ঢাকা ০৩:২৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আওয়ামী লীগের দুজনকে ছাড়াতে ওসিকে যুবদল নেতার হুমকি, ‘আপনার রিজিক উঠে গেছে’

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ০৭:৫৩:১৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫
  • ৬১০ বার পড়া হয়েছে

ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলায় পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার দুই ব্যক্তিকে ছাড়িয়ে নিতে গিয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) হুমকি দেওয়ার অভিযোগে বিএনপির সহযোগী সংগঠন যুবদলের এক নেতাকে শোকজ করেছে কেন্দ্রীয় যুবদল

অভিযুক্ত নেতা নাজমুল হুদা ওরফে মিঠু, যিনি পীরগঞ্জ উপজেলা যুবদলের সভাপতি। বুধবার (১২ নভেম্বর) রাতে রানীশংকৈল থানায় ঘটে এই ঘটনা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার রাতে বাচোর ইউনিয়নের রাজোর গ্রাম, ভাউলারবস্তি ও ধর্মগড় শালফার্ম এলাকা থেকে চারজনকে আটক করে পুলিশ। তাঁদের মধ্যে দুজন — সারোয়ার নুর (৩২) ও হামিদুর রহমান (৬০) — স্থানীয় আওয়ামী লীগের কর্মী। এ সময় তাঁদের ছাড়িয়ে নিতে এলাকায় বিএনপি ও যুবদলের নেতারা পুলিশকে চাপ দেন।

বুধবার বেলা ১১টার দিকে স্থানীয় বিএনপি নেতা জাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে ৩০–৩৫ জন থানায় যান। পরে নাজমুল হুদা থানায় গিয়ে আটক দুই ব্যক্তিকে তাঁর আত্মীয় দাবি করে ছাড়িয়ে নেওয়ার অনুরোধ জানান। ওসি রাজি না হলে তিনি ওসির সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়িয়ে হুমকি দেন, এমন দৃশ্য ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতেও দেখা যায়।

৪ মিনিট ৩০ সেকেন্ডের ভিডিওতে নাজমুল হুদাকে ওসির উদ্দেশে বলতে শোনা যায়,

“আপনি মানুষ চিনেন নাই। আপনার এখানে রিজিক নাই, রিজিক উঠে গেছে।”

আরেক ভিডিওতে তিনি ওসিকে বলেন,

“পোশাকই দেখাইলেন, আর কি! থানা আমরাও সেভ করছি, না হলে থানা জ্বালায় দিত।”

রানীশংকৈল থানার ওসি আরশেদুল হক বলেন,

“আটক ব্যক্তিরা আওয়ামী লীগের কর্মী। তাঁদের ছাড়িয়ে নিতে এসে যুবদল নেতা ও স্থানীয় বিএনপি নেতা থানায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন, অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং পুলিশকে হুমকি দেন।”
ওসি জানান, এ ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।

অন্যদিকে নাজমুল হুদা দাবি করেন,

“আমি কাউকে হুমকি দিইনি। আটক দুজন আমার ব্যবসার অংশীদার ও আত্মীয়। ওসি তাঁদের আটকের বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যা দেননি বলেই আমি প্রতিবাদ করেছি।”

এ ঘটনায় যুবদলের কেন্দ্রীয় সহদপ্তর সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভূঁইয়া স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে নাজমুল হুদাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে তাঁকে তিন দিনের মধ্যে কেন্দ্রীয় সভাপতি আবদুল মোনায়েম ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নূরুল ইসলামের সামনে সশরীরে উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়,

“রাষ্ট্রীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাজে বাধা দেওয়ার মাধ্যমে সংগঠনের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন। এ বিষয়ে ব্যাখ্যা সন্তোষজনক না হলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

জেলা যুবদলের সদস্যসচিব জাহিদুর রহমান বলেন,

“ঘটনার পরপরই কেন্দ্রীয় কমিটি ব্যবস্থা নিয়েছে। নাজমুল হুদাকে আগামী তিন দিনের মধ্যে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।”

