। বের করবেন। সোহেল তালুকদার একটা অন্যায় করছে কিনা। দুর্নীতি করে কিনা, চাদাবাজি করে কিনা। কারো কাছ থাইকা টাকা নেয় কিনা,এটা আপনারা দেখবেন। তিনি আরো জানান, আমি এখন বুঝতেছি যে, ওনারা পরিকল্পিত ভাবে আলোচনার মাধ্যমে আমাকে এই প্রশ্ন গুলা করছে যেন আমি এ রকম করে উত্তর দেই। আমার জন্ম থেকে আজ পর্যন্ত কোন অন্যায় কিংবা কোন দুর্নীতি করে থাকি আপনারা খতিয়ে দেখবেন।
এদিকে মাদারগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ সাইফুল্লাহ সাইফ বলেন,  এ বিষয়ে আমি কোন অভিযোগ পায়নি।  অভিযোগ পেলে সে যেই হোক না কেন আইনের আওতায় আনা হবে।
এ বিষয়ে মাদারগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি মঞ্জুর কাদের বাবুল খান সোমবার রাত সাড়ে ১০ টায় মুঠোফোনে জানান, আমি এখনো তেমন কিছু দেখিনি বা শুনিনি।  আগেই মন্তব্য করা উচিৎ হবে না।