ঢাকা ০৫:১৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ২৩ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চাশতের নামাজের যেসব পুরস্কার ঘোষণা করেছেন বিশ্বনবি

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ১১:৫১:০৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ নভেম্বর ২০২৫
  • ৫৩৩ বার পড়া হয়েছে

চাশতের নামাজ বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ; যা সূর্যোদয়ের পর একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত পড়া যায়। সূর্যোদয়ের অন্তত ১৫-২০ মিনিট পর এশরাকের নামাজের সময় শুরু হয়। এর কিছুক্ষণ পরই শুরু হয় চাশতের নামাজের সময়; যা জোহরের নামাজের আগপর্যন্ত পড়া যায়। জোহরের নামাজের সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চাশতের নামাজ পড়া নিষিদ্ধ হয়ে যায়। চাশতের নামাজ ২ রাকাত থেকে ১২ রাকাত পর্যন্ত নামাজ পড়া যায়। তবে ৪ রাকাতই বেশি প্রচলিত।

 

 

বিশ্বনবির ঘোষণায় চাশতের নামাজের পুরস্কার

 

১. চাশতের নামাজের এ হাদিসটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ; যা এ নামাজের ফজিলত এবং তার পরিমাণ অনুযায়ী উপকারিতা সম্পর্কে ধারণা দেয়। রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর ঘোষণা-

 

 

عَنْ أَبِي ذَرٍّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِذَا صَلَّيْتَ رَكْعَتَيْنِ فِي بَيْنَ الصُّبْحِ وَالظُّهْرِ كُتِبْتَ مِنَ الْغَافِلِينَ وَإِذَا صَلَّيْتَ أَرْبَعًا فَأَنتَ مِنَ الصَّالِحِينَ وَإِذَا صَلَّيْتَ سِتًّا فَأَنتَ مِنَ الْمُتَّقِينَ وَإِذَا صَلَّيْتَ ثَمَانِيَ فَأَنتَ مِنَ الْمُحْسِنِينَ وَإِذَا صَلَّيْتَ عَشَرًا فَفِي ذِمَّةِ اللَّهِ وَإِذَا صَلَّيْتَ اثْنَيْ عَشَرَ بُنِيَ لَكَ فِي الْجَنَّةِ بَيْتٌ

 

হযরত আবুজর গিফারী (রা.) থেকে বর্ণিত; তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন- ‘যদি তুমি চাশতের নামাজ ২ রাকাত পড়, তাহলে তোমাকে গাফেলদের মধ্যে গণ্য করা হবে না। যদি ৪ রাকাত পড়, তাহলে তোমাকে নেককারদের মধ্যে গণ্য করা হবে। যদি তুমি ৬ রাকাত পড়, তাহলে তোমাকে আনুগত্যকারীদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে। যদি তুমি ৮ রাকাত পড়, তাহলে তোমাকে সফলকাম ব্যক্তিদের তালিকায় লেখা হবে। যদি ১০ রাকাত পড়, তাহলে সেদিন তোমার আমলনামায় কোনো গুনাহ লেখা হবে না। আর যদি ১২ রাকাত পড়, তাহলে জান্নাতে তোমার জন্য একটি ঘর নির্মাণ করা হবে।’ (সুনানুল কুবরা বাইহাকি ৪৯০৬)

 

 

২. عَنْ أَبِيْ مُوْسَى رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ صَلَّى الضُّحَى أَرْبَعًا وَقَبْلَ الأُوْلَى أَرْبَعًا بُنِيَ لَهُ بَيْتٌ فِي الْجَنَّةِ-

 

হযরত আবু মূসা (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন- ‘যে ব্যক্তি চাশতের চার রাকাত নামাজ আদায় করে এবং জোহরের পূর্বে চার রাকাত নামাজ আদায় করে, তার জন্য জান্নাতে ঘর নির্মাণ করা হয়’ (সিলসিলা ছহীহাহ হা/৭৪৫)।

 

 

৩. عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَن صَلَّى فِي يَوْمٍ ثِنْتَيْ عَشْرَةَ رَكْعَةً فِيهَا تَطَوُّعٌ غَفَرَ اللَّهُ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ وَمَا تَأَخَّرَ، وَلَوْ كَانَتْ كَأَمْوَاجِ الْبَحْرِ»

 

হযরত আনস (রা.) থেকে বর্ণিত; তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন- ‘যে ব্যক্তি দিনে ১২ রাকআত নফল নামাজ (চাশতের নামাজসহ) পড়বে, আল্লাহ তার সমস্ত পাপ ক্ষমা করবেন, যদিও তা সমুদ্রের ফেনার মতোই হোক।’ (আবু দাউদ ১৩৫১, তিরমিজি ৪২১, মুসলিম ৭৩১)

 

এছাড়া রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘চাশতের নামাজ দুই রাকাত পড়লে সারা দিনের নামাজের মতো কল্যাণ রয়েছে।’ (বুখারি)

 

 

এভাবে চাশতের নামাজ একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত নামাজ, যা খুব সহজেই আদায় করা যায় এবং এর মাধ্যমে একজন মুসলিম সারা দিনের জন্য বরকত ও সুরক্ষা অর্জন করতে পারে এবং নবীজি (সা.)-এর ঘোষিত ফজিলত অর্জন করতে পারে।

