ঢাকা ০২:৫৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ২৩ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আ.লীগের মিছিলে সোহেল তাজ, ভাইরাল ভিডিওটি ৩ বছর আগের

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ০৯:২০:৫৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ নভেম্বর ২০২৫
  • ৫২০ বার পড়া হয়েছে

 

 

বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমেদের ছেলে সোহেল তাজ আওয়ামী লীগের হাল ধরেছেন দাবিতে একটি মিছিলের ভিডিও গত ০২ নভেম্বর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

 

 

ফ্যাক্টচেক

 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সম্প্রতি সোহেল তাজ আওয়ামী লীগের কোনো মিছিল নিয়ে রাজপথে নামেননি। এমনকি সোহেল তাজকে আওয়ামী লীগের কোনো দায়িত্বশীল পদও দেওয়া হয়নি। প্রকৃতপক্ষে, ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার চারটি পুরোনো ভিডিও একসঙ্গে যুক্ত করে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।

 

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ভিডিওটির শুরুতে সোহেল তাজকে একটি ফেস্টুন হাতে এগিয়ে যেতে দেখা যায়। এরপর একজন উপস্থাপিকা সংবাদ পাঠ করেন। তারপর সোহেল তাজকে বক্তব্য দিতে দেখা যায়। সর্বশেষ আবারও সোহেল তাজকে বক্তব্য দিতে দেখা যায়।

 

ভিডিও যাচাই-১

 

শুরুতে সোহেল তাজকে ফেস্টুন হাতে হেঁটে যেতে দেখা যায়। অনুসন্ধানে চ্যানেল২৪-এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২২ সালের ১০ এপ্রিল প্রকাশিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সঙ্গে আলোচিত ভিডিওর মিল রয়েছে।

 

চ্যানেল২৪-এর প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, ২০২২ সালের ১০ এপ্রিল মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরার দাবিসহ তিন দফা দাবিতে পদযাত্রা করেন করেছিলেন সোহেজ তাজ। সেই পদযাত্রার দৃশ্য এটি।

 

অর্থাৎ, ভিডিওটি অন্তত তিন বছর আগের।

 

 

ভিডিও যাচাই-২

 

এ অংশে একজন সংবাদ উপস্থাপিকাকে সংবাদ পাঠ করতে দেখা যায়। অনুসন্ধানে এটিএন বাংলার ইউটিউব চ্যানেলে গত বছরের ২৮ অক্টোবর প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিও প্রতিবেদনে থাকা সংবাদ পাঠিকা এবং সংবাদের সঙ্গে আলোচিত ভিডিওতে থাকা এই অংশের মিল রয়েছে।

 

এটিএন বাংলার প্রতিবেদনটিতে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর দলের নেতাকর্মীদের অবস্থা এবং ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের পর নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা ও হামলার বিষয়ে বলা হয়েছে। এছাড়া, উক্ত প্রতিবেদনে সোহেল তাজ আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিয়ে সমালোচনা করেছেন। তবে, প্রতিবেদনটির কোথাও সোহেল তাজের মিছিল কিংবা আওয়ামী লীগের কোনো দায়িত্ব সোহেল তাজ পাওয়ার বিষয়ে বলা হয়নি।

 

অর্থাৎ, এটিও আলোচিত দাবির সঙ্গে প্রাসঙ্গিক নয়।

 

ভিডিও যাচাই-৩

 

এ অংশে সোহেজ তাজকে বক্তব্য দিতে দেখা যায়। অনুসন্ধানে দেশ টিভির ইউটিউব চ্যানেলে ২০২২ সালের ৩১ অক্টোবর প্রকাশিত সোহেল তাজের বক্তব্যের একটি ভিডিও পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিও বক্তব্যের সঙ্গে আলোচিত ভিডিওতে থাকা সোহেল তাজের বক্তব্যের মিল রয়েছে।

 

