অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম গভীর রাতে ফেসবুকে কোরআনের আয়াত উদ্ধৃত করে দিয়েছেন এক তাৎপর্যপূর্ণ বার্তা, যা দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা জল্পনা-কল্পনার জন্ম দিয়েছে।
ফেসবুক পেজে তিনি লেখেন, ‘নাসরুম মিনাল্লাহি ওয়া ফাতহুন কারিব’ (অর্থ: আল্লাহর সাহায্য এবং বিজয় নিকটবর্তী)। এটি কোরআনের সুরা: সফ এর ১৩ নম্বর আয়াত।
এই ছোট্ট অথচ গভীর আয়াতটি তিনি এমন এক সময় পোস্ট করেছেন, যখন দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে বিভাজন, উদ্বেগ ও অস্থিরতা বিরাজ করছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এটি কেবল একটি ধর্মীয় বার্তাই নয়— বরং জাতির উদ্দেশ্যে একটি মনোবল-উদ্দীপক সংকেতও হতে পারে।
এদিকে একই দিনে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলীয় মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন দেশের চলমান বিভক্তি নিয়ে। তিনি লেখেন,
“যে বিভাজনটা অপ্রত্যাশিতভাবে আমাদের মধ্যে এসেছিল, সেই বিভাজনকে দেশ ও জাতির স্বার্থে মিটিয়ে ফেলতে হবে।”
হাসনাত আরও উল্লেখ করেন,
“আমরা সবাই এক ছিলাম বলেই দেড় দশকের ফ্যাসিবাদকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পেরেছিলাম। এখন যদি আমরা আবার বিভক্ত হয়ে যাই, তাহলে সেই পতিত ফ্যাসিবাদ ও তার দেশি-বিদেশি দোসরেরা আমাদের তছনছ করে দেবে।”
এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেলে সরকার দলের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম তার ফেসবুক পোস্টে অতীতের বিভাজনমূলক কথাবার্তার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে লিখেছেন,
“দেশপ্রেমিক শক্তির ঐক্য এখন অপরিহার্য। অভ্যুত্থানের সব অংশীজনের প্রতি সম্মান রেখে কাজ করতে চাই।”
তিনি আরও লেখেন,
“বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো আজ হুমকির মুখে। আমাদের সামনে এখন একটি বড় পরীক্ষা— এটি ঐক্যের পরীক্ষা, ধৈর্যের পরীক্ষা। আমাদের এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতেই হবে।”
এই তিনটি ভিন্ন ফেসবুক বার্তা—তিনজন ভিন্নমতের শীর্ষ ব্যক্তিত্বের কাছ থেকে—একই দিনে এসেছে। বার্তাগুলোর মাঝে মিল রয়েছে: গভীর উদ্বেগ, পরিবর্তনের সংকেত এবং সবচেয়ে বড় কথা—জাতীয় ঐক্যের জোরালো আহ্বান।