ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর অন্য যে কোনো দেশের চেয়ে বেশি উচ্ছ্বাস দেখা গিয়েছিলো ভারতে। দিল্লির মোদী সরকার প্রকাশ্যে আনন্দ প্রকাশ করেছিলো, এমনকি ট্রাম্পকে নিয়ে মন্দির ও মূর্তি স্থাপন করে পূজা-অর্চনার ঘটনাও শিরোনাম হয়েছিলো সে সময়। তবে সময়ের পরিক্রমায় সেই ট্রাম্পই এখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জন্য বড় অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন।
রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ককে কেন্দ্র করে ব্রাজিলের পর দেশটির ওপর সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। এতে ভারতের রপ্তানি খাত বড় ধাক্কা খেলেও, দিল্লি প্রকাশ্যে ওয়াশিংটনের প্রতি কঠোর অবস্থান বজায় রেখেছে।
বুধবার থেকে নতুন শুল্ক কার্যকর হওয়ার আগের দিনই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রকাশ্যে মোদীকে ‘ভয়ংকর মানুষ’ আখ্যা দেন। যুক্তরাষ্ট্রের মন্ত্রিসভার বৈঠকে সাংবাদিকদের তিনি জানান, ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ শুরু হলে তিনি সরাসরি মোদীকে ফোন করেছিলেন। ট্রাম্পের দাবি, ফোনকলে মোদীর কণ্ঠে রাগ ও ঘৃণা স্পষ্ট ছিল। তিনি আরও বলেন, “আমি মোদীকে জানিয়েছিলাম, সংঘাত যদি না থামে তবে এমন শুল্ক বসাবো যাতে ভারতের মাথা ঘুরে যায়।”
এর আগে গত ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মিরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দেয়। ৪ মে ভারত লস্কর-ই তৈয়বা ও জইশ-ই মোহম্মদের আস্তানায় ‘অপারেশন সিঁদুর’ চালায়। এর জবাবে ৭ মে থেকে পাকিস্তান শুরু করে ‘অপারেশন বুনিয়ান উল মারসুস’। পাঁচদিনের সংঘাতে প্রাণহানি ও হতাহতের পর ৯ মে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপে যুদ্ধবিরতি হয়।
যুদ্ধবিরতিতে ট্রাম্পের ভূমিকার প্রশংসা করলেও ইসলামাবাদের মতো নয়াদিল্লি কোনো কৃতিত্ব দিতে রাজি হয়নি। বিশ্লেষকদের মতে, এরপর থেকেই ট্রাম্প-মোদী সম্পর্কের টানাপোড়েন তীব্র হয়। সাম্প্রতিক ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ তারই ধারাবাহিকতা, যদিও রাশিয়ার সংশ্লিষ্টতাকে ওয়াশিংটনের অজুহাত হিসেবে দেখা হচ্ছে।