জনপ্রিয় সংবাদ

বিজয়ী হলে জাতীয় সরকার করবে জামায়াত: ডা. শফিকুর রহমান

আওয়ামী লীগের দুজনকে ছাড়াতে ওসিকে যুবদল নেতার হুমকি, ‘আপনার রিজিক উঠে গেছে’

আপডেট সময় ০৭:৫৩:১৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫

ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলায় পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার দুই ব্যক্তিকে ছাড়িয়ে নিতে গিয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) হুমকি দেওয়ার অভিযোগে বিএনপির সহযোগী সংগঠন যুবদলের এক নেতাকে শোকজ করেছে কেন্দ্রীয় যুবদল

অভিযুক্ত নেতা নাজমুল হুদা ওরফে মিঠু, যিনি পীরগঞ্জ উপজেলা যুবদলের সভাপতি। বুধবার (১২ নভেম্বর) রাতে রানীশংকৈল থানায় ঘটে এই ঘটনা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার রাতে বাচোর ইউনিয়নের রাজোর গ্রাম, ভাউলারবস্তি ও ধর্মগড় শালফার্ম এলাকা থেকে চারজনকে আটক করে পুলিশ। তাঁদের মধ্যে দুজন — সারোয়ার নুর (৩২) ও হামিদুর রহমান (৬০) — স্থানীয় আওয়ামী লীগের কর্মী। এ সময় তাঁদের ছাড়িয়ে নিতে এলাকায় বিএনপি ও যুবদলের নেতারা পুলিশকে চাপ দেন।

বুধবার বেলা ১১টার দিকে স্থানীয় বিএনপি নেতা জাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে ৩০–৩৫ জন থানায় যান। পরে নাজমুল হুদা থানায় গিয়ে আটক দুই ব্যক্তিকে তাঁর আত্মীয় দাবি করে ছাড়িয়ে নেওয়ার অনুরোধ জানান। ওসি রাজি না হলে তিনি ওসির সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়িয়ে হুমকি দেন, এমন দৃশ্য ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতেও দেখা যায়।

৪ মিনিট ৩০ সেকেন্ডের ভিডিওতে নাজমুল হুদাকে ওসির উদ্দেশে বলতে শোনা যায়,

“আপনি মানুষ চিনেন নাই। আপনার এখানে রিজিক নাই, রিজিক উঠে গেছে।”

আরেক ভিডিওতে তিনি ওসিকে বলেন,

“পোশাকই দেখাইলেন, আর কি! থানা আমরাও সেভ করছি, না হলে থানা জ্বালায় দিত।”

রানীশংকৈল থানার ওসি আরশেদুল হক বলেন,

“আটক ব্যক্তিরা আওয়ামী লীগের কর্মী। তাঁদের ছাড়িয়ে নিতে এসে যুবদল নেতা ও স্থানীয় বিএনপি নেতা থানায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন, অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং পুলিশকে হুমকি দেন।”
ওসি জানান, এ ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।

অন্যদিকে নাজমুল হুদা দাবি করেন,

“আমি কাউকে হুমকি দিইনি। আটক দুজন আমার ব্যবসার অংশীদার ও আত্মীয়। ওসি তাঁদের আটকের বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যা দেননি বলেই আমি প্রতিবাদ করেছি।”

এ ঘটনায় যুবদলের কেন্দ্রীয় সহদপ্তর সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভূঁইয়া স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে নাজমুল হুদাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে তাঁকে তিন দিনের মধ্যে কেন্দ্রীয় সভাপতি আবদুল মোনায়েম ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নূরুল ইসলামের সামনে সশরীরে উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়,

“রাষ্ট্রীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাজে বাধা দেওয়ার মাধ্যমে সংগঠনের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন। এ বিষয়ে ব্যাখ্যা সন্তোষজনক না হলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

জেলা যুবদলের সদস্যসচিব জাহিদুর রহমান বলেন,

“ঘটনার পরপরই কেন্দ্রীয় কমিটি ব্যবস্থা নিয়েছে। নাজমুল হুদাকে আগামী তিন দিনের মধ্যে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।”