প্রথমত বক্তব্যটি ২০২২ সালের অক্টোবর মাসের। অর্থাৎ, অন্তত তিন বছরের পুরোনো। পাশাপাশি, ০৬ মিনিট ৪৬ সেকেন্ডের পুরো বক্তব্যে সোহেল তাজ আওয়ামী লীগের কোনো দায়িত্ব পেয়েছেন এমন কোনো কথা বলেননি।

 

ভিডিও যাচাই-৪

 

সর্বশেষ আবারও সোহেল তাজকে বক্তব্য দেওয়ার একটি দৃশ্য দেখা যায়। অনুসন্ধানে সময় টিভির ইউটিউব চ্যানেলে গত বছরের ২৯ জুলাই সোহেল তাজের বক্তব্য দেওয়ার একটি ভিডিও পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওতে সোহেল তাজের পোশাক, বক্তব্য এবং আশেপাশের মানুষের সঙ্গে মিল রয়েছে।

 

সোহেল তাজের বক্তব্য সূত্রে জানা যায়, গত বছরের গণ-অভ্যুত্থানের সময় জুলাই মাসে প্রধান ছয় সমন্বয়ককে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর ডিবি অফিসে যান তিনি। সেখান থেকে বের হওয়ার সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন সোহেল তাজ। সেই সময়কার দৃশ্য এটি। এছাড়া, ০৩ মিনিট ২৭ সেকেন্ডের বক্তব্যে সোহেল তাজ কোথাও আওয়ামী লীগের দায়িত্ব পাওয়ার কথা উল্লেখ করেননি।

 

 

অর্থাৎ, এই ভিডিওটি অন্তত এক বছরের পুরোনো এবং ভিন্ন প্রেক্ষাপটের।

 

 

পাশাপাশি, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে আলোচিত দাবির সপক্ষে কোনো তথ্য গণমাধ্যম এবং সোহেল তাজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজেও পাওয়া যায়নি।

 

সুতরাং, ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার পুরোনো ভিডিও একসঙ্গে যুক্ত করে গত ০২ নভেম্বর সোহেল তাজ আওয়ামী লীগের মিছিল নিয়ে রাজপথে নেমেছেন দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

জনপ্রিয় সংবাদ

চাশতের নামাজের যেসব পুরস্কার ঘোষণা করেছেন বিশ্বনবি

আ.লীগের মিছিলে সোহেল তাজ, ভাইরাল ভিডিওটি ৩ বছর আগের

আপডেট সময় ০৯:২০:৫৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ নভেম্বর ২০২৫

 

 

বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমেদের ছেলে সোহেল তাজ আওয়ামী লীগের হাল ধরেছেন দাবিতে একটি মিছিলের ভিডিও গত ০২ নভেম্বর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

 

 

ফ্যাক্টচেক

 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সম্প্রতি সোহেল তাজ আওয়ামী লীগের কোনো মিছিল নিয়ে রাজপথে নামেননি। এমনকি সোহেল তাজকে আওয়ামী লীগের কোনো দায়িত্বশীল পদও দেওয়া হয়নি। প্রকৃতপক্ষে, ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার চারটি পুরোনো ভিডিও একসঙ্গে যুক্ত করে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।

 

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ভিডিওটির শুরুতে সোহেল তাজকে একটি ফেস্টুন হাতে এগিয়ে যেতে দেখা যায়। এরপর একজন উপস্থাপিকা সংবাদ পাঠ করেন। তারপর সোহেল তাজকে বক্তব্য দিতে দেখা যায়। সর্বশেষ আবারও সোহেল তাজকে বক্তব্য দিতে দেখা যায়।

 

ভিডিও যাচাই-১

 

শুরুতে সোহেল তাজকে ফেস্টুন হাতে হেঁটে যেতে দেখা যায়। অনুসন্ধানে চ্যানেল২৪-এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২২ সালের ১০ এপ্রিল প্রকাশিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সঙ্গে আলোচিত ভিডিওর মিল রয়েছে।

 

চ্যানেল২৪-এর প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, ২০২২ সালের ১০ এপ্রিল মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরার দাবিসহ তিন দফা দাবিতে পদযাত্রা করেন করেছিলেন সোহেজ তাজ। সেই পদযাত্রার দৃশ্য এটি।

