ঢাকা ০৩:৩৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৯ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ছোটবেলা থেকে অতিরিক্ত শাসনে রাখার ক্ষোভে বাবাকে হত্যা করে ছেলে

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ১১:৫৫:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ৫৪১ বার পড়া হয়েছে

ভোলায় নিজ বসতঘরে মাওলানা আমিনুল হক নোমানী নামের এক মাদরাসা শিক্ষককে কুপিয়ে হত্যা করার ঘটনা দেশব্যাপী আলোচনার সৃষ্টি করে। গত ৬ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত সোয়া ৯টার দিকে ভোলা সদর উপজেলার বাপ্তা ৯ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর চরনোয়াবাদ এলাকায় তার নিজ বাসায় তাকে কুপিয়ে জখম করা হয়।
রাত ১০টার দিকে ভোলা ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত আমিনুল হক ভোলা দরুল হাদিস কামিল মাদরাসার মোহাদ্দিস, সদর উপজেলা পরিষদ জামে মসজিদের খতিব ও ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের জেলা সেক্রেটারী ছিলেন।

আমিনুল হকের মৃত্যুর খবরে মুহূর্তেই বিভিন্ন ইসলামিক দলের নেতৃবৃন্দ ও এলাকাবাসী হাসপাতালে ছুটি আসেন। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন তারা।

ময়নাতদন্ত শেষে নিহত আমিনুল হকের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করলে পরদিন তার দাফন সম্পন্ন হয়।

এদিকে মাওলানা আমিনুল হক নোমানী হত্যার পরপরই ভোলা জেলা পুলিশের কয়কটি টিম এ হত্যাকাণ্ড উদঘাটনে নিরলস কাজ করা শেষ অদ্য সকালে নোমানীর বড় ছেলে রিদওয়ানুল হক (১৭)কে তার নানাবাড়ি তজুমদ্দিন উপজেলা থেকে আটক করে।

পরে আজ বিকেলে ভোলা জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে পুলিশ সুপার শরীফুল হক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, মাওলানা নোমানী তার বড় ছেলে মোঃ রিদওয়ানুল হককে ছোটবেলা থেকেই খুব কড়া শাসনে রাখতেন। এতে ভিতরগত ক্ষোভ সৃষ্টি হতে থাকে রিদওয়ানের। পরে ঘটনার দিন তার মা নানাবাড়িতে থাকার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বাবা নোমানীকে হত্যার প্ল্যান করে ছেলে রিদওয়ান। এশা’র নামাজ শেষে মাওলানা নোমানী বাসায় ফিরলে আগ থেকেই ওতপেতে থাকা ছেলে রিদওয়ান ঘরের দরজার সিঁড়িতে গিয়ে বসে। পরে বাবাকে হত্যা করবে কি করবে-না অনেকক্ষণ চিন্তার পর হত্যা করার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে দরজায় নক করে রিদওয়ান। ঘর থেকে নোমানী পরিচয় জানতে চাইলে ছেলের কন্ঠ শুনে দরজা খুলতেই পাষণ্ড ছেলে রিদওয়ান বাবা নোমানীর বুকে একটি ধারালো ছুড়ি ঢুকিয়ে দেয়। নোমানী জীবন ভিক্ষা চেয়ে ছেলে রিদওয়ানের হাতের ছুড়ি ধরলেও মন গলেনি পাষণ্ড ছেলের। একেএকে কয়েকটি আঘাত করার পর সর্বশেষ বাবা নোমানীর ঘাড়ে ছুড়ি ঢুকিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে পূণরায় নানাবাড়ি চলে যায় রিদওয়ান।

অথচ পরদিন জানাজায় লাখো মানুষের সামনে কেঁদে কেঁদে বাবার হত্যাকারীদের ফাঁসি দাবি করেছিলেন হত্যাকারী ছেলে রিদওয়ান।

এদিকে পুলিশ সুপারের সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এমন চাঞ্চল্যকর ও নির্মম হত্যাকাণ্ডের খবর জেনে পুরো জেলার সাধারণ মানুষের মনে হতাশা বিরাজ করছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