জনপ্রিয় সংবাদ

চাশতের নামাজের যেসব পুরস্কার ঘোষণা করেছেন বিশ্বনবি

চাশতের নামাজের যেসব পুরস্কার ঘোষণা করেছেন বিশ্বনবি

আপডেট সময় ১১:৫১:০৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ নভেম্বর ২০২৫

চাশতের নামাজ বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ; যা সূর্যোদয়ের পর একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত পড়া যায়। সূর্যোদয়ের অন্তত ১৫-২০ মিনিট পর এশরাকের নামাজের সময় শুরু হয়। এর কিছুক্ষণ পরই শুরু হয় চাশতের নামাজের সময়; যা জোহরের নামাজের আগপর্যন্ত পড়া যায়। জোহরের নামাজের সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চাশতের নামাজ পড়া নিষিদ্ধ হয়ে যায়। চাশতের নামাজ ২ রাকাত থেকে ১২ রাকাত পর্যন্ত নামাজ পড়া যায়। তবে ৪ রাকাতই বেশি প্রচলিত।

 

 

বিশ্বনবির ঘোষণায় চাশতের নামাজের পুরস্কার

 

১. চাশতের নামাজের এ হাদিসটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ; যা এ নামাজের ফজিলত এবং তার পরিমাণ অনুযায়ী উপকারিতা সম্পর্কে ধারণা দেয়। রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর ঘোষণা-

 

 

عَنْ أَبِي ذَرٍّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِذَا صَلَّيْتَ رَكْعَتَيْنِ فِي بَيْنَ الصُّبْحِ وَالظُّهْرِ كُتِبْتَ مِنَ الْغَافِلِينَ وَإِذَا صَلَّيْتَ أَرْبَعًا فَأَنتَ مِنَ الصَّالِحِينَ وَإِذَا صَلَّيْتَ سِتًّا فَأَنتَ مِنَ الْمُتَّقِينَ وَإِذَا صَلَّيْتَ ثَمَانِيَ فَأَنتَ مِنَ الْمُحْسِنِينَ وَإِذَا صَلَّيْتَ عَشَرًا فَفِي ذِمَّةِ اللَّهِ وَإِذَا صَلَّيْتَ اثْنَيْ عَشَرَ بُنِيَ لَكَ فِي الْجَنَّةِ بَيْتٌ

 

হযরত আবুজর গিফারী (রা.) থেকে বর্ণিত; তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন- ‘যদি তুমি চাশতের নামাজ ২ রাকাত পড়, তাহলে তোমাকে গাফেলদের মধ্যে গণ্য করা হবে না। যদি ৪ রাকাত পড়, তাহলে তোমাকে নেককারদের মধ্যে গণ্য করা হবে। যদি তুমি ৬ রাকাত পড়, তাহলে তোমাকে আনুগত্যকারীদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে। যদি তুমি ৮ রাকাত পড়, তাহলে তোমাকে সফলকাম ব্যক্তিদের তালিকায় লেখা হবে। যদি ১০ রাকাত পড়, তাহলে সেদিন তোমার আমলনামায় কোনো গুনাহ লেখা হবে না। আর যদি ১২ রাকাত পড়, তাহলে জান্নাতে তোমার জন্য একটি ঘর নির্মাণ করা হবে।’ (সুনানুল কুবরা বাইহাকি ৪৯০৬)

 

 

২. عَنْ أَبِيْ مُوْسَى رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ صَلَّى الضُّحَى أَرْبَعًا وَقَبْلَ الأُوْلَى أَرْبَعًا بُنِيَ لَهُ بَيْتٌ فِي الْجَنَّةِ-

 

হযরত আবু মূসা (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন- ‘যে ব্যক্তি চাশতের চার রাকাত নামাজ আদায় করে এবং জোহরের পূর্বে চার রাকাত নামাজ আদায় করে, তার জন্য জান্নাতে ঘর নির্মাণ করা হয়’ (সিলসিলা ছহীহাহ হা/৭৪৫)।

 

 

৩. عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَن صَلَّى فِي يَوْمٍ ثِنْتَيْ عَشْرَةَ رَكْعَةً فِيهَا تَطَوُّعٌ غَفَرَ اللَّهُ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ وَمَا تَأَخَّرَ، وَلَوْ كَانَتْ كَأَمْوَاجِ الْبَحْرِ»

 

হযরত আনস (রা.) থেকে বর্ণিত; তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন- ‘যে ব্যক্তি দিনে ১২ রাকআত নফল নামাজ (চাশতের নামাজসহ) পড়বে, আল্লাহ তার সমস্ত পাপ ক্ষমা করবেন, যদিও তা সমুদ্রের ফেনার মতোই হোক।’ (আবু দাউদ ১৩৫১, তিরমিজি ৪২১, মুসলিম ৭৩১)

 

এছাড়া রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘চাশতের নামাজ দুই রাকাত পড়লে সারা দিনের নামাজের মতো কল্যাণ রয়েছে।’ (বুখারি)

 

 

এভাবে চাশতের নামাজ একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত নামাজ, যা খুব সহজেই আদায় করা যায় এবং এর মাধ্যমে একজন মুসলিম সারা দিনের জন্য বরকত ও সুরক্ষা অর্জন করতে পারে এবং নবীজি (সা.)-এর ঘোষিত ফজিলত অর্জন করতে পারে।