 

অর্থাৎ, ভিডিওটি অন্তত তিন বছর আগের।

 

 

ভিডিও যাচাই-২

 

এ অংশে একজন সংবাদ উপস্থাপিকাকে সংবাদ পাঠ করতে দেখা যায়। অনুসন্ধানে এটিএন বাংলার ইউটিউব চ্যানেলে গত বছরের ২৮ অক্টোবর প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিও প্রতিবেদনে থাকা সংবাদ পাঠিকা এবং সংবাদের সঙ্গে আলোচিত ভিডিওতে থাকা এই অংশের মিল রয়েছে।

 

এটিএন বাংলার প্রতিবেদনটিতে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর দলের নেতাকর্মীদের অবস্থা এবং ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের পর নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা ও হামলার বিষয়ে বলা হয়েছে। এছাড়া, উক্ত প্রতিবেদনে সোহেল তাজ আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিয়ে সমালোচনা করেছেন। তবে, প্রতিবেদনটির কোথাও সোহেল তাজের মিছিল কিংবা আওয়ামী লীগের কোনো দায়িত্ব সোহেল তাজ পাওয়ার বিষয়ে বলা হয়নি।

 

অর্থাৎ, এটিও আলোচিত দাবির সঙ্গে প্রাসঙ্গিক নয়।

 

ভিডিও যাচাই-৩

 

এ অংশে সোহেজ তাজকে বক্তব্য দিতে দেখা যায়। অনুসন্ধানে দেশ টিভির ইউটিউব চ্যানেলে ২০২২ সালের ৩১ অক্টোবর প্রকাশিত সোহেল তাজের বক্তব্যের একটি ভিডিও পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিও বক্তব্যের সঙ্গে আলোচিত ভিডিওতে থাকা সোহেল তাজের বক্তব্যের মিল রয়েছে।

 

প্রথমত বক্তব্যটি ২০২২ সালের অক্টোবর মাসের। অর্থাৎ, অন্তত তিন বছরের পুরোনো। পাশাপাশি, ০৬ মিনিট ৪৬ সেকেন্ডের পুরো বক্তব্যে সোহেল তাজ আওয়ামী লীগের কোনো দায়িত্ব পেয়েছেন এমন কোনো কথা বলেননি।

 

ভিডিও যাচাই-৪

 

সর্বশেষ আবারও সোহেল তাজকে বক্তব্য দেওয়ার একটি দৃশ্য দেখা যায়। অনুসন্ধানে সময় টিভির ইউটিউব চ্যানেলে গত বছরের ২৯ জুলাই সোহেল তাজের বক্তব্য দেওয়ার একটি ভিডিও পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওতে সোহেল তাজের পোশাক, বক্তব্য এবং আশেপাশের মানুষের সঙ্গে মিল রয়েছে।

 

সোহেল তাজের বক্তব্য সূত্রে জানা যায়, গত বছরের গণ-অভ্যুত্থানের সময় জুলাই মাসে প্রধান ছয় সমন্বয়ককে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর ডিবি অফিসে যান তিনি। সেখান থেকে বের হওয়ার সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন সোহেল তাজ। সেই সময়কার দৃশ্য এটি। এছাড়া, ০৩ মিনিট ২৭ সেকেন্ডের বক্তব্যে সোহেল তাজ কোথাও আওয়ামী লীগের দায়িত্ব পাওয়ার কথা উল্লেখ করেননি।

 

 

অর্থাৎ, এই ভিডিওটি অন্তত এক বছরের পুরোনো এবং ভিন্ন প্রেক্ষাপটের।

 

 

পাশাপাশি, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে আলোচিত দাবির সপক্ষে কোনো তথ্য গণমাধ্যম এবং সোহেল তাজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজেও পাওয়া যায়নি।

 

সুতরাং, ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার পুরোনো ভিডিও একসঙ্গে যুক্ত করে গত ০২ নভেম্বর সোহেল তাজ আওয়ামী লীগের মিছিল নিয়ে রাজপথে নেমেছেন দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।