নিষিদ্ধ ঘোষণার পরও চট্টগ্রামে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল, গ্রেপ্তার ৪

ছোটবেলা থেকে অতিরিক্ত শাসনে রাখার ক্ষোভে বাবাকে হত্যা করে ছেলে

আপডেট সময় ১১:৫৫:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ভোলায় নিজ বসতঘরে মাওলানা আমিনুল হক নোমানী নামের এক মাদরাসা শিক্ষককে কুপিয়ে হত্যা করার ঘটনা দেশব্যাপী আলোচনার সৃষ্টি করে। গত ৬ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত সোয়া ৯টার দিকে ভোলা সদর উপজেলার বাপ্তা ৯ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর চরনোয়াবাদ এলাকায় তার নিজ বাসায় তাকে কুপিয়ে জখম করা হয়।
রাত ১০টার দিকে ভোলা ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত আমিনুল হক ভোলা দরুল হাদিস কামিল মাদরাসার মোহাদ্দিস, সদর উপজেলা পরিষদ জামে মসজিদের খতিব ও ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের জেলা সেক্রেটারী ছিলেন।

আমিনুল হকের মৃত্যুর খবরে মুহূর্তেই বিভিন্ন ইসলামিক দলের নেতৃবৃন্দ ও এলাকাবাসী হাসপাতালে ছুটি আসেন। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন তারা।

ময়নাতদন্ত শেষে নিহত আমিনুল হকের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করলে পরদিন তার দাফন সম্পন্ন হয়।

এদিকে মাওলানা আমিনুল হক নোমানী হত্যার পরপরই ভোলা জেলা পুলিশের কয়কটি টিম এ হত্যাকাণ্ড উদঘাটনে নিরলস কাজ করা শেষ অদ্য সকালে নোমানীর বড় ছেলে রিদওয়ানুল হক (১৭)কে তার নানাবাড়ি তজুমদ্দিন উপজেলা থেকে আটক করে।

পরে আজ বিকেলে ভোলা জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে পুলিশ সুপার শরীফুল হক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, মাওলানা নোমানী তার বড় ছেলে মোঃ রিদওয়ানুল হককে ছোটবেলা থেকেই খুব কড়া শাসনে রাখতেন। এতে ভিতরগত ক্ষোভ সৃষ্টি হতে থাকে রিদওয়ানের। পরে ঘটনার দিন তার মা নানাবাড়িতে থাকার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বাবা নোমানীকে হত্যার প্ল্যান করে ছেলে রিদওয়ান। এশা’র নামাজ শেষে মাওলানা নোমানী বাসায় ফিরলে আগ থেকেই ওতপেতে থাকা ছেলে রিদওয়ান ঘরের দরজার সিঁড়িতে গিয়ে বসে। পরে বাবাকে হত্যা করবে কি করবে-না অনেকক্ষণ চিন্তার পর হত্যা করার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে দরজায় নক করে রিদওয়ান। ঘর থেকে নোমানী পরিচয় জানতে চাইলে ছেলের কন্ঠ শুনে দরজা খুলতেই পাষণ্ড ছেলে রিদওয়ান বাবা নোমানীর বুকে একটি ধারালো ছুড়ি ঢুকিয়ে দেয়। নোমানী জীবন ভিক্ষা চেয়ে ছেলে রিদওয়ানের হাতের ছুড়ি ধরলেও মন গলেনি পাষণ্ড ছেলের। একেএকে কয়েকটি আঘাত করার পর সর্বশেষ বাবা নোমানীর ঘাড়ে ছুড়ি ঢুকিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে পূণরায় নানাবাড়ি চলে যায় রিদওয়ান।

অথচ পরদিন জানাজায় লাখো মানুষের সামনে কেঁদে কেঁদে বাবার হত্যাকারীদের ফাঁসি দাবি করেছিলেন হত্যাকারী ছেলে রিদওয়ান।

এদিকে পুলিশ সুপারের সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এমন চাঞ্চল্যকর ও নির্মম হত্যাকাণ্ডের খবর জেনে পুরো জেলার সাধারণ মানুষের মনে হতাশা বিরাজ করছে।